রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে পার্বত্য জেলায় কোন মহল বা গোষ্টি যাতে কোন ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সে বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা।
তিনি যে কোন ধরনের সন্ধেহভাজনকে দেখামাত্রই প্রশাসনকে খবর দেওয়ারও পরামর্শ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ জেলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আসন্ন দুর্গাপুজা ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবর দান’সহ সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান মানুষ যাতে সুশৃংখলভাবে পালন করতে পারে সেদিকে প্রশাসনের পাশাপাশি সকলকে সহযোগিতা করতে হবে।
সোামবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে পরিষদ চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
জেলা পরিষদ এর জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরার পরিচালনায় সভায় রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম,কে,এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী আব্দুস সামাদ, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, পৌর কাউন্সিলর কালায়ন চাকমা’সহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধান, কমিটির সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পরিষদ চেয়ারম্যান আরো বলেন, প্রতি মাসে সমন্বয় সভাটি করা হয় এ জেলার উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে। তাই প্রতিটি সভায় বিভাগীয় প্রধানদের উপস্থিত থেকে জনকল্যাণমূলক পরামর্শ ও মতামত প্রদানের আহ্বান জানান তিনি।
সভায় রাঙামাটি সরকারী মহিলা কলেজের প্রভাষক বলেন, ডিগ্রী কলেজের সেটআপ অনুযায়ি পদ সৃজনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম যথারীতি চলছে।
তিন পার্বত্য জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার জানান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির সাবষ্টেশন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। অন্যদিকে গেল ১৩জুন পাহাড় ধসে বিভিন্ন জায়গায় বিদু্যূতের যেসব সংযোগ সঞ্চালনের খুঁটি ও বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়েছিল সেগুলোর বেশীর ভাগ সচল হলেও এখনো অনেক স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি মেরামত করতে না পারায় সমস্যা হচ্ছে। এগুলো সচলের বিষয়ে সার্ভে কাজ সম্পন্ন হয়েছে। খুব শীঘ্রই সমস্যাগুলো নিরসন করা হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন জানান, গেল ১৩জুন পাহাড় ধসে সাপছড়ি শালবন এলাকায় রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম রাস্তাটি বিচ্ছিন্ন হয়েছিল তা গত ২১আগস্ট একটি বেইলী ব্রীজ নির্মাণ করে বড় যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে রাঙ্গামাটি-বান্দরবান-খাগড়াছড়িতে যান চলাচলের জন্য রাস্তা মেরামত করা হয়েছে। এছাড়া যেসব জায়গায় সড়কের ক্ষতি হয়েছিল আগামী এক মাসের মধ্যে তা সংস্কার ও মেরামত করা হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সহকারি পরিচালক মোস্তফা কামাল বলেন, রাঙামাটি ও কাপ্তাই ফায়ার স্টেশনের কার্যক্রম চলছে। নানিয়ারচর ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় জায়গা সমস্যার কারণে ফায়ার স্টেশন ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছেনা তবে খুব শীঘ্রই জায়গার বিষয়টি নিরসন হবে।
বিটিসিএল এর সহকারী প্রকৌশলী জানান, সাম্প্রতিক বজ্রপাতে জেলার অনেক জায়গায় টেলিযোগাযোগে বিঘœ ঘটেছে। এগুলো নিরসনে কাজ অব্যাহত রয়েছে। বজ্রপাতের সময় ইন্টারনেট ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখারও পরামর্শ দেন তিনি।
খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে জেলা ও উপজেলা খাদ্য ভান্ডারে খাদ্য শস্য মজুদ রয়েছে। যে কোন দুর্যোগে খাদ্য শস্য বিতরণ করা যাবে। এছাড়া জেলার ৯টি ও উপজেলার ৩টি কেন্দ্রে ওএমএস এর চাল বিক্রী কার্যক্রম চলছে।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম,কে,এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আসন্ন দুর্গাপুজা ও বৌদ্ধধর্মালম্বীদের কঠিন চিবর দানোৎসব সুষ্ঠ ও সুশৃংখলভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ প্রশাসন হতে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শ্রদ্ধার বিষয়টি মাথায় রেখে আযান ও নামাজের সময় উচ্চ আওয়াজে মাইক ব্যবহারে যথাসম্ভব সতর্কতা অবলম্ব^নের জন্য তিনি অনুরোধ জানান। তিনি উৎসবে পটকা বা কোন ধরনের নেশাদ্রব্য বহন থেকে বিরত থাকারও অনুরোধ জানান। উৎসবে যে কোন ধরনের বিশৃংখলাকারীদের ধরিয়ে দিতে প্রশাসনকে অবগত করার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া যে কোন তথ্য জানিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.