লামায় অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলনের সময় মাটি চাপা পরে মোঃ জাহেদুল ইসলাম(১৫) নামের এক পাথর শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উপজেলা প্রশাসনের কাউকে না জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৭টার সময় নিহতের লাশ চকরিয়ার উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৪নং নয়াপাড়ায় এলাকায় তার বাড়ীর পাশে কবরস্থানে কবর দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৯নং ছমুখালের আগায় পাথর উত্তোলনের সময় বিকাল ৩টায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত পাথর শ্রমিক জাহেদুল ইসলাম (১৫) পার্শ্ববর্তী কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নয়াপাড়া এলাকার মোঃ ইলিয়াছের ছেলে, তার মাতার নাম হাসিনা আক্তার। নিহত জাহেদুল ইসলাম লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছমুখাল থেকে মোঃ আমির হোসেনের(৪৮) অবৈধ পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন কাজে শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী মোঃ আমির হোসেন চকরিয়ার উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ছায়রাখালী এলাকার মোঃআব্দুল গাফ্ফারের ছেলে।
নিহত জাহেদুলের মা হাসিনা আক্তার লামার ছমু খালের আগায় মোঃ আমীর হোসেনে পাথর কোয়ারীতে মাটি চাপা পরে নিহত হওয়ার কথা শিকার করে জানান, পরিবারের ভরণ পোষেনর জন্য নিরুপায় হয়ে তার বড় ছেলে জাহেদুলকে দৈনিক কাজে করতে হতো। কয়েকদিন আগে পাথর ব্যবসায়ী তাদের ইউনিয়নের ছাইরাখালী এলাকার মোঃ আমির হোসেনের লামার ছমু খালের আগায় তার পাথর কোয়ারীতে কাজ করতে যায়। বৃহস্প্রতিবার সন্ধ্যায় আমির হোসেনসহ এলাকার আরো কিছু ব্যাক্তি তার ছেলের মৃত লাশ নিয়ে এসে। তারা ঘন্টা খানেকের মধ্যেই বাড়ীর পাশে কবরস্থানে দাফন করার ব্যবস্থা করে।
এ ব্যাপারে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউপির ছমুখালের আগা থেকে পাথর উত্তোলনকারী মোঃ আমীর হোসেনের জানান, তিনি ফাঁসিয়াখালীর বনফুল এলাকার ছমুখালের আগা থেকে এলাকার কিছু মুরুং সম্প্রদায়ের ব্যক্তির কাছ থেকে পাথর ক্রয় করেন। তার কোন পাথর উত্তোলনের কোন কোয়ারী নেই। মাটি চাপা পড়ে কেউ মারা গেছে এমন কোন সংবাদ তিনি পায়নি।
চকরিয়ার উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য(মেম্বার) মোঃ নুরুলল কবির জানান, তার ওয়ার্ডের নয়াপাড়া এলাকার মোঃ ইলিয়াসের ছেলে মোঃ জাহেদুল ইসলামের(১৫) মৃতদেহ নিয়ে সন্ধ্যার পর ছায়রাখালী এলাকার আমির হোসেনসহ এলাকার কিছু ব্যক্তি তার নিয়ে আসে। এর এর আগে তাকে খবর দেয়। তিনি সাথে সাথে জাহেদুলের বাড়ীতে যান।বাড়ীতে গিয়ে দেখতে পান জাহেদুলের মরদেহ উঠানে পড়ে রয়েছে। পরে জানতে পারেন লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছমুখালের আগায় মোঃ আমির হোসেনের পাথর কোয়ারীতে কাজ করার সময় মাটি চাপা পড়ে মারা গেছে। পরে জাহেদুলের বাড়ীর পাশে কবরস্থানে জাহেদুলকে দাফন করা হয়।
ছমুখাল এলাকার ৯নং ওয়ার্ড ইউপি মেম্বার আপ্রুসিং মার্মা জানান, পাথর চাপা পড়ে নিহত ও আহতের সংবাদ শুনেছি। পাথর ব্যবসায়ীরা আইনী হয়রাণী এড়াতে লাশটি গোপনে নিয়ে যায় এবং রাতেই দাফন করে ফেলেছে।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেনি। তবে শুক্রবার সন্ধ্যায় এ খবরটি শুনেছেন। নিহত জাহেদুলের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
উল্যেখ্য, গেল ২৩ এপ্রিল লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের ডলুঝিরি এলাকায় রোহিঙ্গা মো. আজম নামে এক পাথর শ্রমিক নিহত হয়। বিগত ৩ মাসে উপজেলার গজালিয়া ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন পাথর কোয়ারীতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন পাথর শ্রমিক আহত হলেও পাথর ব্যবসায়ীরার সিন্ডিকেট দলটি গোপন রেখেছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.