রাঙামাটিতে পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বয়োবৃদ্ধ আব্দুল হালিম

Published: 05 Jun 2020   Friday   

রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারের চেঙ্গীমুখ এলাকার বাসিন্দা ও ৮২ বছরের বৃদ্ধ আব্দুল হালিম নিজের জীবনে ও তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

 

তিনি দাবী করেছেন, তার প্রথম ঘরের সন্তানরা ক্ষিপ্ত হয়ে অজ্ঞাত লোকজন নিয়ে বাড়ী ঘর ও জমি দখলের উদ্দেশ্য তার দ্বিতীয় সন্তানদের মারধর ও জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া পরিবারের বিবাদের সুযোগ নিয়ে রিজার্ভ বাজার ব্যবসায়ী সমিতি সভাপতি ও অন্য একজন সদস্য তার পরিবারকে বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি ও প্রাণেনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। তবে তারা এই অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করেছেন।


শুক্রবার রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন বয়োবুদ্ধ অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হালিম লিখিতভাবে এই অভিযোগ করেন। সংবাদ সন্মেলনে এসময় তার দ্বিতীয় ঘরের সন্তান মোঃ আবদুল্লাহ-আল-হামদান ও মেয়ে হাবিবা নূর উপস্থিত ছিলেন।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আবদুল হালিম বলেন,তার প্রথম ঘরের স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিবাহ করেন। এতে প্রথম ঘরে এক সন্তান ও লন্ডন প্রবাসী হষরত আলী নিক্সন ও দুই মেয়ে রয়েছে। তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছি এবং তাদেরকে তার চাকুরী জীবনের সমস্ত আয় তাদের কাছে ব্যয় করেছেন। তারপরও তারা হিংসুক হয়ে একের পর তার সম্পত্তি দখল করতে থাকে। এক পর্যায়ে তার ছেলেকে সাপছড়িতে থাকা পাঁচ একর সেগুন বাগান দানপত্র করে দিয়েছেন। দ্বিতীয় ঘরের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। প্রথম ঘরের সন্তানরা দ্বিতীয় ঘরের সন্তানদের জড়িয়ে কুৎসা রটনাসহ বিভিন্ন প্রকার অশালীন কথাবার্তা প্রকাশ করায় সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করে আসছিল। তাই সম্প্রতি দ্বিতীয় ঘরের স্ত্রী,পুত্র-কন্যাসহ তিনজনের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যত শান্তির জন্য তার বসত বাড়ি ও দোকান প্লট দান করে জমি রেজিষ্ট্রি করে দেন। ্এ

 

তে দ্বিতীয় ঘরের সন্তানরা বাজার ফান্ড প্রমাসকের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে ভাড়া দেয়। এতে প্রথম ঘরের সন্তনরা ক্ষিপ্ত হয়ে অজ্ঞাত লোকজন নিয়ে বাড়ী ঘর ও জমি দখলের উদ্দেশ্য তাকে ও দ্বিতীয় ঘরের সন্তান আব্দুল্লাহ আল হামদানকে মারধরসহ ঘরে হামলা চালিয়ে নগদ অর্থ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়। এরই প্রেক্ষিতে জীবননাশের হুমকি দেওয়ায় গেল জানুয়ারী মাসে কতোযালী থানায় জিডিও করা হয়েছে। এছাড়া ওই মাসে অতিরিক্ত জেলা ম্যাসিষ্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা করা হয়। এতে আদালত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেন। 

 

তিনি আরো অভিযোগ করেন, তার উভয় পরিবারের বিবাদকে কেন্দ্র করে রিজার্ভ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বানু, যুগ্ম সম্পাদক ও আসবাবপত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল শুক্কুর, সদস্য জানে আলম সওদাগর বিষয়টি সমঝোতা করে দেবে বলে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। তিনি চাঁদা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে গেল ৪ জুন দিকে অজ্ঞাত ১৫/২০ জন লোক নিয়ে রিজার্ভ বাজার চেঙ্গীমুখ এলাকায় তাদের মালিকানাধীন ভাড়া দেওয়া দোকানে অবৈধভাবে প্রবেশ করে দোকানদারদের মাসিক দোকান ভাড়ার টাকা চাঁদা হিসেবে দেওয়ার জন্য রিজার্ভ বাজার পূবালী ব্যাংকের সঞ্চয়ী নং-৫০২০৩ জমা ভাউচারের রশিদ দিয়ে চাঁদা প্রদানে বাধ্য করে। আর চাঁদা প্রদান না করলে দোকানদারদের বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির হুমকি প্রদান করে। এই নিয়ে তার ছেলে মোঃ আবদুল্লাহ আল হামদান ও তিনি প্রতিবাদ করতে গেল তাদের উপর অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ শারীরিকভাবে লাঞ্জিত করে।


তিনি আরো বলেন, তার ছোট মেয়ে হাবিবা নূর মঠোফোনে ধারন করায় রিজার্ভ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বানু তার মেয়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে জোরপূর্বক মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে কাপড় ধরে টানাটানি করে কাপড় ছিড়ে ফেলে ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। আর এই বিষয়ে তিনি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে তারা আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ প্রদান করলে তাকে রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে বলেন। এতে গেল ৪ জুম রাঙামাটি কতোয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।


তিনি অভিযোগ করেন থানায় অভিযোগ দায়ের কারণে রিজার্ভ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বানু, সদস্য জানে আলম সওদাগর ও আসবাবপত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুল শুক্কর তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি ক্ষতি করাসহ প্রাণনাশের হুমাক দিচ্ছেন। এই অবস্থায় তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। তিনি এ ঘটনার সুরাহার জন্য প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন।


এদিকে, রির্জাভ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বানু, যুগ্ম সম্পাদক ও আসবাবপত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল শুক্কুর, সদস্য জানে আলম সওদাগর জানিয়েছেন এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাদের সমাজের কাছে হেয় ও প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।


চাঁদা দাবীর বিষয়টি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করে তারা জানিয়েছেন দুই পরিবারের মাঝে যে বিবাদ চলছে তা সমঝোতা করে দিতে অনেকবার চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু আবদুল হালিম ও তার পরিবার সমঝোতার জন্য কখনোই এগিয়ে আসেনি। আর করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বাজারে আসা মানুষদের সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বলতে গেলে এসময় আবদুল হালিমের পরিবারের তাদের উপর অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। এতে রিজার্ভ বাজারের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা জানেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত