শান্তি চুক্তির কারণে পার্বত্য এলাকায় শান্তি ফিরে এসেছে-পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী

Published: 19 Jan 2018   Friday   

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহার উশৈসিং এমপি বলেছেন, শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের কারণে পার্বত্য এলাকায় শান্তি ফিরে এসেছে। শান্তি চুক্তির কারণে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। শান্তি চুক্তি যখন পুরিপূর্ন বাস্তবায়ন হবে তখন এলাকায় আরো শান্তি ও উন্নয়ন হবে। 

 

তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬-৯৭ সালের আগে এরকম বড় বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা সভা আয়োজনের জন্য জীবনে স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। তখন এ সমস্যা ওই সমস্যা থাকতো। কিন্ত শান্তি চুক্তির কারণে এখন বড় বড় সমাবেশ ও ধর্ম সভা আমরা করতে পারছি।


তিনি বলেন, বুদ্ধ ধর্ম জ্ঞানের ধর্ম। জ্ঞান ও নৈতিকতা যদি না থাকে সে বুদ্ধ জাতি হতে পারে না। ভগবান বুদ্ধ মানুষকে কোন দিকে নিয়ে যাবে সেই পথ দেখিয়েছেন। তিনি বুদ্ধের সর্দ্ধম, ধর্মের দিকনির্শেনা পালন করে দেশ জাতির উন্নয়নের এগিয়ে আসার জন্য বুদ্ধ জাতিকে আহ্বান জানান।


শুক্রবার রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙালহালিয়ার আর্ন্তজাতিক নন্দবংশ আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের পরিচালক শ্রীমৎ নন্দবংশ-কে থেরো থেকে মহাথেরো বরণ অনুষ্ঠান প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

আর্ন্তজাতিক নন্দবংশ আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র প্রাঙ্গনে আয়োজিত মহাথেরো বরণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের উপ-সংঘ নায়ক শ্রীমৎ বনশ্রী মহাথেরোর সভাপতিত্বে ধর্ম দেশনা দেন রাজনিকায় এর ৬ষ্ঠ সংঘনায়ক উ ঞানা ওয়াইনসা মহাথেরো, খৈয়াখালী ধম্মবিজয়ারাম বিহারের পরিচালক উ প্ঞ্ঞা মহাথেরো, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার মহাসচিব ভদন্ত বোধিমিত্র মহাথেরো, মহাথেরোর বরণকৃত শ্রীমৎ নন্দবংশ মহাথেরো প্রমুখ।

 

অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সহ-সভাপতি প্রমথ বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের মহাসচিব ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, সহ-সভাপতি পিআর বড়ুয়া, রনজিত বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের যুগ্ন মহাসচিব প্রফেসর ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, দেবপ্রিয় বড়ুয়া,রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উথিনসিন মারমা, রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য অংসুই প্রু চৌধুরী প্রমুখ। বরণ উৎসব অনুষ্ঠানের শেষ কয়েক হাজার বৌদ্ধ নারী-পুরুষ অংশ গ্রহন করেন।


এর আগে নন্দ বংশ থেরো থেকে মহাথেরো বরণ উপলক্ষে কর্ম বাক্য পাঠ করেন ভিক্ষু সংঘরা। হয়। পরে বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের উপ-সংঘ নায়ক শ্রীমৎ বনশ্রী মহাথেরোর নন্দ বংশ থেরো থেকে মহাথেরো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষনা করেন। এছাড়া এ উপলক্ষে নন্দবংশ স্মারক গ্রন্থটি প্রতিমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন প্রকাশনা উপ-পরিষদের চেয়ারম্যান  ধর্মবিরীয় থেরো।


অনুষ্ঠানে প্রথম দিনে গেল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে বুদ্ধ পূজা, উপগুপ্ত মহাথেরো পূজা,অষ্টপরিস্কারসহ সংঘদান ও সদ্ধর্ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধক ছিলেন রমতিয়া জনকল্যাণ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সমধোনন্দ মহাথেরো। সদ্ধর্ম সভায়  প্রধান অতিথি ছিলেন নাইক্যাছড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উ খেমাচারা মহাথেরো। প্রধান ধর্মদেশক ছিলেন পাচখাইন শান্তিকুঞ্জ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ প্রিয়দর্শী মহাথেরো।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর বাহরদুর বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। রাষ্ট্রে যে যার যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে। তবে রাষ্ট্র হবে সবার। বৌদ্ধরা সুশিক্ষিত হয়ে দেশের,জাতির ও সমাজের জন্য এগিয়ে আসবেন।


তিনি আরো বলেন, ভগবান বুদ্ধ মৈত্রী ও অহিংসার কথা বলেছেন সমস্ত মানুষের মঙ্গল ও সুখের জন্য। তাই যারা বুদ্ধ জাতি রয়েছি তাদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়াতে হবে। ভগবান বুদ্ধ যে অহিংসা ও মৈত্রীর বাণী দেখিয়েছেন সেই পথ সবাইকে অনুসরণ করতে হবে।


সমতলের বুদ্ধ ও পাহাড়ের বুদ্ধ দু রকম হতে পারে না মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবাইকে বিভেদ ভুলে গিয়ে মৈত্রী ও সম্প্রীতি বাড়াতে হবে। এখানে সমতলের বুদ্ধ ও পাহাড়ের বুদ্ধের ভেদাভেদ করা ঠিক হবে না। কারণ আমরা সবাই মানুষ। আমরা যেখানে যাই সবাই বৌদ্ধ ধর্মালম্বী। তিনি মহাথেরো উৎসব অনুষ্ঠানের জন্য দুই লাখ টাকা অনুদানের ঘোষনা দেন।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত