সারাদেশে শিক্ষার সামগ্রিক সংকট নিরসন ও জাতীয় বিদ্যালয়ের কনভেশনের আলোকে মঙ্গলবার রাঙামাটিতে এক মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে রাঙামাটি সদর উপজেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য ও শিক্ষাবিদ নিরূপা দেওয়ান। জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি অভিজিৎ বড়ুযার সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- প্রবীণ সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে, উন্নয়নকর্মী ললিত সি চাকমা, রাঙামাটি জেলা সিপিবির সদস্য আশীষ দাশ গুপ্ত, কমল দে, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সৈকত রঞ্জন চৌধুরী, জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সমন্বায়ক কলিন চাকমা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার সহ-সভাপতি সুমিত্র চাকমা প্রমুখ। সভায় বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ছাত্ররা অংশগ্রহণ করেন। এসময় শিক্ষার সংকট নিরসন ও যুগোপযোগি শিক্ষা ব্যবস্থার দাবিতে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে করা হয় ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে।
সভায় অংশ গ্রহনকারী বক্তারা বলেন, আজকের ছাত্ররা রাজনৈতিক দলের স্বার্থ হাছিলের মধ্য দিয়ে রাজনীতি করছে। আর এই পঁচাগলা সমাজ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা হচ্ছে। যার কারণে সমাজ প্রতিনিয়ত সাম্প্রদায়িকতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সমাজে শিক্ষা ব্যবস্থাও সাম্প্রদায়িকতায় রূপ নিচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই যারাই ক্ষমতায় গেছে তারা সবাই শিক্ষাকে নিয়ে ব্যবসা করেছে। বিজ্ঞান ভিত্তিক ব্যবহার বাড়লেও ধর্মীয় উন্মাদনার কারণে আজ বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা পিছিয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়েও দেখা গেছে ছাত্ররা যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করলেও রাজাকারের পদবীতে ভূষিত হচ্ছে, যা সত্যিই জাতির জন্য লজ্জার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য ও শিক্ষাবিদ নিরূপা দেওয়ান বলেন, শিক্ষার সংকট নিরসনে ছাত্র সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। শুধু টেবিলে বসে আলোচনা করলেই হবে না। শিক্ষার সংকট নিরসনে কাজ করতে হবে, ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করে যেতে হবে। ছাত্র সংসদই পারে ছাত্রদের শিক্ষার সংকট ও অধিকারের কথা তুলে ধরতে হবে। এজন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই।
প্রগতিশীল ছাত্ররা এক হয়ে কাজ না করলে প্রতিক্রিয়াশীলরা সুযোগ নিবে এমন মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, স্বার্ধবাদী সংগঠনগুলো এখন দলীয় পায়দা লুটছে, তারা নিজেদের সুযোগ নিচ্ছে। আমি মনে করি এক টেবিলে বসে ছাত্র সংগঠনগুলো কাজ করলে সব সংকট নিরসন সম্ভব।
তিনি বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে বানিজ্যিকরণ বেড়েই চলেছে। সাধারণ গরীব শিক্ষার্থীরা আজ অর্থের অভাবে শিক্ষার অধিকার পাচ্ছে না। শিক্ষা আজ দিনদিনই গরীবের নাগালের বাহিরে যাচ্ছে। সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যাপ্ত ক্লাসরুম, শিক্ষক সংকট, পরিবহন সংকটসহ নানাবিদ সংকটে জর্জরিত। ছাত্ররা এসব সংকট থেকে উত্তোরণের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.