আলীকদমে ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮০জন শিক্ষকের চাকুরী সরকারি করণে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

Published: 18 Apr 2017   Tuesday   

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফ সমাপ্ত প্রকল্পের সদ্য জাতীয়করণকৃত ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮০জন শিক্ষককের চাকুরী সরকারী করণে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম সহ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনসাধারণ। প্রকৃত কর্মরত শিক্ষকদের চিহিৃত করে কাগজে পত্রে দেখানো ভুয়া শিক্ষকদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান পত্র প্রেরণ করেছেন। 

 

প্রেরিত পত্রের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে ইউএনডিপি পার্বত্য চট্টগ্রাম মৌলিক শিক্ষা প্রকল্পের অধিনে আলীকদম উপজেলায় ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২০১৫ইং সন থেকে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে যায়। প্রকল্প চলমান অবস্থায় প্রতি বিদ্যালয়ে স্থানীয় একজন শিক্ষক কর্মরত ছিল, সংশ্লিষ্টগন অনিয়মের আশ্রয় গ্রহণের মাধ্যমে কাগজে কলমে প্রতি বিদ্যালয়ে ৪জন শিক্ষককে কর্মরত দেখিয়েছে।


গেল ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ তারিখে সরকার ইউএনডিপি’র বর্ণিত প্রকল্পের ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রতি বিদ্যালয়ে ৪জন করে মোট ৮০ জন শিক্ষকের চাকুরী সরকারি করা হবে।


মারাং রাইতম লাংথই পাড়া বিদ্যালয়ের সভাপতি মারাং ম্রো কমান্ডার, ইয়াংরি মাংক্রাত পাড়া বিদ্যালয়ের সভাপতি ইয়াংরিং ম্রো, বিদ্যামনি পাড়া বিদ্যালয়ের সভাপতি সতিচন্দ্র ত্রিপুরা, লাওলিং ন্যাদয় কাম্পুক পাড়ার সভাপতি ইয়াংএ  ম্রো ও মেনক্য মেনকক পাড়া বিদ্যালয়ের সভাপতি মাংক্রি ম্রো জানিয়েছেন, প্রায় ৩ বছর ধরে প্রকল্প সহায়তা বন্ধ। বর্তমানে কাগজে পত্রে দেখানো শিক্ষকগন কখনো অত্র বিদ্যালয় গুলোতে আসে নাই। স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন তাদের চিনে না। কাগজে কলমে দেখানো ভুয়া শিক্ষকদের চাকুরী সরকারী না করে জেলা পরিষদের মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষার লোকজনকে নিয়োগ দেওয়ার দাবী তুলেছেন স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনসাধারণ।


আলীকদম উপজেলার চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানিয়েছেন, বিদ্যালয়গুলো সরকারী করণের প্রজ্ঞাপন জারির পর ইউএনডিপি’র জনৈক সাবেক কর্মী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ভাঙ্গিয়ে শিক্ষকদের চাকুরী সরকারী করণের জন্য প্রকাশ্য উৎকোচ আদায় করছে। বিগত দিনে বিদ্যালয়ে কখনো গমন করে নাই এবং বিদ্যালয় চিনে না এমন লোকজনকে শিক্ষক হিসেবে সরকারি চাকুরীতে নিয়োগের জন্য প্রক্রিয়া চলছে। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে চলছে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতি। জন প্রতি লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে সমাপ্ত প্রকল্পের জনৈক কর্মীর বিরুদ্ধে।


বিদ্যালয় গুলো জাতীয়করণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর পরই ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮০ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রকাশ্য উৎকোচ গ্রহণের মহোৎসব চলছে। এক পর্যায়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই চাকুরী প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জন প্রতি লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করেছেন।


ইউএনডিপি বান্দরবান জেলার কো-অর্ডিনেটর খুশি রাই ত্রিপুরা জানিয়েছেন, বিদ্যালয় গুলো সরকারী করণের বিষয়টি সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। ই্উএনডিপি’র সাবেক কোন কর্মী কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগে উৎকোচ গ্রহণের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। নিয়োগ প্রক্রিয়ার দায়িত্ব সরকারের।


আলীকদম উপজেলার শিক্ষা অফিসার বাসু দেব কুমার সানা বলেছেন, দূর্গমের বিদ্যালয় গুলোর শিক্ষক কর্মরত না থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই।


এ ব্যাপারে বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রিটন কুমার বড়ুয়া জানান, বিদ্যালয় জাতীয় করণের প্রজ্ঞাপন জারির কপি পেয়েছি। শিক্ষকদের সরকারি চাকুরীতে নিয়োগের বিষয়ে কোন পত্র আমরা এখনো পায়নি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত