একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া আর কোন সরকারী-বেসরকারী সেবা পৌঁছেনি বিঞ্চু কারবারী পাড়ায়

Published: 18 Jan 2022   Tuesday   

খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলা অতি পুরাতন ও  দুর্গম গ্রাম বিঞ্চু কারবারী পাড়া যা হাজা পাড়া নামে অধিক পরিচিতি। গ্রামটি দীঘিনালা উপজেলা শহর প্রায় ১২ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত। সেই গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া আর কোন সরকারী বা বেসরকারী সেবা পৌঁছেনি। অথচ সেই গ্রামে ৮৫% মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে।  এই পাড়ায় এখন প্রায় ১৩৫ পরিবারের লোকের বসবাস। কয়েকটি পরিবার ছাড়া বাকী পরিবার গুলো অতি দরিদ্র। জীর্ণ ছিন্ন শনের চাউনি আর বেড়াঘরে বসবাস করে আর তাদের অধিকাংশ লোকেরা পেশা  জুম চাষ আর দিন মজুরি।  সেই  গ্রামে একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া আর কোন সরকারী বা বেসরকারী সেবা পৌঁছেনি এখনো। বিদ্যালয়টি ১৯৬৮ সালে স্থাপন করেন বিঞ্চু কারবারী। আর জাতীয় করণ হয় ১৯৭৩ সালে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রাথমিক স্তর শেষ ঝড়ে পড়ে যায়। দুর্গম আর আর্থিক সংকটের কারনে আর পড়াশুনা করতে পারে না।  

এই গ্রামের প্রধান সমস্যা হচ্ছে খাবার পানি আর স্বাস্থ্য। তাদের খেতে হয় ছড়া আর  গিরি ঝিরির পানি ফলে তাদের প্রায় সময় ডায়রিয়াসহ নানা অসুখে ভুগতে হয়। আর অসুস্থ হলে তাদের যেতে হয় ১২ কিলোমিটার দুরে দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, যা অনেকের পক্ষে সম্ভব না।  সেই গ্রামে নিয়মিত টিকা দেয়া ছাড়া এখনো পর্যন্ত তাদের গ্রামে কোন স্বাস্থ্যকর্মী  গিয়েছে কাউকে স্বাস্থ্য  সেবা দিয়েছেন এমন কোন নজির নেই বলে দাবী স্থানীয়দের।

 

গ্রামের বাসিন্দা প্রভাত ত্রিপুরা বলেন, আমাদের গ্রামের একটি মাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া আর কোন সরকারী বা বেসরকারী সেবা পৌঁছেনি। আমাদের গ্রামটি  উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দুরে, আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে পানি,স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য। যোগাযোগটা অসুবিধা ছিলো, এখন রাস্তা হচ্ছে।

বিঞ্চু কারবারী পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  সহকারী শিক্ষক তর্পন নারায়ণ ত্রিপুরা বলেন এলাকাটি অতি পুরাতন একটি গ্রাম।  বিঞ্চু কারবারী পাড়া হলেও হাজা পাড়া নামে অধিক পরিচিত। তিনি বলেন এই গ্রামে প্রধান সমস্যা হচ্ছে চিকিৎসা, একজন রোগীকে চিকিৎসা জন্য নিতে হলে অনেক দুরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। তাও পায়ে হেটে নিতে হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের। এর পর হচ্ছে পানি, এই গ্রামের লোকদের ছড়ার পানি খেতে হয়। তা ও পাতার গন্ধ। আর শুকনা মৌসুমে তো ছড়ার পানি ও শুকিয়ে যায়। তিনি আশা করেন সরকার দ্রæত এই গ্রামের সমস্যা গুলো দ্রæত সমাধান করবেন।

দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, ডাঃ তনয় তালুকদার বলেন গ্রাম দুর্গম হলেও তারা সেখানকার মা ও শিশুদের টিকা কার্যক্রম ঠিক রেখেছেন, তবে গ্রামটি অতিদুর দুর্গম ও জনবল সংকটের কারনে  তারা অনেক সময় ঠিকমতো স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারেননি। এবার রাস্তা হচ্ছে রাস্তার কাজ শেষ হলে স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে যাতে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন,সে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।

দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের  উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ কাশেম বলেন আগে বিঞ্চু কারবারী পাড়া যাওয়ার কোন রাস্তাঘাট ছিলো না যার কারনে উন্নয়ন করতে সমস্যা ছিলো।  ইতি মধ্যে রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। রাস্তার কাজ শেষ হলে সেখানে স্বাস্থ্য স্যানিটেশনসহ যে সমস্ত সমস্যা গুলো আছে সব গুলো সমাধান করা হবে। এবং যারা গৃহহীন তাদের গৃহ নির্মাণ করে দেয়া  হবে।


---হিলবিডি২৪/সম্পদনা/ সি,আর

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত