রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের ঘটনায় এক সেনা সদস্যসহ আরো ৩ জনের লাশ উদ্ধার,নিহতের সংখ্যা ১০৮এ দাড়িয়েছে

Published: 15 Jun 2017   Thursday   

রাঙামাটিতে ভারী বর্ষনে পাহাড় ধসে মাটিতে চাপা পড়ে বৃহস্পতিবার এক সেনা সদস্যসহ আরো ৩জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এনিয়ে রাঙামাটিতে ১০৮ জনের মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

 

এদিকে, বৃষ্টির কারণে নিখোঁজদের উদ্ধারের জন্য বৃহস্পতিবার থেকে সাময়িকভাবে উদ্ধার তৎপরতা বন্ধ থাকলেও নিখোঁজদেও উদ্ধার না হওয়া পর্ষন্ত উদ্ধার অভিষান চলবে।


জানা গেছে, টানা ভারী বর্ষনে পাহাড়ে ধসে মাটি চাপা পড়ে গত মঙ্গলবার রাঙামাটি সদর উপজেলা,কাউখালী, কাপ্তাই,বিলাইছড়ি ও জুরাছড়িতে ৫ সেনা সদস্যসহ ১০৮ জনের মৃত্যূ হয়। এর মধ্যে রাঙামাটি শহরে ৬১ জন, কাউখালী উপজেলায় ২৩ জন, কাপ্তাই উপজেলায় ১৮ জন, জুরাছড়ি ৪ জন ও বিলাইছড়ি ২ জন মারা গেছে। গতকাল ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন উদ্ধার অভিযান চালিয়ে মানিকছড়ি এলাকা থেকে সেনা সদস্য আজিজুর রহমান, ভেদভেদীর পশ্চিম মুসলিম পাড়া থেকে সুলতানা(৫০) ও ভেদভেদীর পোষ্ট অফিস কলোনী এলাকা রুপম দত্ত(২০) উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রাঙামাটি শহরের মানিকছড়ি,পশ্চিম মুসলিম পাড়া, পোষ্ট অফিস কলোনী এলাকা, শিমুলতলী,পূর্ব মুসলিম পাড়া এলাকায় নিখোজদের ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা উদ্ধারের তৎপরতা চালান। তবে দুপুরের দিকে বৃষ্টি হওয়ার কারনে সাময়িক উদ্ধার তৎপরতা স্থগিত করা হয়। তবে বৃষ্টি থামলে আবারও উদ্ধার তৎপরতা চালানো হবে।


ফায়ারা সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সে অপরারেনের পরিচালক মেজর একেএম শাকিল নেওয়াজ জানান, বৃহস্পতিবার এক সেনা সদস্যসহ তিন জনের মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে উদ্ধার তৎপরতা সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃষ্টি থামলে আবারো উদ্ধার তৎপরতা চালানো।


এদিকে,রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে গিয়ে ঘরবাড়িতে ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনদের আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন বিদ্যালয় ও সরকারী ভবনে ১৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে শিশু মহিলা পুরুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এ পর্ষন্ত এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ১৯জন আশ্রয় নিয়েছেন।


জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ ইফতিকার উদ্দীন আরাফাত জানান, রাঙামাটি শহরে ১৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ১৯শ জন লোক আশ্রয় নিয়েছেন। তবে কয়টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ জানাতে পারেননি। তার মতে ইতোমধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ কমিটি গঠন করা হয়েছে।


যুব রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির রাঙামাটির উপ প্রধান মোঃ সাইফূল আলম জানান, যুব রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে ঘটনার পর থেকে যুব রেড ক্রিসেন্টে থেকে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। তার মতে রাঙামাটি জেলায় মাটি চাপা পড়ে ১১০ জন নিহত হয়েছে বলে তার ধারনা। এর মধ্যে শুধু শহরে মারা গেছে ৭০ জন। নিখোজ রয়েছেন ৫০ জনেরও অধিক, আহত হয়েছে ৫৫ জন এবং আশ্রয়হীন হয়েছেন ৫শ জন। এর মধ্যে রাঙামাটি সদরে আড়াইশ হতে পারে।

 

এদিকে, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান জানান, রাঙামাটি শহরে পানি সরবরাহের যে অনিশ্চিত অবস্থা বিরাজ করছে তা নিরসনের জন্য ইতোমধ্যে চট্টগ্রামসিটি কর্পোরেশন ও অন্য সূত্র থেকে দুটি উচ্চ শক্তির জেনারেটর রাঙামাটিতে ুিনয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে কাপ্তাই থেকে নদী পথে জেনারেটর দুটি রাঙামাটিতে এসে পৌছবে। তিনি আরো জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিত লোকজনের মধ্যে তিন বেলা খাবারের বিষয়টি জেলা প্রশাসনের একজন করে ম্যাজিষ্ট্রেট এবং রাঙামাটি পৌর সভার একজন পৌর কাউন্সিলের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে সরকারের প্রেরিত ৩৫ লক্ষ টাকা মৃতদেও আত্বীয় স্বজন এবং আহতদেও হাতে হাতে প্রদানের কাজও এগিয়ে চলেছে। তবে পূর্নবাসনের জন্য ঘোষিত ৫শ বান্ডিল ঢেউ টিনের সরবরাহ রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে পৌছাতে দেরী হচ্ছে। তবে ২শ মেঃটন খাদ্য শস্য ইতোমধ্যে জেলা ত্রাণ কর্মকর্তার মাধ্যমে আক্রান্ত এলাকায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিতরনের কাজ চলছে।


জেলা প্রশাসক জানান, বাংলাদেশ টেলিভিশন রাঙামাটির কেন্দ্রের ভবনে আশ্রিত লোকজনদের রাঙামাটি সরকারী কলেজে স্থান্তান্তরের উদ্যোগে ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে। কেন না টেলিভিশন ভবনের চারিপাশে ভাঙ্গনের কারণে পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ এালাকাটি ঝুকি প্রবন হয়ে উঠেছে। তিনি এ কথাও নিশ্চিত করে বলেন যে গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দুই জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তার সাক্ষাৎ করে আগামী দুএক দিনের মধ্যে রাঙামাটি বিদ্যুৎ সরবারাহ নিশ্চিত করণের উদ্দ্যেগ নিচ্ছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। তিনি জানান, বিদ্যুৎ মন্ত্রাণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু আজ শুক্রবার রাঙামাটি সফরে আসছেন। অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বরকল উপজেলার একটি ইউনিয়ন ইতি মধ্যে পানির তলীয় যাওয়ার পর্যায়ে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ শুক্রবার রাঙামাটি সফরে আসছেন।


এদিকে, রাঙামাটিতে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে যে যান চলাচল বন্ধের অজু হাতে কাচা শাক সব্জি, ভোজ্যদ্রব্য প্রেট্রোল ও অন্যান্য তৈল জাতীয় দ্রব্যর মূল্য প্রায় দ্বিগুন হাওে বেড়েছে। ধারনা করা হচ্ছে চট্টগ্রাম রাঙামাটি সড়কের সংযোগ সৃষ্টিতে যতই দেরী হবে দ্রব্য মূল্যর হার ততই বৃদ্ধি পেতে থাকবে। 

 

অপরদিকে তিন দিন ধরে বিদ্যূৎ না থাকায় চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। রাতে পুরো  অন্ধকারে ডুবে থাকছে।   


ভূক্তভোগীদেও অভিয়েযাগ ৯০ টাকার অকটেন ২শ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া ২০ টাকার আলু ৪০ থেকে ৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত