পাহাড়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করে চুক্তি বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান

Published: 10 Nov 2023   Friday   

পাবর্ত্য চট্টগ্রামে ভ্রাতৃঘাতি, সংঘাত-হানাহানি বন্ধ করে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে  ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছেন এমএন লারমা গ্রুপের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতারা। 
 
সাবেক সংসদ সদস্য  মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা (এমএন লারমা)-র ৪০ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার প্রত্যন্ত মুবাছড়িতে আয়োজিত স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন সংগঠনটির নেতারা।
 
এমএন লারমা গ্রুপের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি আরাধ্য পাল খীসা`র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও মহালছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিমল কান্তি চাকমা। স্মরণ সভায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অংশুমান চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা, রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সস্পাদক জুপিটার চাকমা বক্তব্য রাখেন।
 
যুবনেতা প্রত্যয় চাকমা’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় এসময় অন্যান্যদের মধ্যে সংগঠনের সহ-সভাপতি সুভাষ কান্তি চাকমা, সহ-সাধারণ সম্পাদক ও বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুদর্শন চাকমা, ইউনাইটেড নাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ- গণতান্ত্রিক)- এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অমল কান্তি চাকমাসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। স্মরণসভায় তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী যোগ দেন। এর আগে  খুলারাম পাড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার অস্থায়ী বেদিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন,   এম এন লারমা কখনো নিজের জন্য কিছু করেননি। তিনি জীবন উৎসর্গ করেছেন জুম্ম জনগণের জন্য। শুধু জুম্ম জনগণ নয়, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের মেহনতি সাধারণ মানুষের জন্য নিবেদিত একজন জনপ্রতিনিধি। তিনি ১৯৭২ সালে স্বাধীন দেশের প্রথম জাতীয় সংসদে দেশের জাতি-ধর্ম-দল-মত নির্বিশেষে সবার সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন উচ্চারণ করেছেন। তাঁর চিন্তা- দূরদর্শিতা- প্রজ্ঞা-বিনয়গুণে তিনি পাহাড়ের দশ ভাষাভাষি ১৩ জাতিগোষ্ঠিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বাতন্ত্র্য- ঐতিহ্য এবং আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে একীভুত করেছিলেন।
 
বক্তারা আরো বলেন, এম এন লারমা’র প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, তাঁর শুন্যতা পার্বত্য চট্টগ্রামকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। বিভেদপন্থীরা প্রবাদপ্রতিম এই ব্যক্তিত্বকে সঙ্গীসহ হত্যা করে মনে করেছিলো; পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের মন থেকে তাঁর আরাধ্য নীতি-দর্শন ও আদর্শকে মুছে ফেলা যাবে। কিন্তু তাঁর অবর্তমানে চল্লিশ বছর পরও তিনি সবুজ পাহাড়ের অন্দ্রে অন্দ্রে অমলিন। নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি দিন দিন অনন্য উচ্চতায় উদ্ভাসিত হচ্ছেন। তিনি এমন এক স্ফুলিঙ্গ যাঁর চেতনার পথ ধরেই পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধানের বীজ প্রোথিত।
 
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতি দিলেও ক্ষমতায় আসার পরে কালক্ষেপণ ও চুক্তি ভঙ্গ করে চলছে। সরকারকে দ্রুত পার্বত্য চুক্তির অবাস্তবায়িত ধারাগুলো বাস্তবায়নের দাবি জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গম এক গ্রামে তাঁর প্রতিষ্ঠিত জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র শাখা তৎকালীন শান্তিবাহিনীর প্রতিপক্ষ ‘গিরি-প্রকাশ- দেবেন’ চক্রের হামলায় নিহত হন মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা এবং তাঁর বিশস্ত সহযোদ্ধারা।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত