বড় বোন জুই মনি ছোট বোন জুমজুমিকে আকঁড়ে ধরেছে আবার স্নেহময়ী মা রুপালী তার দু্ই সন্তানকে ধরে রেখেছেন। নিষ্ঠুর প্রকৃতির এই তান্ডবলীলায় তারা মৃত্যু কাছে আলিঙ্গন করেছে, কিন্তু তাদেরকে আলাদা করতে পারেনি পারিবারিক দৃঢ় বন্ধন থেকে।
পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে নোয়াখালীর পুলিশ লাইনে কর্মরত সুভাষ চাকমার নিহত স্ত্রী রুপালী চাকমা(৩৫), বড় মেয়ে জুই মনি চাকমা(১৪) ও ছোট মেয়ে জুমজুমি(৪) এর মৃতদেহ উদ্ধারের সময় সেদিন এমন দৃশ্য অবতারনা হয়। এসময় সেখানে থাকা অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি, এমন মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে।
গেল ১৩ জুন টানা বর্ষনে ভারী বর্ষনে মাটি চাপা পড়ে রাঙামাটি শহরের ভেদভেদীর যুব উন্নয়ন বোর্ড এলাকায় রুপালী চাকমা,জুই মনি চাকমা ও জুমজুমি চাকমা নিখোজ হয়। পরদিন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্থানীয় লোকজনদের সাথে নিয়ে দীর্ঘ তিন ঘন্টা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে তিন জনের নিতর দেহ উদ্ধার করে।
এর আগে গেল ১৩ জুন একই পরিবারের রামু সেনা নিবাসে কর্পোরাল পদে কর্মরত জীবন মিত্র চাকমার স্ত্রী সোনালী চাকমা ও তার দশ বছরের ছেলে অমিয় চাকমার লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন।
নিহত রুপালী চাকমা ও সোনালী চাকমা সম্পর্কের আপন বোন। পাশাপাশি বাড়ীতে তাদের বসবাস। পুলিশ সদস্য সুভাষ চাকমা তার স্ত্রী সোনালী চাকমা ও দুই মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
উদ্ধার কাজে তৎপরতায় অংশ নেয়া ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার দিদার জানান, তিন জনের নিখোজ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ও স্থানীয় লোকজন দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা তৎপরতা চালিয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
জীবন মিত্র চাকমা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ঘটনার কথা শুনে গেল ১৩ জুন রাঙামাটিতে অাসেন। এসে দেখতে পান তার স্ত্রী ও সন্তান অার নেই। আর তার ভাইরা সুভাষ চাকমার স্ত্রী ও দুই মেয়ে মাটি চাপা পড়ে নিখোঁজ রয়েছে।
সুভাষ চাকমার ছোট ভাই অন্তত চাকমা জানান, তার ভাবী ও দুই বাচ্চার মৃত দেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন। এ ঘটনাটি খুবই বেদনা দায়ক। যা মেনে নেওয়া যায় না। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হারিয়ে এখন তার বড় ভাই এখন পাগল প্রায়।
তিনি আরো জানান, তার বড় ভাইয়ের দুই মেয়ে খুবই আদরের ছিল। ভাইয়ের বড় মেয়ে জুই মনি লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের সপ্তম শ্রেনীতে পড়তো।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.