রাঙামাটিতে ৫৮ শতক জমির মালিকানা নিয়ে দুই দেওয়ানের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

Published: 16 Sep 2019   Monday   

রাঙামাটি শহরের কলেজ গেইট এলাকায় ৫৮শতক পৈত্রিক জমি নিজেদের দাবী করে সোমবার আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি প্রয়াত আওয়ামীলীগের নেত্রী সুদিপ্তা দেওয়ান ও ডা. একে দেওয়ানের পরিবার।

 

সংবাদ সন্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বিএনপি নেতা দীপেন  দেওয়ান ও তার গংরা তাদের জমিতে অবস্থিত কয়েকটি দোকান ভাংচুর ও  কোটি টাকার চাঁদা দাবী করেন, টাকা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন।

 

শহরের একটি রেস্টুরেন্টে  সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন ডা. একে দেওয়ানের ছোট ছেলে অদ্বিত দেওয়ান। এসময় ডা.একে দেওয়ানের মেয়ে অপরাজিতা দেওয়ান, জামাই অনিমেষ চাকমা, সুমিত দেওয়ান, উত্তম চাকমা,প্রীতম রায় উপস্থিত ছিলেন।

 

সংবাদ সম্মেলনে ডা.একে দেওয়ানের জামাতা অনিমেষ চাকমা বলেন, সুবিমল দেওয়ান তৎকালীন আমিন ও কানুনগোর যোগসাজশে ২ দশমিক ২২ একর জমির স্থায়ী বন্দোবস্তির রেকর্ডভূক্ত করিয়েছিলেন। কিন্তু পরে আবেদন করা হলে তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় তৎকালীন জেলা প্রশাসকের আদেশে পুনরায় আমাদের বাবা একে দেওয়ানের নামে তর্কিত ৫৮ শতক জায়গা রেকর্ডভূক্ত করা হয় এবং অসাধুমূলক কার্যকলাপে জড়িত আমিন ও কানুনগোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দেন জেলা প্রশাসক।

 

সংবাদ সন্মেলনে ডা. একে দেওয়ানের ছোট ছেলে অদ্বিত দেওয়ান বলেন, সুবিমল দেওয়ানের পক্ষে করা আপিলে কোনো রকম যুক্তি ও ভিত্তি না থাকায় আদালত সব সময় আমাদের পক্ষে রায় দেন। সর্বশেষ বিচারাধীন মামলাতেও আমাদের পক্ষে চূড়ান্ত রায় দিয়েছেন আদালত। আদালতের রায়ে আমরা আমাদের জায়গাটি দখলে নিতে চাইছি। কিন্তু শুধু চাঁদাবাজির উদ্দেশে কাজ করতে গেলে দলবল নিয়ে আমাদেরকে বাধা দিতে যান দীপেন দেওয়ান। তিনি আমাদের কাছে দেড় কোটি টাকা চাঁদা দাবি করছেন। দাবি করা টাকা দিলে জায়গাটি ছেড়ে দেবেন বলছেন দীপেন দেওয়ান।     

 

তিনি আরো বলেন, ১৯৬৯ সালের দিকে ওই এলাকায় ১৭১ নম্বর ডাগে ১২ নম্বর হোল্ডিংয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক থেকে ৫৮ শতক জমি বন্দোবস্তি পান রাঙ্গামাটি পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ডা. একে দেওয়ান। পরে জেলা প্রশাসক বরাবরে একে দেওয়ানের জমির পাশে ১ দশমিক ৬৪ একর জমির বেন্দাবস্তির আবেদন করেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উপজাতীয় বিষয়ক উপদেষ্টা (প্রতিমন্ত্রী) সুবিমল দেওয়ান। আবেদন করা জমির মধ্যে একে দেওয়ানের ৫৮ শতক জমি ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে একে দেওয়ানের ৫৮ শতক জমিসহ দুই দশমিক ২২ একর জমির বন্দোবস্তি পেয়েছিলেন সুবিমল দেওয়ান। এরপর সংশোধনের জন্য আবেদন করা হলে তদন্তসাপেক্ষে সত্যতা পাওয়ায় তর্কিত ৫৮ শতক জায়গা পুনরায় একে দেওয়ানের নামে রেকর্ডভূক্ত করে অসাধুমূলক কার্যকলাপের দায়ে জড়িত আমিন ও কানুনগোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। এরপর উচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন সুবিমল দেওয়ান। সেই থেকে শুরু ওই দুই প্রভাবশালী পরিবারের মধ্যকার ভূমিবিরোধ আজও মিটছে না। এরই মধ্যে পরলোকগমণ করেছেন, সুবিমল দেওয়ান ও ডা. একে দেওয়ান উভয়ে। বর্তমানে বিরোধ নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে উভয় পরিবারের সদস্যরা।

 

তবে এর আগে গেল ১৪ সেপ্টেম্বর দীপেন দেওয়ান নিজ বাস ভবনের এক সংবাদ সন্মেলনে দাবী করেছেন আদালতে বিচারাধীন থাকার সত্বেও ডা. একে দেওয়ানের পরিবারের লোকজন  দুস্কৃতিকারীদের দিয়ে ভূমি দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা  নেয়া না হলে কলেজ গেইট এলাকাবাসী আজ মঙ্গলবার  রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক অবরোধ পালন করা হবে বলে তিনি সংবাদ সন্মেলনে জানান।

 

তিনি আরো জানান, তর্কিত জায়গাটি নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন আছে। আমরা আদালতের রায় মেনে নেব। কিন্তু একে দেওয়ানের ছেলে, মেয়ে ও জামাই আইন অমান্য করে লোক লাগিয়ে দিয়ে জায়গাটি জোরপূর্বক বেদখল করতে চেষ্টা চালাচ্ছে। বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি এবং আমাদের আবেদনে জায়গাটিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন আদালত।

 

চাদাঁবাজির অভিযোগের ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ানের কাছে জানতে চাইলে  তিনি অস্বীকার করে বলেন, চাঁদাবাজি কি মোবাইলে মাধ্যমে, নাকি মৌখিক  ও  কাগজেপত্রে দাবী করা হয়েছে সুনিদিষ্ট উত্তর তার কাছে জানা নেই এবং প্রানণাশের হুমকি দেওয়ার  বিষয়টি প্রশ্নই আসে না।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত