রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদে পিকনিকের নৌকা ডুবীর দুর্ঘটনায় নিহত ৬, আহত ৪, নিখোঁজ ২

Published: 14 Feb 2020   Friday   

রাঙামাটিতে পিকনিকে আসা একটি দেশীয় নৌযান কাপ্তাই হ্রদে উল্টে গিয়ে ৫ নারী ও শিশুর  মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদীতে নৌ দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত ও ২  নিখোজ  রয়েছেন।   শুক্রবার পৃথক দুটি স্থানে এ ঘটনা ঘটেছে।

 

পুলিশসহ একাধিক সূত্রে জানা য়ায়, শুক্রবার সকালের দিকে চট্টগ্রামের ইপিজেড এর প্যাসিফিক গার্মেন্টম লিমিটেডের ৫০ জন মহিলা শ্রমিক পিনকিকের উদ্দেশ্য বাসযোগে  রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্র এলাকায় বেড়াতে আসেন।   পওে তারা  পর্যটন ঘাট থেকে  দুটি  ফাইফার অফটিকেল বোট ভাড়া করে কাপ্তাই হ্রদে নৌ ভ্রমনে বের হন।  পর্যটন ঘাট থেকে প্রায়  কিছু দুর পৌছানোর পর বোটটি কাত হয়ে বোটটি উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলে এক কন্যা শিশু ও ৪ মহিলা নিহত হন। নিহতরা হলে শীলা আক্তার(২০), রীণা আক্তার(৪৫)া, শিশু কন্যা আফরোজা(১৫), আছমা আক্তার(৫০) ও অজ্ঞাত একজন। খবর  পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কমী, নৌ পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের উদ্ধার করে  রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।  এছাড়া এ ঘটনায় লিপি বেগম(৪৫), আবু বক্কর,রবিউল ও অজ্ঞাত  আহত হন। তাদের মধ্যে লিপি আক্তারকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার খবর পর পেয়ে জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে  যান।  সেখানে অবস্থান করা ফায়ার সার্ভিসের লোকাদেও উদ্ধারের জন্য নির্দেশনা দেন।

 

এদিকে কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় কয়লার ডিপু সংলগ্ন কর্ণফুলি নদীতে চট্টগ্রাম থেকে আগত একটি পর্যটকবাহী বোট ডুবে এক কন্যা শিশু নিহত ও ২ জন নিখোজ রয়েছেন। নিহতের নাম দেবলীনা (১০)। নিখোজ রয়েছেন বিনয়(৫) ও তুম্পা(৩০)।  এ রিপোর্ট লেখা পর্ষন্ত ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা  তাদের উদ্ধারের তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে। 

 

কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী জানান, চন্দ্রঘোনায় কয়লার ডিপু সংলগ্ন কর্ণফুলি নদীতে চট্টগ্রাম থেকে আগত ১২৫ জনের একটি পর্যটকবাহী বোট ডুবে যায়। এতে তিন জন নিখোজ হন। তাদের মধ্যে  ডুবুরিরা একজনের মৃতদেহ উদ্ধার  করেছে। 

 

এদিকে গতকাল ঘটনার পর জেলা প্রশাসন কার্যালয় সন্মেলন কক্ষে একটি  জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন  জেলা প্রশাসক একেএম মামুনর রশীদ। এসময় জেলা প্রশাসনের উর্দ্ধন কর্মকর্তা ও নৌপুলিশ কর্মকর্তা এবং  লঞ্চ ও বোট মালিক সমিতি ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায়  কাপ্তাই হ্রদে চলাচলকারী কোনো বোটে ছাদ না রাখা, তবে  তাতে ছাদ থাকলেও কোন যাত্রীকে ছাদে উঠানো যাবে না, বোট মালিকদের যাত্রীদেও লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ ও ব্যবহার নিশ্চিতসহ যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা কর্মচারীদেও হ্রদে যাত্রী পরিবহনে নিয়োজিত নৌযানগুলোর ফিটনেস সার্টিফিকেট যাচাবাছাই করতে হবে। সভায় নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সৎকার্য্য নিষ্পন্ন করতে ২০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদানের ঘোষনা করা হয়।  

 

জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ বলেন, উদ্ধারকৃত একজনের আহত তাকে জানিয়েছেন যে দুটি বোটই পর্যটন ঘাট এলাকা থেকে পাশাপাশি করে নৌভ্রমনের জন্য রওনা দিয়েছিল। ঘটনা ঘটার আগে একটি বোটের জনৈক যাত্রীর হাত থেকে একটি কামরাঙ্গা হ্রদের পানিতে পড়ে গেলে তা উদ্ধারের জন্য উভয় বোটের যাত্রীরা বোটের একধারে চলে আসেন। এতে একটি বোটটি উল্টে  গেলে এ দুর্ঘটনা  ঘটে।  এতে ঘটনাস্থলে ৫ জন নিহত হয়েছে।    

 

রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল আবাসিক চিকিৎসক ডা. শওকত আকবর চৌধুরী জানান, নৌ ডুবিতে এক শিশু কন্যাাসহ ৫ নারীর মৃত হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ তাদের স্বজনদের কাছে দেয়া হবে।

 

রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস বলেন, চট্টগ্রাম থেকে পিকনিকে আসা নৌকা ডুবিতে ৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এবার হ্রদে ভ্রমনের জেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে কঠোর নজরদারীতে  থাকবে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত