চাকমা রাণী য়েন য়েন-এর উপর হামলার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে সংহতি সমাবেশ

Published: 19 Feb 2018   Monday   

চাকমা সার্কেলের রাণী য়েন য়েন-এর উপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার রাঙামাটিতে সংহতি সমাবেশ করেছে চাকমা সার্কেলের সাধারন প্রজাসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। 

 

চাকমা রাজ সার্কেল কার্যালয় চত্বরে আয়োজিত সংহতি সমাবেশে বক্তব্যে দেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার রাজা দেবাশীষ রায়, চাকমা রাণী য়েন য়েন, বোমাং সার্কেলের প্রতিনিধি চহ্লা প্রু জেমি, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগকি কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মংসানু চৌধুরী, মানবধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান, নারী নেত্রী ডনাই প্রু নেলী, নমিতা চাকমা, হেডম্যান অন্নসাধন চাকমা প্রমুখ।  সংহতি সমাবেশে বিভিন্ন দাবী-দাওয়ার ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে চাকমা সার্কেলের সাধারন প্রজা,হেডম্যান-কারবারীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কয়েক হাজার  লোকজন অংশ নেন।

 

সমাবেশে বক্তারা চাকমা রাণীর উপর আইন-শৃংখলা বাহিনীর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত  করে দোষীদের শাস্তির দাবী জানান। একই সাথে গেল ২৩ জানুয়ারী বিলাইছড়ি উপজেলার অরাছড়ি গ্রামে দুই মারমা তরুনীর উপর যৌন নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।

 

সংহতি সমাবেশে চাকমা রাজা দেবাশীষ রায় বলেন, এক বিন্দু রক্ত থাকতে আমরা আমাদের নায্য অধিকার আদায়ে কাজ করে যাবো। চাকমা রাজা, রাণী ও রাজ পরিবারকে মেরে ফেললেও  চাকমা জাতি জাতীকে মেরে ফেলতে পারবে না। তাই মরা গরুর বাঘকে আমরা ভয় করি না। গেল ১৫ জানুয়ারী রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চাকমা রানী য়েন য়েন ও  নারী ভলান্টিয়ারদের উপর ২০ থেকে ২৫ জন পুরুষ-নারী  একত্র হয়ে হামলা করেছে তাদের লজ্জা করে না?

 

চাকমা রাজা পার্বত্য চট্টগ্রামে আইনের শাসন নেই উল্লেখ আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমি খুবই শ্রদ্ধা করি এবং উনি আমার বড় বোন। তবে আজকের এই সংহতি সমাবেশে একটি পোষ্টারে দাবী করা হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ প্রধানমন্ত্রীর শাসন চায়, সেনাশাসন নয়। তাই দেশের সব জেলায় প্রধানমন্ত্রী হবেন পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাদ দিয়ে নয়। কারণ পার্বত্য চট্টগ্রাম  বাংলদেশেরই অংশ। এখানেও আইন শাসন ও গণতন্ত্র একই হতে হবে।  

 

চাকমা রাণী য়েন য়েন বলেন, আমার আর ভলাণ্টিয়ারদের উপর যারা হামলা করেছে তারা ভাবতে পারে জিতে গেছে। কিন্তু আমরা মার খেয়েছি বলে আমাদের এই লড়াই থামবে না, বরং মনোবল আরো বেশী করে বেড়েছে ও সুদৃঢ় হয়েছে। 

 

তিনি আরো বলেন, বিলাইছড়ি যে দুই বোন নির্যাতনের শিকার হয়েছে তার বিচার চেয়েছি। আমরা কোন রকম আইন লংঘন না করে আইন মেনে তার প্রতিকার চেয়েছি।

 

পার্বত্য নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, চাকমা রাণী উপর হামলা তার লজ্জা নয়, এ লজ্জা রাষ্ট্রের। আর সরকারের বিশেষ বাহিনী যদি মনে করে থাকে চাকমা রাণীর উপর হামলা হয়েছে তা নিয়ে আমরা চুপচাপ বসে থাকি তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে।

 

উল্লেখ্য,  ২৩ জানুয়ারী রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়ার ইউনিয়নের অরাছড়ি গ্রামে দুই মারমা তরুনীর একজনকে ধর্ষন ও অপরজনকে ধর্ষনের চেষ্টা করা হয় অভিযোগ করা হয়।  ঘটনার শিকার দুই তরুনীকে আইন-শৃংখলা বাহিনী কড়া প্রহরায় হাসপাতালের একটি কক্ষে  রাখা হয় এতদিন।  ঘটনার শিকার দুই তরুনীদের মানসিক মনোবল ফিরিয়ে আনার লক্ষে রাণী য়েন য়েন ও ভলাণ্টিয়াররা এতদিন তাদের সঙ্গ দিয়ে আসছিল। গেল ১৫ ফেব্রুয়ারী দুই তরুনীর সাথে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে অবস্থান করার সময় রাণী য়েন য়েন ও ভলাণ্টিয়াররা শারীরিকভাবে হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত