১৯ বছরেও বাস্তবায়ন না করে সরকার পার্বত্য চুক্তিকে অবদমিত ও পদলিত করছে-সন্তু লারমা

Published: 20 May 2017   Saturday   

দীর্ঘ দুদশক ধরে সশস্ত্র সংগ্রামের পর ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত  হয়েছিল। কিন্তু চুক্তির ১৯ বছর অতিবাহিত হলেও চুক্তি স্বাক্ষরকারী সেই শেখ হাসিনার সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না  করে বরং পার্বত্য চুক্তিকে অবদমিত ও পদলিত করছে বলে অভিযোগ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা)।

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে উপনেবিশক কায়দায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসিত হয়ে আসছে। এক সময় অমুসলিম অধ্যূষিত অঞ্চলকে এখন মুসলিম অধ্যূষিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছে। এ অঞ্চলকে ইসলামিক সম্প্রসারণবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। আজকে পাহাড়ে বসবাসরত আদিবাসী জুম্ম জনগণকে সংখ্যালঘুতে পরিণত  করা হয়েছে। ফলে জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব বিলুপ্তি  আজ অন্তিম পর্যায়ে পৌঁছেছে।

 

তিনি অভিযোগ করে বলেন,জুম্ম জাতিকে বিলুপ্তির জন্য যড়ষন্ত্র চালানো হচ্ছে।পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান বাস্তবতায় নতুন করে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রামের চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

 

শনিবার রাঙামাটিতে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ২৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দুদিন ব্যাপী সন্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।

 

রাঙামাটি সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট প্রাঙ্গনে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে সভাপতি সভাপতিত্ব করেন পাজাড়ী ছাত্র পরিষদেও কেন্দ্রীয় বিদায়ী সভাপতি বাচ্চু চাকমা। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের  ফকরোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আমিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ব বিভাগের সহকারী সহকারী অধ্যাপক মহিউদ্দীন মাহিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বসুমিত্র চাকমা, এমএন লারমা মেমোরিয়েল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি জিএম জিলাহী(শুভ), বাংলাদেশ ছাত্র ফ্রন্টের সাধারন সম্পাদক নাসির উদ্দীন প্রিন্স,পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙামাটি শাখার সভাপতি টোয়েন চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সংগটনিক সম্পাদক চন্দ্রা ত্রিপুরা।  স্বাগত বক্তব্যে দেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের নেতা সুমন মারমা। 

 

এর আগে জাতীয়, দলীয় পাতাকা  ও বেলুন উড়িয়ে দুদিন ব্যাপী সন্মেলনের উদ্বোধন করেন সন্তু লারমা। অনুষ্ঠানে গণ সংগীত পরিবেশন করে গিরিসুর শিল্পী গোষ্ঠীরা। দুদিন ব্যাপী সন্মেলনে তিন পার্বত্য জেলা থেকে প্রায় দুই শতাধিক পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মী অংশ গ্রহন করেছেন।

 

সন্তু লারমা তার বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সুবিধাবাদী ও প্রতিক্রীয়াশীল যারা রয়েছেন তাদের ভূমিকা হচ্ছে আত্নঘাতি ভূমিকা। এসব চুক্তি বিরোধী ও প্রতিক্রীয়াশীলরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের যে আশা আকাংখা রয়েছে তার পদদলিত করে চুক্তি যাতে বাস্তবায়িত না হতে পারে সেই ষড়যন্ত্র জালে আবদ্ধ হয়েছে। যারা চুক্তি বিরোধী ও প্রতিক্রীয়াশীল তারা সতর্ক  হোন ও নিজেদের অবস্থান নিয়ে ভাবুন। কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামের বুকে নতুন করে বেচেঁ থাকার সংগ্রাম শুরু হতে যাচ্ছে।

 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন তখন অনেক অংগিকার ও প্রতিশ্রুতিসহ অনেক কিছু বলেছিলেন। শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্ষন্ত ক্ষমতায় অধিষ্ঠ ছিলেন। এই দীর্ঘ সময় ধরে এ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নকল্পে,সমস্যা সমাধানকল্পে এই সরকার কোন বাস্তব সম্মত নেয়নি। বরংশ পার্বত্য সমস্যা সমাধানে তার সরকারের আমলে যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল সেই চুক্তি বিলুপ্তির একটা ষড়যন্ত্র অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।

   

তিনি  ছাত্র ও যুব সমাজকে জুম্ম  জনগণের সামাজিক,অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক,স্বাধিকার ও অধিকার আদায়ের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত