শাসকগোষ্ঠীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে একটা বৃহত্তম কারাগারে পরিণত করেছে--সন্তু লারমা

Published: 15 Sep 2017   Friday   

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, পার্বত্যাঞ্চলে নানান ধরনের জুম্ম স্বার্থ বিরোধী ষড়যন্ত্র অপতৎপরতা বিরাজমান রয়েছে। পার্বত্যাঞ্চলে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের কারণে জুম্ম জনগণ অতিদ্রুত সংখ্যালঘুতে পরিণত হচ্ছে। এখানে ১৯০০ সালের শাসন বিধি অনুযায়ী ডেপুটি কমিশনার ও পুলিশ সুপার পার্বত্য চুক্তিকে প্রতিনিয়ত লংঘন করে এ অঞ্চলের মানুষের উপর সেই ব্রিটিশদের দেয়া উপরেশিক শাসন নিপীড়ন আব্যাহত রেখে তথাকথিত দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।


সরকারের শাসকগোষ্ঠীরা পার্বত্য চট্টগ্রাম নামে একটা বৃহত্তম কারাগারে পরিণত করেছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে যারা বসবাস করছে তাদের বুক ফুলিয়ে হাটার পরিবশে নেই, তারা তাদের ইচ্ছা আকাংখার কথা তুলে ধরতে পারে না। চতুর্থদিকে নিষ্পেষিত অবস্থায় প্রতিটি মহুর্ত তারা সুষ্ঠভাবে শ্বাস ও নিঃশ্বাস ফেলতে পারে না। শ্বাসরুদ্ধকর বাস্তবতায় বসবাস করতে হচ্ছে।


শুক্রবার রাঙামাটিতে সাবেক সাংসদ প্রয়াত মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার(এমএন লারমা) ৭৮ তম জন্ম দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।


জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা শাথার সাধারন সম্পাদক সুবর্ণ চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন আদিবাসী ফোরামের পার্বত্যাঞ্চল শাখার সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক কল্পনা চাকমা। বক্তব্যে দেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক সুমন মারমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির নেতা অরুন ত্রিপুরা। আলোচনা সভা শেষে সাবেক সাংসদ প্রয়াত মানবন্দ্রে নারায়ন লারমার ৭৮ তম জন্ম দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরুস্কার তুলে দেন অতিথিরা।


সন্তু লারমা তার বক্তব্যে আরো বলেন, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে শাসকগোষ্ঠী তথা আওয়ামীলীগ দলীয় শাখা অফিসে পরিণত হয়েছে। এ অঞ্চলের পাহাড়ী-বাঙালী মানুষের যে অধিকার জেলা পরিষদের আইনে রয়েছে সেগুলো তারা ভোগ ও জীবনে প্রয়োগ করতে পারছে না। সেখানে শাসকগোষ্ঠীরা নীল নক্সা বাস্তবায়নে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ তথা কথিত রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব নামে যে ভূমিকা পালন করছে তা নিঃসন্দেহে জুম্ম জনগনের অস্তিত্বকে বিলুপ্তি করার ষড়যন্ত্র।


তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী ভূমির অধিকার দেয়ার কথা থাকলেও শাসকগোষ্ঠী সেই অধিকার জেলা পরিষদের মাধ্যমে এখনো ফিরিয়ে দেয়নি।


তিনি পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষে সবাইকে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে অধিকরতর আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় প্রয়াত এমএন লারমার জীবন ও রাজনৈতি সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের মেহনতী মানুষের অধিকারের পক্ষে কথা বলা এমএন লারমার প্রতিনিধিত্বশীল আচরণ এদেশের সাংসদসহ ও রাজনীতি অঙ্গনের তা বিরল। তিনি শুধু মেহনতি মানুষসহ সকল শ্রেনীর কথা বলতেন। 


তিনি আরো বলেন, প্রয়াত এমএন লারমা যদি বেচে থাকেন আদিবাসী অধিকারের তাত্তিক ও ব্যবহারিক প্লাটফরম থেকে জুম্ম ও অন্যান্য আদিবাসীদের অধিকারের জন্য লড়ে যেতেন নেতৃত্ব দিতেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত