অবিরাম ভারী বর্ষনে রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে চারটি স্থানে শিশুসহ ১১ জনের মৃত্যু ও ৩ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে ও সোমবরা রাতে ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায, গত তিন দিন ধরে টানা ভারী বর্ষনের কারণে মঙ্গলবার সকালে ও সোমবার রাতে রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বড়পুলপাড়া,ধর্মচরণ পাড়া,হাতিমারা ও চৌধুরী ছড়া মোনতলা পাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নিহতরা হলেন নানিয়ারচর ইউনিয়নের বড়পুল পাড়ায় একই পরিবারের সুরেন্দ্র লাল চাকমা ও তার স্ত্রী রাজ্য দেবী চাকমা,মেয়ে সোনালী চাকমা (১৪), একই ইউনিয়নের রুমেল চাকমা (১৪)। বুড়িঘাট ইউপির ধর্মচরণ পাড়ায় একই পরিবারের ফুল দেবী চাকমা, ইতি চাকমা, উভয়ের পিতার নাম মৃত-শ্যামল বিকাশ দেওয়ান,পুত্রবধূ ও রিগেন দেওয়ানের স্ত্রী স্মৃতি চাকমা, তার দেড় বছরের শিশু সন্তান আয়ুব দেওয়ান। বুড়িঘাট ইউপির হাতিমারা এলাকার মিশন চাকমার ছেলে রিপেল চাকমা ও তার বোন রীতা চাকমা এবং ঘিলাছড়ি ইউপির চৌধুরী পাড়ার মোনতলা পাড়ার মৃত হেম রঞ্জন চাকমার ছেলে বৃষকেতু চাকমা(৬০)।
এছাড়া এ ঘটনায় ৩ জন আহত হয়েছেন। তবে তাদের নাম তা’ক্ষনিকভাবে জানা যায়নি। তাদের নানিয়ারচরের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্ষে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর পর সেনাবাহিনী,পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন সন্মিলিতভাবে উদ্ধার কাজ চালায়। তবে আর কোন নিখোজ না থাকায় উদ্ধারের কার্যক্রম দুপুরের দিকে বন্ধর করা হয়েছে।
এদিকে রাঙামাটিতে এক টানা ভারী বৃষ্টিপাতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রোববার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হলেও রাত থেকে একটানা ভারী বর্ষণে জনজীবন থমকে যায়। টানা বর্ষনের কারণে শহরের ২০ থেকে ২৫ টি স্থানে মাটি ধ্বসের ঘটনা ঘটলেও কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধ্বসের মুল সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে ওই রুটে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করছে।
নানিয়ারচর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোয়ালিটি চাকমা জানান, উপজেলার সাবেক্ষং ইউনিয়নের বড়পুল পাড়া ৪ জন, ধর্মচানপাড়া ৪ জন এবং হাতিমারায় ২ জন পাহাড়ের মাটি চাপা পড়ে নিহত হয়েছে।
নারিনয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুলালাহ আল মামুন তালুকদার জানান,নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই আত্বীয়-স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মূলত সুরেন্দ্র নাথ পাড়ায় মাটি চাপা পড়ে একই পরিবারের চার জন মারা গেছে মাটির তৈরী ঘরটি পাহাড়ের ঘেষে অবস্থিত। আর পাহাড়টি বালির। তাই টানা ভারী বর্ষনের কারণে ধসে পড়ে প্রানহানীর ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরো জানান, নিহত ও আহতদের প্রত্যেককে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হবে।
জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশীদ জানান, টানা তিন দিনের ভারী বর্ষনের কারণে নানিয়ারচরের কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে এ পর্ষন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হবে।
তিনি আরো জানান, নানিয়ারচওে ১১ জনের প্রাণহানী ঘটনা ছাড়া রাঙামাটিতে আর কোথাও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। যদিও রাঙামাটি শহরের ১৫ থেকে ২০ টি স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাননের পক্ষ থেকে ঝুকিপুর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.