রাঙামাটি আসনের সাংসদ উষাতন তালুকদার সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে এলাকায় সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি লংগদুর অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল উল্লেখ বলেন, পাহাড়ের সাধারণ মানুষ শান্তি প্রিয়। তারা ঝামেলার মধ্যে থাকতে চায় না। কিছু মানুষ ষড়যন্ত্র করে পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টি করে। এদের ষড়যন্ত্রের বলি হয় সাধারণ খেতে খাওয়া মানুষ।
মঙ্গলবার রাঙামাটির লংগদুতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রি ক্রয়ের অর্থ বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
লংগদু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্থ বিতরণকালে এসময় লংগদু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন, আটারক ছড়া ইউপি চেয়ারম্যান মঙ্গল কান্তি চাকমা, লংগদু সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়েল প্রধান শিক্ষক বৃষক কুমার চাকমা, লংগদু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবি রঞ্জন চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ২৫৮ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের জন্য নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়। এরমধ্যে কলেজ পড়–য়া ৩৬ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যেকে প্রত্যককে ৪ হাজার, মাধ্যমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া ১৩০ শিক্ষার্থীদের প্রত্যককে ৩ হাজার এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়–য়া ৯২ জন শিক্ষার্থীদের ২ হাজার করে টাকা বিতরণ করা হয়।
লংগদুর ঘটনাটি পরিকল্পিত উল্লেখ করে উষাতন তালুকদার এমপি আরো বলেন বলেন, নুরুল ইসলাম নয়নের মৃত্যুতে যখন লংগদুর মানুষ শোকাহত তখন কিছু মানুষ ষড়যন্ত্র করে পাহাড়িদের গ্রামে প্রবেশ করে একের পর এক ঘর পুড়িয়ে দেয়। ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল।
তিনি বলেন প্রতিবাদে মিছিল হবে কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা পেট্রোল, অকটেনসহ মিছিলে যোগ দেয়। নিজেরাই গুজব ছড়িয়ে পাহাড়িদের ঘরে আগুন দেয়। অথচ পাহাড়িরা বাঙালীদের কোন ঘরে আগুন দেয়নি। মিছিলে গুজব ছড়ানো হয় পাহাড়িরা বাঙালীদের ঘরে আগুন আগুন দেয়। অথচ পাহাড়িরা-বাঙালীদের কোন ঘরে আগুন দেয়নি। মিছিলে গুজব ছড়ানো হয় পাহাড়িরা বাঙালীদের ঘরে আগুন দিচ্ছে।
তিনি লংগদু ঘটনার প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানিয়ে বলেন, এ ঘটনায় দোষীদের যথাযথ শাস্তি দেয়া না হলে ভবিষ্যতে আবারও এ ধরনের ঘটনার সম্ভাবনা ঘটার আশংকা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য ,গেল ১ জুন দিঘীনালা-খাগড়াছড়ি সড়কের খাগড়াছড়ি সদর থানার চার মাইল এলাকায় স্থানীয় যুবলীগ নেতা মোঃ নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ পাওয়া যায়। তিনি মোটর সাইকেলে ভাড়ায় যাত্রী নিয়ে লংগদু থেকে খাগড়াছড়ি গিয়েছিল। পর দিন ২ জুন সকালে লংগদুর বাত্যাপাড়ায় আনা হলে এ লাশ নিয়ে বাত্যা পাড়া থেকে লংগদু সদর পর্যন্ত শোক মিছিল বের করে বাঙালীরা। এ মিছিলটি আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা তিনটিলা পাড়ায় আসলে গুজব ছড়িয়ে আদিবাসীদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ শুরু করেন কিছু অশৃঙ্খল বাঙালী। এই ঘটনায় চার গ্রামের প্রায় ২২৪টি আদিবাসী ঘর পুড়ে যায়। লংগদু ইউপি চেয়ারম্যানের ঘরের ভেতরে আগুনে পুড়ে মারা যান গুণমালা চাকমা নামে এক বৃদ্ধা।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.