রাঙামাটিতে অহমিয়াদের রঙালী বিহু উৎসব উদযাপন

Published: 18 Apr 2017   Tuesday   

মঙ্গলবার রাঙামাটিতে প্রথমবারের মতো অহমিয়া সম্প্রদায়ের রঙালী বিহু উৎসব উদযাপিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে ভারতের আসাম রাজ্যে থেকে প্রায় ১২ জন কবি,সাহিত্যক ও সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব অংশ গ্রহন করেন।

 

শহরের আসামবস্তি এলাকার নারিকেল বাগাণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটির সাংসদ উষাতন তালুকদার। অহমিয়া উন্নয়ন সংসদের উপদেষ্টা নীহার আসামের সভাপতিত্বে  বিশেষ অতিথি  ছিলেন  সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সভাপতি শক্তিপদ ত্রিপুরা, এমএন লারমা মেমোরিয়েল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, ভারতের আসাম রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শশীপ্রভা দেবী, আসাম রাজ্যের কর্মচারী পরিষদের সভাপতি শেখ সাহাবুদ্দিন, আদিবাসী কবি শিশির চাকমা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন অহমিয়া উন্নয়ন সংসদেও সভাপতি পংকজ আসাম।  আলোচনা সভা শেষে বাংলাদেশ ও ভারতের আসাম রাজ্যের শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

 

অনুষ্ঠানে বক্তারা আগামীতে দুই দেশের মধ্যে আরো বেশী সাংস্কৃতি আনাপ্রদানের জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উষাতন তালুকদার এমপি বলেন, সরকার বিপন্ন পাখিগুলোর রক্ষার্থে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়। বাঘ গননা ও সুরক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে অহমিয়া সম্প্রদায়এখন বিপন্ন হতে চলেছে। এপর্যন্ত তাঁদের জন্য কোনো কিছু করা হচ্ছে না। সাংবিধানিক স্বীকৃতি না পাওয়ায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তাএভাবে হারিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, পাহাড়ে সাংস্কৃতি আগ্রাসন চলছে। বিভিন্ন স্থানে পাহাড়িদে রাখা নামগুলো বিকৃতি করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে ঐতিহ্যবাহী নাম ও স্থান পরিবর্তন হয়ে যাবে। আমরা আদিবাসী শব্দটি আদিকালে বসবাস করে আসছি অর্থে বলিনি। পাহাড়ের মানুষ জাতিসংঘ ঘোষিত অনুযায়ী ডাকা হয়।

 

সিএইচটি হেডম্যান নেটয়ার্কের সহসভাপতি শক্তিপদ ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খা ফিরে আসার অহমিয়া সম্পদায়ের ভূমিকা যথেষ্ট রয়েছে। কিন্তু তাঁদেরকে সেভাবে মর্যদা কিংবা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। চাকরি ক্ষেত্রে ও শিক্ষা ক্ষেত্রেও এখন অন্য সম্প্রদায়ের চেয়ে অনেক পিছিয়ে।

 

ভারতে আসাম রাজ্যের বিশিষ্ট লেখক শেখ শাহাবুদ্দিন বলেন, ভারতে আসামে বসবাসরত অহমিয়ারা নিজের সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও কালচার হারিয়ে ফেলতে বসেছে। কিন্তু বাংলাদেশে রাঙামাটির অহমিয়ারা এখনো তাঁদের সংস্কৃতি,কৃষ্টি ও কালচার ধরে রেখেছেন। আমি আগে জানতাম না রাঙামাটিতে আসামবস্তী নামে একটি জায়গা আছে। আমাদের রাজ্যে অনেক অহমিয়া শেখ,কুর্ম ও দেবী লেখেন। কিন্তু রাঙামাটিতে অহমিয়ারা এখনো নামের পরে আসাম লেখেন। এটা হলো অহমিয়াদের আসল পরিচয়।

 

ভারতে আসাম রাজ্যে বিশিষ্ট ব্যক্তি শশী প্রভাদেবী বলেন, এখানে অহমিয়ারা নানা ক্ষেত্রে এখনো পিছিয়ে পড়ে আছেন। তাই সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করবো উন্নয়ন, শিক্ষা ও চাকরিসহ সবক্ষেত্রে অহমিয়াদের যেন কোটা চালু হয়। আমরা পাস্পারিক সহযোগিতা ও আন্তরিকতা থাকলে দুদেশের সেতু বন্ধ রচনা হবে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত