বহুমুখী শাসন ব্যবস্থার কারণে পার্বত্যাঞ্চলের সাধারণ মানুষ এখনো নিষ্পেষিত-সন্তু লারমা

Published: 28 Mar 2017   Tuesday   

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা) বলেছেন, পার্বত্য এলাকায় বহুমুখী শাসন ব্যবস্থার কারণে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ এখনো নিষ্পেষিত। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন হলেও পার্বত্য চুক্তি পুর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ায় জেলা পরিষদগুলোর কার্যক্রম নানাভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

 

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে আইনের মাধ্যমে পার্বত্য এলাকায় যে বিশেষ শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা উপেক্ষা করা হচ্ছে। পার্বত্য চুক্তি অনুসারে মাধ্যমিক শিক্ষা জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত একটি বিষয়। ইতিমধ্যে তা চুক্তিপত্রের মাধ্যমে জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত হয়েছে। আইন অনুযায়ী জেলা পরিষদ যথারীতি প্রবিধানও প্রণয়ন করেছে এবং পরামর্শের জন্য সরকারের কাছে প্রেরণ করেছে। এক্ষেত্রে জেলা পরিষদ তার দায়িত্ব পালন করলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনও সে বিষয়ে কোন পরামর্শ পাওয়া যায়নি। ফলে তা দীর্ঘসূত্রিতায় পড়েছে। তারপরেও জেলা পরিষদকে এই প্রণীত প্রবিধানের আলোকে কাজ করে যেতে হবে।

 

মঙ্গলবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মাধ্যমিক শিক্ষার কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার মানোন্নয়ন শীর্ষক মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে  সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।

 

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমার সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নেতা হাজী মুসা মাতব্বর, পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জাকির হোসেন এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নির্মল কান্তি চাকমা বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের শিক্ষা কমিটির আহবায়ক অংসুইপ্র“ চৌধুরী।

 

মত বিনিময় সভায় রাঙামাটি জেলার ১০ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০জন প্রধান শিক্ষক, ১০জন পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের পক্ষে কাউখালী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক বক্তব্য রাখেন। 

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা আরো বলেন, পার্বত্য এলাকায় চলমান বহুমুখী শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে শাসন ব্যবস্থাকে একমুখী করতে হবে। পার্বত্য চুক্তির আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনের ভিত্তিতে ১৯০০ সালের শাসনবিধি, ১৮৬১ সালের পুলিশ এ্যাক্ট এবং বাংলাদেশ পুলিশ রেগুলেশন সংশোধনের মাধ্যমে সাধারণ প্রশাসন ও আইন শৃংখলা পরিষদে ন্যস্ত করে পার্বত্য অঞ্চলের বিশেষ শাসন ব্যবস্থা কার্যকর করা দরকার। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

 

সন্তু লারমা আরো বলেন, পার্বত্য এলাকায় সাধারণ প্রশাসন কার হাতে তা নিয়ে একটা সাংঘর্ষিক অবস্থা বিরাজ করছে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে মাধ্যমিক শিক্ষার কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের যেকোন কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হবে।

 

পার্বত্য এলাকার ভৌগোলিক, প্রাকৃতিক ও এখানকার মানুষের জীবনধারার উপর ভিত্তি করে এখানকার শিক্ষানীতি প্রণয়ন হওয়া বাঞ্চনীয় বলে তিনি  মন্তব্য করেন।

 

সভাপতির বক্তব্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, পার্বত্য এলাকার প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা নিতে হবে। তবেই তারা ভালোমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে সক্ষম হবে। তিনি মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের রাজনীতিতেও না জড়ানোর বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত