সহকারী শিক্ষকদের বেতন-স্কেল নির্ধারণের দাবীতে রাঙামাটিতে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের সংবাদ সম্মেলন

Published: 15 Dec 2017   Friday   

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পরের গ্রেডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতন-স্কেল নির্ধারণের দাবীতে শুক্রবার রাঙামাটিতে সংবাদ সন্মেলন করেছে প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক সমিতি জেলা কমিটি।

 

সংবাদ সন্মেলনে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পরের ধাপে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারি শিক্ষকদের বেতনস্কেল নির্ধারণ  আগামী ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে এ দাবী বাস্তবায়ন করা না হলে  আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশনের কর্মসূচি ঘোষণা দেন।

 

রাঙামাটি প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক সমিতির জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক বিমলেন্দু চাকমা। বক্তব্যে দেন প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক সমিতির জেলা শাখার আহ্বায়ক দীপু গ্রীং লেপচা, সদস্য সচিব লোকমান হোসেন। এসময়  সমিতির রাঙামাটি সদর উপজেলা শাখার সভাপতি সুমনা চাকমা, বরকল উপজেলা শাখার সভাপতি মিলিন্দ চাকমা, লংগদু উপজেলা শাখার সভাপতি সুমিত্র চাকমা, বিলাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি রীনা চাকমা, নানিয়ারচর উপজেলা শাখার শহিদুল ইসলাম, রাজস্থলী উপজেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক বিপ্লব বিকাশ ত্রিপুরা  প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

সংবাদ সন্মেলনে বলা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষকদের জীবনমান ও আত্মমর্যাদা বৃদ্ধিকল্পে আমরা চাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের কেবলই পরের ধাপে নির্ধারণ। তাই এই মহুর্তে সরকারের প্রতি একটাই দাবী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কেবলই পরের গ্রেডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকের বেতন স্কেল নির্ধারণ করা। একইভাবে প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষকের পরের গ্রেডে প্রশিক্ষণবিহীন সহকারী শিক্ষকের বেতন স্কেল নির্ধারণ করে প্রধান শিক্ষকদের সাথে সহকারী শিক্ষকদের বিদ্যমান চরম বেতন বৈষম্য নিরসন করা।

 

সংবাদ সন্মেলনে প্রধান শিক্ষক পদে সরাসরি নিয়োগ বন্ধ করে সহকারী শিক্ষক পদ কে এন্ট্রিপদ ধরে সকল আর্থিক সুবিধাসহ যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে মহাপরিচালক পদ পর্যন্ত শতভাগ বিভাগীয়  পদোন্নতির সুযোগ প্রদান, প্রাথমিক ডিপার্টমেন্ট কে নন-ভ্যাকেশনাল ডিপার্টমেন্ট হিসেবে ঘোষণা করে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য অর্জিত ছুটির বিধান প্রণয়ন করা ও বিদ্যালয় সময়সূচি সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা নির্ধারণ করার দাবী করা হয়।

 

সংবাদ সন্মেলনে আরো বলা হয়, ২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষকদের সাথে সহকারী শিক্ষকদের তিন ধাপ বেতন বৈষম্য ও পদমর্যাদা বৈষম্য সৃষ্টি হওয়ার পর আমরা সহকারী শিক্ষকরা এই বৈষম্য নিরসনের জন্য  প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে বার বার সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, শিক্ষক সমাবেশ, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে  প্রতীকি অনশন, স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে।  প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালকগণের সাথে দফায় দফায় বৈঠক  করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর সাথে কম করে হলেও ৫০বার দেখা করে দাবী পেশ করা হয়েছে। এছাড়া অর্থমন্ত্রীর সাথে অর্থমন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বৈষম্যগুলো তুলে ধরা হয়েছে। তারা সবাই বলেছেন বৈষম্য বিরাজমান এবং তা সমাধান কররা। কিন্তু চার বছর পার হলেও কোন সমাধান নেই। সর্বশেষ ২০১৭ সালে ২৩ মার্চ থেকে ৩০ মার্চের মধ্যে সারা দেশের ৬৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ প্রতি সহকারী শিক্ষক একটি করে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার  পোষ্টকার্ডের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে দাবীগুলো প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু এসব খোলা চিঠি প্রধানমন্ত্রীর হাতে পৌঁছেছেন কিনা বা  প্রধানমন্ত্রী আদৌ অবগত হয়েছেন কিনা তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। এসব দাবী দাওয়া নিয়ে বিগত চার বছরে আন্দোলনের পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে দফায় দফায় বৈঠক হলেও আশ্বাস ছাড়া কিছুই পায়নি সহকারী শিক্ষকরা। তাই এই মুহুর্তে সংগঠনের পক্ষ থেকে কঠোর কর্মসূচী পালন করা ছাড়া কোন  বিকল্প নেই।

 

সংবাদ সন্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এবারের  শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবী নিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনায় বসবেন এবং বেতন বৈষম্য নিরসন করবেন আশা প্রকাশ করে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ এই সংবাদ সন্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বেতন বৈষম্য নিরসনে দ্রুত সাক্ষাতের আবেদন জানান।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত