বিদ্যুৎ ভোগান্তিতে অতিষ্ঠ রাঙামাটিবাসি

Published: 10 Oct 2017   Tuesday   

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সর্বোচ্চ রেকর্ড উৎপাদন ছিল ২৪২ মেগাওয়াট। অথচ একই সময়ে এখন উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১২৫ মেগাওয়াট। উৎপাদনের এই ফারাকে ভরা মৌসুমেও লাগাতার বিদ্যুৎ ভোগান্তিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে রাঙামাটিবাসি। 

 

দীর্ঘদিন ধরে সঞ্চালন লাইন সংস্কার না হওয়ায় ত্রুটি অপসারণ ও পুনঃসংযোগ স্থাপনে দেখা দিচ্ছে নানান সমস্যা। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে লোডশেডিং। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবন। তবে এই সংকটের জন্য ১টি ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ আর বৃষ্টি ও বজ্রপাতকেই দায়ি করছেন বিদ্যুৎ বিভাগ।


টানা বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এই সময়কে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ভরা মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই হ্রদে পানি ধরে রেখেছে পানিবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এতে হ্রদবেবেষ্টিত রাঙামাটি শহর ও বেশ কয়েকটি উপজেলায় বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে ডুবে রয়েছে।


জলজটে জনদুর্ভোগের সাথে বিদ্যুৎ ভোগান্তিতে জনমনে ক্রমশ বাড়ছে ক্ষোভ। বসতবাড়ি ডুবে যাওয়া রসুলপুরের বাসিন্দা রাসেল আহমদ(৪৮) বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে হ্রদে পানি আটকে জনদুর্ভোগ বাড়ানো হয়েছে। অথচ বিদ্যুৎ ভোগান্তি বন্ধের নাম নেই। শহরের বনরুপা এলাকার ব্যবসায়ী কাজল দে(৫০) বলেন, ভরা মৌসুমেও যদি লোডশেডিং চলতে থাকে তাহলে গরমের মৌসুমে কিভাবে বাঁচবো?


রাঙামাটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা গৃহবধু সাফিয়া বেগম (৪৫) বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে অসহনীয় গরমে প্রাণ বেড়িয়ে যেতে চায়। রাঙামাটি সরকারি কলেজের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থি সাদিয়া মুন বলেন, দিনেরাতে প্রায় সময় বিদ্যুৎ থাকে না।


রাঙামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, কাপ্তাই লেকে পানি বাড়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ার কথা। তারপরও লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট থামছেনা। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে না পারলে পানি ধরে রেখে জনদুর্ভোগ বাড়ানো হচ্ছে কার স্বার্থে।


রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষকে বাস্তুচ্যুত করে কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প স্থাপন করা হয়েছে। অথচ এ বিদ্যুৎ সারা দেশকে আলোকিত করলেও ‘বাতির নিচে অন্ধকারে রাখা’ হচ্ছে রাঙামাটিকে।


কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী সমর তালুকদার জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটির মধ্যে চারটি ইউনিট থেকে ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ৫ নম্বর ইউনিট বিকল থাকায় আরও ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে।


রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার দাবী করেন, সাম্প্রতিক বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে বিঘ্ন ঘটছে। ধারণক্ষমতার বেশি লোডও সংকটের অন্যতম কারণ। তবে পুরনো এ লাইনটি সংস্কার হলেই সমস্যা কমে যাবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত