বর্ষায় নবরূপে সেজেছে বান্দরবানের নীলাচল

Published: 02 Jun 2015   Tuesday   

বর্ষায় পর্যটন কন্যা বান্দরবানের নীলাচল নতুন রুপে সেজেছে। এই বর্ষা মৌসুমে নীলাচলে বসেছে মেঘের মেলা। একটু হাত বাড়ালে মেঘ ছুঁয়ে দেখা যায়। তাই একটু প্রশান্তি পেতে ঘুরে আসতে পারেন বাংলাদেশের দার্জিলিং খ্যাত বান্দরবান।

যান্ত্রিক জীবনের নানা কর্মব্যস্ততার ফাঁকে কিছুটা প্রশান্তি পেতে এ বর্ষাতেই ঘুরে  আসতে পারেন বান্দরবানের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট নীলাচল। বর্ষার ছোঁয়ায় পাহাড়গুলো যেন ফিরে পায় নতুন প্রাণ। সবুজের আবরণে ঢাকা পড়ে চারিদিক। বর্ষায় নীলাচল ভ্রমনের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে এ মৌসুমে পর্যটকদের ভীড় কিছুটা কম থাকে। হানিমুন, আনন্দ ভ্রমণ ও পরিবার নিয়ে ঝামেলাহীন পরিবেশে ঘুরতে যাওয়ার আদর্শ স্থান হতে পারে নীলাচল। তাই সবুজে মোড়ানো প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্য এবং মেঘ ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে হলে এ বর্ষা ঋতুকেই বেছে নিন।

সম্প্রতি নীলাচলে নতুন আকর্ষণ হিসেবে যোগ হয়েছে ‘ঝুলন্ত নীলা’ ‘নীহারিকা’ এবং ‘ভ্যালেন্টাইন’ পয়েন্ট নামে বেশ কিছু স্পট। প্রত্যেকটি স্পট একেবারেই আলাদা। যেখান থেকে নীলাচলের ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়। পাহাড়ের ঢালুতে রয়েছে তংচংগ্যা, মার্মা, বম সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পাহাড়ি গ্রাম। পাহাড়ি গ্রামগুলো দেখতে চাইলে পায়ে হেঁটে পাহাড়ের পাদদেশে চলে যেতে পারেন।

নীলাচল বান্দরবান জেলা শহরের নিকটবর্তী পর্যটন কেন্দ্র। এটি জেলা সদরের প্রবেশ মুখ টাইগার পাড়ার  পাশাপাশি অবস্থিত। এখানে পর্যটন কেন্দ্র দুটি। নীলাচল জেলা প্রশাসন ও শুভ্রনীলা বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ পর্যটন কেন্দ্র দুটি পরিচালিত হয় । এ পর্যটন কেন্দ্রের উচ্চতা ভূ-পৃষ্ট থেকে প্রায় ২হাজার ফুট। বান্দরবান জেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে এই পর্যটন কেন্দ্র অবস্থিত। পাহাড়ের উপর নির্মিত এ পর্যটন কেন্দ্র থেকে পার্শ্ববর্তী এলাকার দৃশ্য দেখতে খুবই মনোরম।

বান্দরবান শহর থেকে ভাড়ায় চালিত বেবি ট্যাক্সি, চান্দের গাড়ি, জিপ নিয়ে ১৫/২০ মিনিটে নীলাচল যাওয়া যায় খুব সহজেই। ভাড়া গুণতে হবে ৪শত থেকে ৮শত টাকা। নীলাচলে পাহাড়ের ঢালুতে রয়েছে ৩টি নীল রঙের দৃষ্টিনন্দন কটেজ ও জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি রেস্ট হাউজ। কটেজগুলো ভাড়ায় পাওয়া যায়, আর রেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করতে হলে আগেই নিয়ে নিতে হবে জেলা প্রশাসনের অনুমতি।

নীলাচলে রয়েছে স্কেপ নামের একটি আকর্ষণীয় রেস্টুরেন্ট। যেখানে সাধারণ পর্যটকদের জন্য সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করার অনুমতি রয়েছে। তবে রিসোর্টের অতিথিরা সর্বক্ষণ সেখানে থাকার সুযোগ পাবেন।

পাশাপাশি ঘুরে আসতে পারেন ভূ-পৃষ্ট থেকে ১৬শত ফুট উপরে লামা উপজেলার অরণ্য বেষ্টিত মিরিঞ্জা টাইটানিক পাহাড়। হুবাহু টাইটানিক জাহাজের আদলে তৈরী হয়েছে এই পাহাড়টি। দেখলে চিন্তাই করতে পারবেন না জাহাজের আদলে একি ভাবে হল !

কিভাবে যাবেন-ঢাকার ফকিরাপুল, কমলাপুর ও সায়দাবাদ থেকে শ্যামলী পরিবহন, সেন্টমার্টিন পরিবহন ও বিআরটিসির এসি ও নন এসি বাস সার্ভিস রয়েছে। ভাড়া ৬শ থেকে ১হাজার ২শ টাকার মধ্যে। এছাড়া সড়ক, রেল কিংবা আকাশ পথে চট্টগ্রাম হয়ে সহজেই যাওয়া যায় বান্দরবান। চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে পূরবী, পূর্বাণী পরিবহনের বাস সার্ভিস রয়েছে সকাল ৬ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ভাড়া ১১০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে।

বান্দরবান শহরের বাস ষ্টেশন থেকে জীপ, ল্যান্ড ক্রু জার, ল্যান্ড রোভার ভাড়া নিয়ে যেতে হবে অথবা বান্দরবান শহরের সাঙ্গু ব্রীজের কাছে টেক্সি ষ্টেশন থেকে টেক্সি ভাড়া নিয়ে নীলাচল ও শুভ্রনীলায় যেতে পারেন। জীপ, ল্যান্ড ক্রুজার, ল্যান্ড রোভার ৬শত-৭শত টাকা, টেক্সি ৩শত টাকা নিয়ে থাকে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত