পলি ও ড্যাম নির্মাণের কারণে কাপ্তাই হ্রদে রুই জাতীয় মাছের উৎপাদন কমছে

Published: 18 Jul 2018   Wednesday   

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে বুধবার রাঙামাটিতে এক সংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

 

জেলা মৎস্য প্রশিক্ষণ হল রুমে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে বক্তব্যে দেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ইয়াসিন, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের রাঙামাটির ব্যবস্থাপক কমান্ডার আসাদুজ্জামান, মৎস্য গবেষনা ইনষ্টিটিউটের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজী বেলাল উদ্দীন।

 

সংবাদ সন্মেলনে জলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ইয়াসিন  বলেন,কাপ্তাই হ্রদ, পুকুর,ক্রীক,নদীসহ অন্যান্য চাষকৃত জলাশয় থেকে গেল ১৬-১৭ অর্থ বছরে রাঙামাটি জেলায় ১২ হাজার ৬৭ মেট্রিকটন মাছ উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র কাপ্তাই হ্রদ থেকে ৮ হাজার ৪২১ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন করা হয়েছে।

 

তিনি আরো বলেন, জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার র‌্যালী ও শুক্রবার জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

 

মৎস্য গবেষনা ইনষ্টিটিউটের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজী বেলাল উদ্দীন বলেন, কাপ্তাই হ্রদে বানিজ্যিক রুই জাতীয় মাছের উৎপাদন ৮১ শতাংশ  থেকে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে হ্রদে  ছোট মাছ শতকরা ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে গিয়ে ৯২ শতাংশে পৌছেছে।

 

তিনি আরো বলেন, কাপ্তাই হ্রদে এক সময় ৭৫ প্রজাতির মাছের ছিল।  তিনি আরো বরেন, কাচালং চ্যানেলের মাইনিমুখ, বরকল চ্যানেলের জগন্নাথছড়ি, চেঙ্গী চ্য্যানেলের নানিয়ারচর এবং রাইখ্যং চ্যানেলের বিলাইছড়ি এলাকা রয়েছে। ইতোমধ্যে দুটি চ্যানেলের মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এর মধ্যে চেঙ্গী চ্যানেলে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায় রাবার ড্যাম নির্মানের কারণে পানির প্রবাহ আশংকাজনক হারে হ্রাসে পেয়েছে এবং ওই চ্যানেলের বিভিন্ন জায়গায় পানি শুকিয়ে চর জেগে উঠেছে। রাইখ্যং চ্যানেলে পলি জমে চ্যানেলের গভীরতা হ্রাম পেয়েছে এবং কিছু কিছু জায়গায় প্রাক প্রজনন মৌসুমে পানির গভীরতা ২ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত হয়ে যায়। ফলে প্রাক প্রজনন মৌসুমে কার্প জাতীয় মাছ অভিপ্রায়ণ করতে পারে না। এ জন্য হ্রদে রুই জাতীয় মাছ কমে যাচ্ছে।

 

তিনি বলেন, ইতমদ্যে ৬ প্রজাতি সীলন, দেশী সরপুঁিট, ঘাউরা, বাঘাউড়, মোহিনী বাটা ও দেশী পাঙ্গাস হ্রদ থেকে বিলুপ্তি হয়ে গেছে। বিলুপ্তির পথে রয়েছে দেশী মহাশোল, মধু পাবদা, পোয়া, ফাইস্যা, তেলে গুলশা ও সাদা গুানয়া।  এছাড়া ক্রম হ্রাসমান মাছের মধ্যে রয়েছে রুই, কাতলা,মৃগেল,বাঁচা, পাতি পাবদা ও বড় চিতল। তবে তার বিপরীতে হ্রদে ছোট মাছের মধ্যে কেচকী, চাপিলা, কাঁটা মইল্যা, তেলাপিয়া, কালিবাউস, আইড়,বাটা, ফলি ও মলা মাছের সংখ্যা হ্রদে দিন দিন বেড়ে চলেছে।

 

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের রাঙামাটির ব্যবস্থাপক কমান্ডার আসাদুজ্জামান বলেন, কাপ্তাই হ্রদে খাচায় তেলাপিয়া, পাবদা মাছ চাষের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ২০টি খাচায় চাষের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সফল হলে কাপ্তাই হ্রদ থেকে শতকরা ২৫ ভাগ মাছ উৎপাদন সম্ভব হবে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত