আদিবাসী নারীর উপর সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধ

Published: 29 Sep 2020   Tuesday   

আদিবাসী নারীর উপর ক্রমাগত সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সকল দোষীদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

 

বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় বলা হয়, জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরাম , বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও পাবর্ত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ এই মানববন্ধন আয়োজন করে।

 

বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক-এর সদস্য সচিব চঞ্চনা চাকমার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সদস্য সচিব এ্যান্টনি রেমার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খায়রুল চৌধুরী, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, জনউদ্যোগের প্রতিনিধি তারিক হোসেন মিঠুল, এএলআরডি’র বুলবুল আহমেদ, কাপেং ফাউন্ডেশন-এর প্রতিনিধি থেকে উজ্জ্বল আজিম, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যাবিলন চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম এর প্রতিনিধি হরেন্দ্র নাথ সিং, গারো স্টুডেন্টস ফেডারেশনের প্রলয় নকরেক, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অলীক মৃ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নাসির উদ্দিন প্রিন্স, মানবাধিকার কর্মী মাহবুব হক, বাগাছাস এর প্রতিনিধি বুশ নকরেক, মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল, হাজং স্টুডেন্টস কাউন্সিল, মাদল, এফ মাইনর এবং অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ। মানববন্ধনের শুরুতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে মূল বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমী। তিনি বলেন, কোভিড মহামারীর এ সময়ে আদিবাসী নারীর উপর সহিংসতা, নিপীড়ণ ও নির্যাতনের মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে। পাশাপাশি, গেল ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মধুপুরগড় অঞ্চলের পেগামারী গ্রামের বাসন্তী রেমার ৪০ শতক জায়গার পুরো কলাবাগান স্থানীয় বনবিভাগ বিনা নোটিশে কেটে ফেলে দেয়। এটা এক চরম মানবাধিকার লংঘন।


তিনি সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত আদিবাসী নারীর উপর নিপীড়ণ, নির্যাতন, ধর্ষণ ও সহিংস সকল ঘটনায় জড়িত দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করতে হবে, ঘটনার শিকার আদিবাসী পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণসহ নিরাপত্তা প্রদান,আদিবাসী নারীসহ নারীর প্রতি সকল ধরনের নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা রাখা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের অধীনে পার্বত্য নারীদের সকল ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে একটি বিশেষ সেল গঠন ও অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূণার্ঙ্গ বাস্তবায়নসহ চুক্তি মোতাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অস্থায়ী সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করতে ও সেটেলার বাঙালীদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনক পুনর্বাসন করা।


রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যে ধরনের ধর্ষণ হয়েছিল, সেটিই শেষ ধর্ষণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্বাধীন এই বাংলাদেশে এখন এত বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হচ্ছে কেন, তিনি প্রশ্ন করেন। তিনি আরো বলেন, আদিবাসী নারীর প্রতি যে সহিংসতা ঘটছে তা রাষ্ট্রের একটি হাতিয়ার যা আদিবাসীদের উচ্ছেদেরই একটি অংশ।


খাইরুল ইসলাম বলেন, আদিবাসী নারীদের জন্য আলাদা বিচার ব্যবস্থা ্ও এর সাথে যুদ্ধাপরাধীদের মত অপরাধীদের ধরে বিশেষ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে বিচার করতে হবে। আদিবাসী নারী ধর্ষণ ও সহিংসতা সেটি জাতিগত নিপীড়নের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।


জাকির হোসেন বলেন, আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি কিন্তু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হচ্ছে না। তাহলে কি বিচার ব্যবস্থায় কোন ত্রæটি আছে কিনা সেটা খুঁজে বের করতে হবে।


তারিক হোসেন মিঠুল বলেন, যে ধরনের নারীর প্রতি সহিংসতার খবর পত্রিকায় আসছে, তা নিয়ে আমরা শংকিত। যদি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হতে না চায় তাহলে বিচারব্যবস্থায় পরিবর্তন জরুরী বলে তিনি উল্লেখ করেন।


কাপেং ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি উজ্জ্বল আজিম এই সমাবেশের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার দ্রæত করার আহŸান জানান। এছাড়া তিনি সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের দাবি জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত