লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের দূর্গম মংপ্রু পাড়া থেকে ১৪ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। এ সময় বাংলাদেশী নাগরিক সাহাব উদ্দিন নামের এক গাছের বাগান কাটার মাঝিকে আটক করে। তারা সবাই নিবন্ধণকৃত কুতুপালং ও বালু খালী রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির থেকে পালিয়ে এসেছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার সময় সেনাবাহিনী তাদেরকে আটক করে লামা থানায় হস্তান্তর করে।
আটককৃত রোহিঙ্গারা হলেন মোঃ সেলিম(২০)পিতা- সৈয়দ আলম, মোঃ মনির(৫৫)পিতা-মৃত আমির হোসেন, নুর হাবিব(২০)পিতা-আব্দুল বাছের, সৈয়দ হোসেন(৩৮)পিতা- ফজল আকবর, মোঃ আলম(৫৫) পিতা-আব্দুল হাই, মোঃ মুছা আলী(১৭) মনির আহম্মদ, মোঃ রকিম (২৪)পিতা- আব্দুল রাজ্জাক, মোঃ ইসমাইল(২৫) পিতা- মৃত শাহ সেলিম, মোঃ আতাউল্লাহ(২৮) পিতা- মাকতুন হোসেন, মোঃ আমিন(৩৫) পিতা- আসাদুজ্জান, আবু সৈয়দ(২৫)পিতা- বদি আলম, মোঃ আব্দুল্লাহ(৩২)পিতা- আব্দুল মানাজ, মোঃ রফিক(২৫) পিতা- নুরুল হক ও মোঃ হোসাইন(১৬) পিতা-শাহ আলম। তাদের প্রত্যাকের বাড়ী মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মংডু থানার চালি পাড়া, নাইচং ও জামুন্না এলাকায়।
আটককৃত সকল রোহিঙ্গারা বালুখালী ও কুতুপালং শরনার্থী ক্যাম্পের নিবন্ধনকত রোহিঙ্গা। তবে ১৪ জনের মধ্যে সৈয়দ হোসেন(৩৮) পিতা-ফজল আকবরের কাছ থেকে নিবন্ধন কার্ড পাওয়া যায়। অন্যরা শরনার্থী শিবিরের শরনার্থী নিবন্ধন কার্ড গুলো রেখে এসেছেন বলে তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, লামা রূপসীপাড়া ক্যাম্পের সেনাবাহিনী কর্তৃক আটককৃত রোহিঙ্গা নাগরিকরা সবাই গেল ২২ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় অবস্থিত বালু খালী ও কুতুপালং রোহিংঙ্গা শরনার্থী শিবির থেকে পালিয়ে এসেছে। তাদের সবাইকে রূপসীপাড় ইউনিয়নের দূর্গম কুইরিং পাড়ায় গাছ কাটার জন্য শ্রমিক হিসাবে নিয়ে যাচ্ছিলেন সাহব উদ্দিন নামের এক মাঝি।
রোহিঙ্গাদের সাথে আটক মাঝি সাহাবুদ্দিন জানান, তিনি আলীকদম বাজারের গাছ ব্যবসায়ী রাণী বেগমের লামা খালের আগায় কুইরিং পাড়ার বাগানে স্বল্প দৈনিক বেতনে গাছ কাটতে ১৪ রোহিঙ্গাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে পুলিশকে জানান।
ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল ড্রাইভার মো. শাহীন জানান, তারা ৮টি মোটর সাইকেলে করে গাছ কাটার মাঝি সাহাবুদ্দিন ও ১৪জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে রুপসীপাড়া ইউনিয়নের মংপ্রু পাড়া যান। সেখানে যাওয়ার পরে রোহিঙ্গাদের কথা বার্তায় সন্দেহ হলে তারা পার্শ্ববর্তী রূপসীপাড়া সেনা ক্যাম্পে মুঠোফোনের মাধ্যমে খবর দেন। এরপর সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে নিশ্চিত হয়ে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যান।
রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প হতে গোপনে পালিয়ে এসে আটককৃত সৈয়দ হোসেন জানান,তারা সবাই দুই দলে বিভক্ত হয়ে কুতুপালং ও বালুখালী শরনার্থী ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসেছেন। তাদের সেখানে আর ভালো লাগছিল না। তাই অন্যদের মতো তারাও পালিয়ে স্বাধীনভাবে বাঁচতে সেখানে চলে গেছেন।
লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে আটককৃত রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে নেয়া হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.