ভূল চিকিৎসা কারণে মাহামুদা খাতুন(২০) নামের রাঙামাটি নাসিং ইনষ্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষানবিশ নার্সের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষানবিশ নার্সরা রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে কর্মবিরতী পালন শুরু করছে। এতে হাসপাতালের রোগীদেও চরম দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
জানা যায়, গেল মঙ্গলবার সকালে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহামুদা খাতুন অসুস্থ হলে তাকে দ্রুত রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাহমুদার শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বুধবার ভোর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মাহামুদা মারা যায়। বুধবার ভোরে শিক্ষার্থীর মরদেহ সকালে নার্সিং ইনষ্টিটিউটে নিয়ে আসা হলে শিক্ষানবিশ নার্সদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। তারা রাঙামাটি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার দেওয়ার কারণে মাহামুদা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে শিক্ষানবীস নার্সরা রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে কর্মবিরতী পালন শুরু করছে। এতে হাসপাতালের রোগীদেও চরম দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। মৃত মাহমুদার লাশ প্রথম জানাজা রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে মাহমুদার লাশটি নিজ বাড়ি গাজীপুরে কাপাসিয়া এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার বাবার নাম মোস্তফা কামাল।
নার্সিং ইনষ্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অধরা বীথি মাহামুদা খাতুনের মৃত্যুর জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে জানান, শিক্ষার্থীদের সাথে দূর্ব্যবহার,এককক্ষে থাকার কথা ৫-৬ সেখানে রাখা হয়েছে ২০জন। এছাড়াও নিম্মমানের খাবার পরিবেশ,নোংরা আবর্জনা,অযত্ন অবহেলার চোখে দেখা, নাসিং ডিউটি নিয়ে বৈষম্য,ছাত্রী নিবাস ও শ্রেণিকক্ষ সংকট,যানবাহনের সমস্যা ও সুচিকিৎসার অভাব। এই সকল সমস্যা সমাধান করা না হলে যে কোন সময় কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে নাসিং ইনষ্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা তিনি জানান।
তিনি আরো জানান, কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনেই মাহামুদার মৃত্যু হয়েছে। মাহামুদার অকাল মৃত্যুকে কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এতে শোকাহত সকল শিক্ষার্থীরা।
মাহামুদা খাতুনের বাবা মোস্তফা কামাল অবহেলার কারনে তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে দাবী করে জানান,যেহেতু তার মেয়ে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছে তাই তিনি এ বিষয় নিয়ে আর কোন কথা বাড়াতে চান না। তবে এর বিচার আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছি।
রাঙামাটি নাসিং ইনষ্টিটিউটের ইনচার্জ রিতা রাণী জানান, গেল মঙ্গলবার সকালে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহামুদা খাতুন অসুস্থ হলে তাকে দ্রুত রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার শারীরিক অবস্থা অবনতি ঘটলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বুধবার ভোর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মাহামুদা মারা যায়। তিনি আরো জানান, রাঙামাটি নাসিং ইনষ্টিটিউটের ছাত্রী নিবাস,বিশুদ্ধ পানি,উন্নত খাবারসহ নাসিং ইনষ্টিটিউটের আরো বিরাজমান সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে অবগত করার পরেও সুরাহ পাওয়া যাচ্ছে না।
রাঙামাটি কোতয়ালি থানার এস আই মো. মোর্শেদ জানান, নাসিং ইনষ্টিটিউটের শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় ইনষ্টিটিউট ক্যাম্পাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে আসেন। তবে পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছার পর ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন ডা.শহিদ তালুকদার বলেন, শিক্ষার্থী মাহামুদা খাতুনকে গেল মঙ্গলবার সকালে ভর্তি করার পরে তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়। সেখানে মাহামুদা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরণে মারা গেছে। সিটিস্ক্যান রিপোর্টে মাথায় মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরণে মারা যাওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলন করার মত কোন ইস্যু নেই।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.