বরকলে আইন-শৃংখলা ও উন্নয়ন সমন্বয় সভা বর্জন ভাইস-চেয়ারম্যান ও চার ইউপি চেয়ারম্যানদের

Published: 21 Sep 2017   Thursday   

রাঙামাটির বরকল উপজেলায় বৃহষ্পতিবার উপজেলা প্রশাসনের মাসিক আইন শৃংখলা ও উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন সমন্বয় সভা বর্জন করেছেন উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস- চেয়ারম্যান ও চার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

 

অবৈধ ও বেআইনীভাবে নির্বাচিত হওয়া ভুষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মামুনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উপজেলার ভাইস-চেয়ারম্যান ও চার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা এসব সভা বর্জন করেন।


জানা যায়,গেল কয়েক মাস ধরে সুবলং,বরকল সদর,আইমাছড়া ও বড়হরিণা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা তিনবার ও উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যানরা দুবার মাসিক আইন শৃংখলা সভা ও মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভা বর্জন করে আসছেন। বৃহষ্পতিবার আয়োজিত উপজেলা প্রশাসনের মাসিক আইন শৃংখলা ও উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন সমন্বয় সভা বর্জন করেন তারা।


সুবলং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরুন জ্যোতি চাকমা ও বড়হরিণা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিলাময় চাকমা বরকল সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কমলেন্দু বিকাশ চাকমা ও আইমাছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অমর কুমার চাকমা জানান, ২০১৬ সালের ৪জুন উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মামুনুর রশিদ মামুনের লোকজনদের দিয়ে ছোটহরিণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল করেন। ভোট দিতে আসা ভোটারদের মারধোর করে তাড়িয়ে দেয়। ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে ইচ্ছে মত সীল মেরে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসাবে জয়যুক্ত করেন। মামুনুর রশিদ মামুনের অবৈধ ও বেআইনীভাবে চেয়ারম্যান হওয়ার বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে।


তার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী দিলিপ কুমার চাকমা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক কর্মকর্তা মোঃ আবদুল বাতেন কে নিয়ে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে সরেজমিনে তদন্ত করেন নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল বাতেন। তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত রির্পোট দাখিল না করার আগে মামুনুর রশিদ মামুনের পক্ষে নির্বাচন কমিশন তাড়াহুড়ো করে গেজেট প্রকাশ করে।


তারা আরো জানান, ভুষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ও ১২জন সদস্য রয়েছে। তার মধ্যে ৭জন নির্বাচিত সদস্য মামুনুর রশিদ মামুনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে শপথ গ্রহন করেননি।


চেয়ারম্যানদের অভিযোগ ইউনিয়ন পরিষদ আইনের ২৯ নং ধারার (২)নং উপ ধারায় চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম গেজেট প্রকাশের তারিখ হইতে পরবর্তী ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম সভা করতে হবে। সেই সভার তারিখ থেকে ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচ বছরের মেয়াদ গননা করা হবে। কিন্তু সভা করতে পারেননি। এছাড়াও (৪)নং উপ ধারায় উল্লেখ রয়েছে “ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষে নির্বাচনের পর উহার তিন-চতুর্থাংশ সদস্য শপথ গ্রহন করিলে ইউনিয়নটি যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গন্য হইবে।” কিন্তু ওই ইউনিয়ন পরিষদে ১২ জন সদস্যর মধ্যে ৭ জন সদস্য শপথ গ্রহন না করায় পরিষদটি অর্কাযকর পরিষদে পরিণত হয়েছে। ফলে ইউনিয়ন পরিষদের বিধানাবলী সাপেক্ষে মামুনুর রশিদ মামুনের চেয়ারম্যান পদটি আইন সংগত নয়। তাই অবৈধ ও বেআইনী ভাবে নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধির সাথে বসে উপজেলার আইন শৃংখলা,উন্নয়ন সমন্বয় সভাসহ সকল সভা করা সম্ভব নয়।


বরকল উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান বিধান চাকমা ইউনিয়ন পরিষদ আইনের ২৯ নং ধারার (৪) উপ ধারায় ৭জন সদস্য শপথ গ্রহন না করায় সেই উপ-ধারাটি যেমনি পরিপুরন হয়নি তেমনি ইউনিয়নটি অর্কাযকর পরিষদে পরিনত হয়েছে।


এ ব্যাপারে ভুষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মামুন জানান,আইনগতভাবে তিনি গেজেট ভুক্ত নির্বাচিত বৈধ চেয়ারম্যান। তাকে অবৈধ চেয়ারম্যান বলার কোন সুযোগ নেই। যেসব চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন তারা প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে এসব করছেন। যেহেতু তারা সবাই জেএসএস এর সমর্থিত চেয়ারম্যান।


এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া পারভীন ইউপি চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যানরা সভা বর্জনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে উপজেলার আইন শৃংখলার সভা উন্নয়ন সমন্বয় সভা সহ অন্যান্য সভা করা ও সিদ্ধান্ত নেয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে মৌখিক ও লিখিত ভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত