বৃহস্পতিবার রাঙামাটিতে “নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ এবং এর বিচার প্রক্রিয়া” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), রাঙ্গামাটি ইউনিট এবং রাঙামাটি রেস্তোরা মালিক সমিতির উদ্যোগে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ.এন.এম. মোরশেদ খান। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যার সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন জনাব ডাঃ শহীদ তালুকদার, বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ মোহাম্মদ সাইফুল ইলাহী, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার শেখ মোঃ বদিউল আলম, বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহেদ আহমেদ, বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেন, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর সদর মোসাম্মৎ নাসিমা আক্তার খানম প্রমূখসহ রাঙামাটি রেস্তোরা মালিক সমিতির নেতারা। সভার সঞ্চালনা করেন ব্লাস্ট, রাঙামাটি ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট জনাব জুয়েল দেওয়ান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ.এন.এম. মোরশেদ খান রেস্তোরা মালিকদের নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভোক্তা হিসেবে জনগণ প্রতিনিয়তই ঠকছে ও প্রতারিত হচ্ছে। এই প্রতারণার আওতায় খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণ, ওজনে কারচুপি, শাক-সবজি ফলমূলে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশ্রণ, অপরিষ্কার পরিবেশে রান্না ও পরিবেশন, নকল ও মানহীন পণ্য অন্যতম। বিষয়গুলি প্রতিকারে সরকার ২০১৩ সালে উক্ত আইন প্রণয়ন করেছেন। কিন্তু সাধারণ ভোক্তাদের অসচেতনতার কারণে সরকারের এই যুগান্তকারী আইনের সুফল সেভাবে কাজে আসছে না। তিনি বর্তমান শিক্ষার্থীদের শুধু বস্ত্র ও চিকিৎসায় অধ্যয়ন না করে পাশাপাশি খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়েও অধ্যয়ন করার আহ্বান জানান।
সিভিল সার্জন ডাঃ শহীদ তালুকদার অনিরাপদ খাদ্য সরবরাহকারীদের উক্ত আইন বিষয়ে সতর্ক করার পরও অনিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করা হলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয় বলে তিনি জানান।
বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহেদ আহমেদ যিনি বর্তমানে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার নিরাপদ খাদ্য আদালত পরিচালনার দায়িত্বে কর্মরত আছেন তিনি উক্ত আলোচনা সভায় নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ এর বিশেষ কিছু ধারার উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন এবং ইতোমধ্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় নিরাপদ খাদ্য আইনে ২০১৩ বিগত সময়ে সর্বমোট ২৮টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে তিনি জানান।
অ্যাডভোকেট দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যা তাহার বক্তব্যে বলেন, ভেজাল বিরোধী অভিযান চলমান থাকলেও ভেজাল প্রদানকারী চক্রকে দমন করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং পাশাপাশি ভেজাল প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলনও গড়ে তোলা দরকার। তাই যে কোন অনিরাপদ খাদ্য সরবরাহ ও বিক্রি বন্ধ করতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
অ্যাডভোকেট জুয়েল দেওয়ান বলেন, মানুষের বেঁচে থাকার মৌলিক উপাদান হচ্ছে খাদ্য এবং এই খাদ্য রাষ্ট্রের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হিসেবে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। আর এই সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা থেকেই সরকার নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ প্রণয়ন করেছেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.