রাঙামাটিতে দুর্নীতির খবর প্রচার করায় সাংবাদিককে তলব,সাংবাদিকদের ক্ষোভ

Published: 31 Jul 2019   Wednesday   

দুর্নীতির খবর প্রচার করায় সাংবাদিককে তলব করেছে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক হাঁস মুরগী খামারের উপ পরিচালক ডা. মো. জাকের উল্লাহ।


তিনি বেসরকারী টিভি চ্যানেল ইনডিপেনডেন্টের রাঙামাটি প্রতিনিধি হিমেল চাকমাকে তদন্তের সময় আগামী ৪ আগষ্ট রাঙামাটি জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য তলব করেন।


প্রসঙ্গত গেল ১৯ জুলাই সরকারী ছুটির দিনে সকাল বেলা “রাঙামাটি সরকারী হাঁস প্রজনন কেন্দ্রে বেশী দামে হাঁস বিক্রি নিয়ে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে অনুসন্ধানমুলক সংবাদ প্রচার হয়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়। সংবাদ প্রচারের পর পরই অভিযুক্ত হাঁস খামারের হিসাব রক্ষক নজরুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

 

মো. জাকের উল্লাহ তার চিঠিতে লিখেন “হিমেল চাকমা, রিপোর্টার, ইনডিপেডেন্ট টেলিভিশন, আপনি ভিডিও নির্মাণে আপনার সহযোগী ও জৈনক গ্রামবাসী যার সাক্ষাৎকার আপনি নিয়েছিলেন তাদেরকে সহ নির্দিষ্ট তারিখে তদন্তে হাজির হবেন।
এ চিঠির প্রতিক্রিয়ায় তীব্র প্রতিবাদ ও তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন রাঙামাটির কর্মরত সাংবাদিকরা।


রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক, রাঙামাটি রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা, সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান রাজন, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. সোলায়মান, সাধারণ সম্পাদক হিমেল চাকমা, সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নন্দন দেবনাথ , সাধারণ সম্পাদক মিল্টন বাহাদুর এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, সাংবাদিক তাঁর কাজটি করেছে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটিতে পরিস্কার হয়েছে যে, সেদিন খামারে অনিয়ম হয়েছে। অতীতেও হয়েছিল। ঐ প্রতিবেদনটিতে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও হাঁস খামারের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক বরুন কুমার দত্ত ভিডিওতে অনিয়মের কথা স্বীকার করে ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা বলেছেন। এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে রাঙামাটির এ হাঁস খামারকে রক্ষা করা। কিন্তু সেটি না করে তদন্ত কর্মকর্তা. মো. জাকের উল্লাহ সাংবাদিক হিমেল চাকমাকে আপত্তিকর ভাষায় চিঠি লিখে তদন্তে উপস্থিত থাকতে তলব করেছে।


সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, জাকের উল্লাহ এভাবে আপত্তিকর ভাষায় চিঠি লিখতে পারেন না। সাক্ষাৎকারারীদের নিয়ে তদন্তে উপস্থিত হওয়া সাংবাদিকের কাজ নয়। বরং তিনি সাংবাদিকে সহযোগীতা চাইতে পারেন। এভাবে আপত্তিকর ভাষায় চিঠি লিখে তলব করতে পারেন না। এটি হিমেলের জন্য অপমানজনক নয় বরং পুরো সাংবাদিক সমাজকে অপমান করার সামীল। জাকের উল্লাহে মনে রাখা উচিত ঐ প্রতিবেদন প্রাণী সম্পদ বিভাগের মঙ্গলের জন্য হয়েছিল। দুর্নীতিগ্রস্তদের কবল থেকে রক্ষা করে খামারটি টিকিয়ে রাখতে এ প্রতিবেদনটি অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেটি অনুভব না করে জাকের উল্লাহ এক প্রকার সাংবাদিককে প্রতিপক্ষ বানিয়েছ। আপত্তিকর ভাষার জন্য ক্ষমা চেয়ে এ বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবী জানিয়েছেন জেলার সাংবাদিক নেতারা।

 

এদিকে রাঙামাটির প্রবীন সাংবাদিক দৈনিক গিরিদর্পন সম্পাদক একে এম মকছুদ আহমদ বলেন, উপ পরিচালক এভাবে তলব করতে পারেন না। সে ক্ষমতা তাকে কেউ দেয়নি। সুস্থ তদন্তের স্বার্থে বরং রিপোটার্রের সহযোগীতা নিতে পারেন। চাইতে পারে। আর সেটি না করে আপত্তিকর ভাষায় চিঠি লিখবে এ ক্ষমতা তাকে কে দিয়েছে? তলব করতে পারে না। জৈনক ব্যাক্তি আর রিপোর্টার সহযোগীকে নিতে বলাটি অপমান জনক। সাংবাদিক তার কাছে যেতে বাধ্য নয়। প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়েছে সেদিন অনিয়ম হয়েছিল। প্রতিবেদনে তো অভিযুক্তরা স্বীকারও করেন। ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা বলেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত