সন্ত্রাসীদের চাঁদা দাবীতে বৃহস্পতিবার থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছে জেলেরা

Published: 28 Aug 2020   Friday   

দাবিকৃত চাঁদা পরিশোধ না করায় রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের বিপুল সংখ্যক মৎস্য ব্যবসায়ীদের বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) থেকে মাছ আহরণ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে পাহাড়ের আঞ্চলিক দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসিরা। এঘটনায় কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছে এশিয়ার বৃহত্তম কাপ্তাই লেকের উপর নির্ভশীল খুচরা ও পাইকারি মৎস্য ব্যবসায়ী, মাঝি, শ্রমিকসহ পেশাজীবি কয়েক হাজার মানুষ।

 

কাপ্তাই মৎস্য ব্যবসায় সমিতির নেতা মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, পাহাড়ের একটি সশস্ত্র গ্রুপ আমাদের কাছে ৮ লক্ষ টাকার চাঁদা দাবি করে। ওই গ্রুপ ছাড়াও আরও মোট ৪টি গ্রুপ প্রায় ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। বুধবার (২৬ ই আগষ্ট) পর্যন্ত ছিল এই চাঁদা প্রদানের শেষ সময়।

 

এসময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করায় তারা গত বুধবার জেলেদের মোবাইলের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে তারা যেন হ্রদে আর মাছ না ধরে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক মাঝি জানান,স্থানীয় সওদাগরদের কাছ থেকে উপরের পার্টি (সন্ত্রাসী গ্রুপ) চাঁদা খুঁজে। চাঁদা না দেওয়াই এমন অবস্থা। তার মাধ্যমে দেড়`শতাধিক শ্রমিক দেশের বিভিন্ন স্থান হতে কাপ্তাইয়ে কাজ করতে এসেছে। এখন মাছ ধরা বন্ধ করতে হচ্ছে, তাই এদের সবাইকেই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া ছাড়া বিকল্প কোন উপায় নেই বলে তিনি জানান।

 

এশিয়ার বৃহত্তম কাপ্তাই লেকে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক গেল মে` মাস হতে জুলাই` পর্ষন্ত তিন মাস মাছ আহরণ থেকে বিরত ছিল রাঙামাটি জেলার কাপ্তাইয়ের মৎস্য ব্যবসায়ীরা। অবশেষে নিষেধাজ্ঞা তোলায় স্বস্তি মিললেও সন্ত্রাসীদের দাবিকৃত চাঁদা পরিশোধ করতে না পারায় "মরার উপর খাড়ার ঘাঁ" এসে পড়েছে  মৎস্য ব্যবসায়ীদের উপর।

 

কাপ্তাইয়ে মৎস্য ব্যবসায়ী নেতা মোঃ জসিম উদ্দিন আরো জানান, কাপ্তাইয়ের মাছ ঢাকা, যাত্রাবাড়ি, চট্টগ্রামসহ দেশের বাহিরে পর্যন্ত যায়। এখাতে সরকার প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব পেয়ে থাকে।

 

অপর এক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, কাপ্তাই লেকে মাছ সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিপনন পর্যন্ত হাজারও লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এমুহুর্তে চাঁদার জন্য কাপ্তাই লেকে যদি মাছ আহরণ বন্ধ হয়, বিপুল পরিমাণ মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে। এতে সরকারও হারাবে মোটা অংকের রাজস্ব।

 

মৎস্য শ্রমিক আলাউদ্দিন, নাদির মিয়া, তোফাজ্জল, জয়নাল আবেদীনসহ আরও অনেকে বলেন, গেল ৩ মাছ মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ও লকডাউনের প্রভাবে কষ্টে কেটেছে আমাদের দিন। এখন আবার মাছ ধরা বন্ধ করছে ব্যবসায়ীরা। আমাদের পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

 

কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান জানান , অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, এবিষয়ে কেউ তাকে অবহিত করেননি।

 

এদিকে, এবিষয়ে কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুনায়েদ কাউছার এবং কাপ্তাই থানার ওসি নাসির উদ্দীনের   সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান , এবিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।###

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত