নাইক্ষ্যংছড়ি বৌদ্ধ ভিক্ষু হত্যা মামলায় জেএমবি’র তিন সদস্যকে আদালতে হাজির

Published: 29 May 2017   Monday   

নাইক্ষ্যংছড়ি বাইশারী চাক পাড়ার বৌদ্ধ ভিক্ষু হত্যাকান্ডের মামলার আসামী জেএমবি সদস্য মাহমুদুল হাসান, জহিরুল হক ওরপে জসিম ও তাঁর স্ত্রী মোছাম্মত আরজিনাকে সোমবার বান্দরবান আদালতে হাজির করা হয়েছে। এতে বান্দরবানের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: আবু হানিফের আদালতে তোলার পর বিজ্ঞ আদালত তিন জেএমবি সদস্যকে আগামী জুনের ১৯ তারিখ শুনানীর দিন ধার্য করেছেন। 

 

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন জেএমবি সদস্যকে সোমবার সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বান্দরবান ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসা হয়।


এদিকে সোমবার সকাল থেকে আদালত চত্ত্বরে লোকেরজনের সমাগম প্রতিদিনের চাইতে বাড়তি ছিল। সেখানে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন। ভিড় জমানোর একটাই কারণ ছিল আলোচিত তিন জেএমবি সদস্যকে আদালতে নিয়ে আসা হবে। চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিন জেএমবি সদস্য মাহমুদুল হাসান, জহিরুল হক ওরপে জসিম ও তাঁর স্ত্রী মোছাম্মত আরজিনাকে নিয়ে আসা হবে। তারজন্য আদালত চত্ত্বরে নিরাপত্তা জোরাদারের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও সর্তক ছিলেন। সকাল ১১টায় বান্দরবান অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: আবু হানিফ আদালতে তিন জেএমবি সদস্যকে হাজির করা হয়। কড়া নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রিজন ভ্যানের সামনে-পেছনে পুলিশের গাড়ীর বহর ছিল।

 

আদালতে চত্ত্বরে প্রথমে আরজিনাকে পরে হাসান ও জহিরুলকে পুলিশ নিয়ে আসা হয়। আদালতের ভেতরে এক ঘন্টা থাকার পর আবার পুলিশ ভ্যানে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তাদেরকে উঠানো হয়।


জানা যায়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার আলোচিত হত্যাকান্ড বৌদ্ধ ভিক্ষু হত্যা। বাইশারী ইউনিয়নের চাক পাড়ায় বৌদ্ধ ভিক্ষুকে গেল বছর মে মাসের ১৩ তারিখে হত্যা করা হয়। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের চাক পাড়ার একটি বৌদ্ধ বিহারে। বৌদ্ধ ভিক্ষু উ ধাম্মা ওয়াইশাকে (৭৫) রাতের আধারে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকান্ডের শিকার বৌদ্ধ ভিক্ষুর পূর্বে কারা সঙ্গে কোনো শক্রতা ছিল না। জমিজমা, টাকা-পঁয়সা বা অন্য কোনো কিছু নিয়ে কারোর সঙ্গে কোনো বিরোধ ছিল না।

 

তিনি পাড়া থেকে দূরে বৌদ্ধ মন্দিরে একাকি ধ্যান সাধনায় মগ্ন থাকতেন। ওইদিন রাতে দুর্বৃত্তরা বৌদ্ধ মন্দিরে প্রবেশ করে বৌদ্ধ ভিক্ষুকে গলা কেটে হত্যা করে। ওইদিন রাতে বৃষ্টি হয়েছিল। দুর্বৃত্তরা বৌদ্ধ মন্দিরের পেছনের পাহাড়ি জঙ্গল পথ দিয়ে এসে বিহারে প্রবেশ করে। মিশন কাজ শেষ করার পর দুর্বৃত্তরা সেই পাহাড়ি জঙ্গল পথ ব্যবহার করে চলে যায়। বৃষ্টি হওয়ার দরুণ দুর্বৃত্তরা তাদের পায়ের চাপ রেখে যায়।

 


ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের জিআরও (জেনারেল রেজিষ্টার অফিসার) মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান, বৌদ্ধ ভিক্ষু হত্যাকান্ডের ঘটনায় অজ্ঞাত নামা বেশ কয়েকজনের নামে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ঘটনার দুইদিন পর অর্থাৎ গেল বছর ১৫ মে মাসের মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং ৬। জিআর ১৩০/১৬।

 

ঘটনার দুইদিন পর তিনজনকে আটক করে পুলিশ। তিনজনের মধ্যে জামিনে রয়েছেন জিয়াউর রহমান ও নূরুল আলম। জামিন নেওয়ার পর জিয়াউর রহমান পলাতক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেছেন আদালত। আগামী জুন মাসের ১৯ তারিখ শুনানী দিন ধার্য করেছে আদালত। ওইদিন রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত