শনিবার বান্দরবানে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে প্রায় শতাধিক বসতঘর পুড়ে ছাই হয়েছে। এসময় আগুন নেভাতে গিয়ে ৪ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস জানায়,শনিবার দুপুর ১টা দিকে বান্দরবান শহরের ৪নং ওয়ার্ডের মধ্যম পাড়ার মারমা পাড়ার বাজার শেড সংলগ্ন এলাকায় মৃদুল বড়ুয়ার বাসার রান্না ঘরের গ্যাসের চুলা থেকে এ আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এসময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দ্রুত আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পরে। আশপাশের বসতবাড়ী ও বাজার শেড আগুনে পুড়ে যায়। এতে বাজার শেডসহ শতাধিক বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন নেভাতে গিয়ে ৪ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। খবর পাওয়ার পর দমকল বাহিনী, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় জনতা প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের বেশিরভাগ ঘরবাড়ি বেড়া ও টিনের তৈরি। যার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পরে। নদীর ধারে ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ার কারণে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে ফায়ার সার্ভিস। আগুনে পুড়ে যাওয়া আধা কাঁচা-পাঁকা, বেড়া ও টিনের ঘর মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হবে বলে ক্ষতিগ্রস্থদের সূত্রে জানা গেছে। অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান বান্দরবান জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদারসহ উধ্বর্তন কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র পক্ষ থেকে আর্থিক ও ত্রাণ সহযোগিতা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মংচিং হ্লা মারমা জানান, স্থানীয় মৃদুল বড়ুয়ার স্ত্রী রান্নার করার জন্য চুলায় তেল গরম দেয়। এসময় মৃদুল বড়ুয়ার সাথে তার স্ত্রীর পারিবারিক কলহে জের ধরে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। ঝগড়া এক পর্যায়ে স্বামী-স্ত্রী একের অপরের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। এসময় রান্নার চুলার আগুনে তেল তীব্র গরম হয়ে আগুন ধরে গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হলে আগুনের সূত্রপাত ঘটে।
বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মোঃ ইকবাল হোসেন জানান আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সফল হই। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে আগুনে বাজার শেডসহ প্রায় শতাধিক বসত বাড়ি পুড়ে গেছে। আগুনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখনো বলা যাচ্ছে না।
পৌর মেয়র মো: ইসলাম বেবী জানান, অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। অগ্নিকান্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তালিকা তৈরি হওয়ার পর জানা যাবে বলে জানান। পৌরসভার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদেরকে আর্থিক সাহায্য প্রদানের কথা জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বান্দরবান ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের ভারপ্রাপ্ত ব্রিগেড কমান্ডার এস এম আব্দুল্লাহ আল আমিন, পিএসসি জানান, অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে তিনি দ্রুত পাঁচ প্লাটুন সেনা সদস্য ও দুই ইউনিট মেডিকেল টিম সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছেন। এসময় তিনি দমকল বাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় জনতার সহযোগিতা নিয়ে প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তিনি আরো জানান, আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের জন্য সেনাবাহিনী দুপুর ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা করেছে। সেনাবাহিনী পার্বত্য জেলা পরিষদের সমন্বয়ে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক সাহায্য প্রদানের কথা জানান তিনি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.