পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাহাড়ে নতুন করে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে

Published: 02 Dec 2018   Sunday   

পার্বত্য চুক্তির ২১তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির উদ্যোগে রোববার রাঙামাটিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

 

আলোচনা সভায় বক্তারা  সরকারের সদিচ্ছা না থাকায় ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার পার্বত্য চুক্তির পূর্নাঙ্গ বাস্তবায় হয়নি দীর্ঘ ২১ বছরেও। পার্বত্য  চুক্তি  বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাহাড়ে নতুন করে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে একটা সংকটময় অবস্থায় বিরাজ করছে, মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে চুক্তি বিরোধীরা।  বক্তারা চুক্তি বাস্তবায়নে গড়িমসি না করে চুক্তির পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নের  জন্যে সরকারের কাছে দাবী জানান। অন্যথায় সরকারকে তার খেসারত দিতে হবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।

 

জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভায় জনসংহতি সমিতির জেলা শাখার সহ-সাধারন সম্পাদক নতুন কুমার চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জনসংহতির সহ-সভাপতি ও রাঙামাটির সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গুণেন্দু বিকাশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অরুণ কান্তি চাকমা,সাংস্কৃতিক কর্মী শিশির চাকমা। বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি জুয়েল চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির নেতা অরুন ত্রিপুরা ও হিল ইউমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী রীনা চাকমা। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন জনসংহতি সমিতির বরকল উপজেলা নেতা শ্যাম রতন চাকমা।

 

আলোচনা সভায় বক্তারা পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে কালক্ষেপন করার অভিযোগে সরকারের তীব্র সমালোচনা করে আরো বলেন, সরকারের সদিচ্ছা না থাকায় এবং ভেতরে বাইরে নানা ষড়যন্ত্রের কারণে গত ২১ বছরেও পার্বত্য চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়িত হতে পারেনি। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদকে অথর্ব করে রাখা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সঙ্গে সংগতি বিধানকল্পে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রযোজ্য আইনগুলো সংশোধন করা হয়নি। উপরন্তু পার্বত্য অঞ্চলে জুম্ম জনগণের ওপর চলছে শাসকগোষ্ঠীর দমনপীড়ন, নির্যাতন, অবিচার। 

 

ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তারা  বলেন, শাসকগোষ্ঠীর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার, চরম দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দলীয়করণ, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের অসদিচ্ছা ও অনীহা, পার্বত্য চুক্তি ও জুম্ম স্বার্থবিরোধী সশস্ত্র সংগঠনগুলোর অত্যাচার ও ভূমি বেদখল, মিথ্যা মামলা, দমনপীড়নে আজ জুম্ম জনগণ গভীরভাবে শঙ্কিত।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উষাতন তালুকদার এমপি বলেন, সরকার চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলোর মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনের সাথে সঙ্গতি বিধানকল্পে পুলিশ এ্যাক্ট, পুলিশ রেগুলেশন ও ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ইত্যাদিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রযোজ্য অন্যান্য আইন সংশোধন করা হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্বলিত বিশেষ শাসনব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেনি।

 

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় একটা সংকটময় চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনসংহতি সমিতি সদিচ্ছা নিয়ে ও খোলা মন নিয়ে চুক্তি করেছে। কোন তৃতীয় পক্ষ ছাড়াই চুক্তি করা হয়েছে। তাই চুক্তি বাস্তবায়নে এখনো সময় আসে।  আমাদেরকে দুরে সরিয়ে দেবেন না। সময় পুড়িয়ে গেলে অনেক দুরে যাবে।

 

অপরদিকে পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২১ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে  পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য ডা. নীলু কুমার তঞ্চঙ্গ্যার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পরিষদের মুখ্যনির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্না চাকমা, সদস্য হাজি মো.কামাল উদ্দিন,বিশিষ্ট ব্যক্তি চাঁদ রায়, ইউসুফ আলম,সাধুরাম ত্রিপুরা প্রমুখ।তারা দ্রুত পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত