বরকলে ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ করলেন ভূক্তভোগী শিক্ষকরা

Published: 05 Apr 2017   Wednesday   
no

no

রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ এনেছেন বিদ্যালয়ের ভূক্তভোগী শিক্ষকরা। এ ব্যাপারে তারা রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান,প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালক প্রশাসনসহ জেলা প্রশাসক ও দূর্নীতি দমন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন ।

 

তবে ওই শিক্ষা কর্মকর্তা দাবী করেছেন তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। শিক্ষকদের একটি অংশ ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবী করেছেন।

 

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান,প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালক প্রশাসনের কাছে পাঠানো অভিযোগনামায় উল্লেখ করা হয়, বরকল উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আলতাব হোসেন ২০১০ সালে সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন। দীর্ঘ ৬বছর ধরে কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করার সুবাদে নানান অনিয়ম-দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি করে যাচ্ছেন।


অভিযোগের আরো উল্লেখ করা হয়, ওই শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ের স্লিপের টাকা থেকে ১হাজার থেকে ১২শ টাকা, বিদ্যালয়ের মেরামত কাজের বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে শতকরা দশ ভাগ, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকদের পেনশন কাজে ১হাজার ৫ শ টাকা, প্রতিটি বদলীর প্রস্তাবে ১০ হাজার টাকা। উপজেলায় বিদ্যালয় গুলোতে তিন ধাপে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা করে ওই ঘুষ নেন। এছাড়া আনন্দ স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে জন প্রতি ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। আর প্রতিবারে আনন্দ স্কুলের শিক্ষকদের বেতন হওয়ার পর জন প্রতি ২হাজার থেকে ৩হাজার টাকা ঘুষ গ্রহনসহ প্রতি বছর জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ পালন ও বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গ মাতা গোল্ডকাপ টুর্ণামেন্টের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ না করে শিক্ষকদের পকেট থেকে খরচ করে নিজেই ওসব অর্থ আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে এক পক্ষকে সুযোগ সুবিধা দিয়ে অন্য পক্ষকে নানাভাবে হয়রানিসহ আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছেন বলে অভিযোগ নামায় দাবী করা হয়েছে।


অভিযোগনামায় ওই শিক্ষা কর্মকর্তার কারণে উপজেলায় শিক্ষা ব্যবস্থা চরম অবনতি হওয়ার আশংকা প্রকাশ করে তাকে দ্রুত বদলী করে বিভাগীয় শাস্তির দাবী জানানো হয়েছে।


প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বরকল উপজেলা ও জেলা সভাপতি অমল চাকমা বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষকরা যেসব অভিযোগ এনেছেন তা সবই সত্য। সরেজমিনে তদন্ত করলে তার সত্যটা বেরিয়ে আসবে বলে তিনি দাবী করেছেন।


বরকল উপজেলার সহকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মিলিন্দ চাকমা দাবী করে বলেন, ওই শিক্ষা কর্মকর্তার অনিয়ম দূনীর্তি স্বজনপ্রীতিসহ পক্ষপাত মূলক আচরনে শিক্ষক সমাজ হতাশা গ্রস্থ। শিক্ষা কর্মকর্তার এমন কার্যক্রম শিক্ষকদের জন্য চরম বেদনাদায়ক। এতে উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা বাধা গ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে জানান তিনি।


এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আলতাব হোসেন বলেন,তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। শিক্ষকদের একটি অংশ তার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি উল্টো শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে এটি সাম্প্রদায়িকতার পায়তারা বলে তিনি করেছেন।


জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জিল্লুর রহমান এ ব্যাপারে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাননি উল্লেখ করে বলেন, যদি অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তদন্ত করা হবে। তদন্তে প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ সহকারে পাঠানো হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত