বিলাইছড়ি কলেজের প্রথমবারে নবীন বরণের আয়োজন

Published: 05 Sep 2024   Thursday   

উপজেলার একমাত্র বিলাইছড়ি কলেজের বৃহস্পতিবার নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলেজটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এটাই প্রথম নবীণদের বরণ করা হলো।
উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন , জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাসরীন সুলতানা (শিক্ষা ও আইসিটি) ও মো: সাইফুল ইসলাম (রাজস্ব), বিলাইছড়ি জোনের (৩২ বীর) জোন অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ রিফায়েত করীম চৌধুরী,পিএসসি ও জোন উপাধিনায়ক মোঃ মাজেদুর রহমান পিএসসি, বিলাইছড়ি থানার তদন্ত ওসি নুরে আলম প্রমূখ । রুবেল বড়ুয়ার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিলাইছড়ি কলেজের প্রভাষক ইয়াসমিন সুলতানা। এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বুদ্ধ জ্যোতি চাকমা।

অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি পর্য়টকদের সুবিধার জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস ওয়েভসাইটের (smarttourismbelaichari.com.bd) উদ্বোধন করেন। পরে অতিথিবৃন্দরা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই ও প্রথমম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী দ্বিতীয় বর্ষে উত্তীর্ণ মেধাক্রম অনুযায়ী ৩ জন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন জেলা প্রশাসক। পরে কেক কেটে নবীন বরণ উদযাপন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তী ঘটে। এর আগে সকালে জেলা প্রশাসক পর্যটকদের দূর্ভোগ লাঘবে বিলাইছড়ি প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত ট্যুরিস্ট বোট সার্ভিস ও বিলাইছড়ি কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাস শুভ উদ্বাধন করেন। পরে তিনি তার সফর সঙ্গীদের সাথে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে ঘুরে দেখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, কলেজটি দেখতে দেখতে এক বছর পার হয়ে গেছে। যারা গত বছর কলেজে ভর্তি হয়েছে, তারা আজ দ্বিতীয বর্ষে উত্তীর্ণ হয়েছে। এ বছর যারা প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছে তারা এখানে উপস্থিত রয়েছে। আমার খুব ভালো লাগছে যে আমাদের শিক্ষার্থীরা যারা গত বছর ভর্তি হয়েছিল তারা আমাদের উপর আস্থা রেখেছে, ভরসা রেখেছে।
তিনি আরো বলেন, আমি এখানে যোগদান করার পর তিন মাসের মধ্যে এ কলেজে এসেছিলাম। আমাদের ইউনিয়ন ও উপজেলা চেয়ারম্যানরা সবাই বলেছিলেন এখানে একটি কলেজের কথা। এ কলেজটি করার পেছনে এডিসি শিক্ষা আইসিটি , ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রাক্তন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, আমাদের প্রাক্তন দুজন ইউএনও এখানে কাজ করেছেন। সবাই অবদান রেখেছেন এবং খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা প্রথম বর্ষের কার্য়ক্রম শুরু করতে পেরেছিলাম। আপনারা শুনে আনন্দিত হবেন যে এ কলেজের জন্য চার একর জায়গা বন্দোবস্ত হয়েছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড থেকে দ্বিতল ভবন নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প পাশ হয়েছে। এতে করে আমাদের শিক্ষার্থীরা একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস পাবে। পাঠদানের অনুমতিতাও আমাদের মৌখিকভাবে দিয়ে দিয়েছে। শুধু বর্তমান প্রেক্ষাপটে তারা আলোচনায় বসতে পারতেছে না। তো এক বছরের মধ্যে যা পেয়েছি, তা আপনাদেরও ভালো লাগবে।

জেলা প্রশাসক বলেন, এখানকার যারা শিক্ষাথী যারা  রয়েছ, আমরা তাদের কথা সবসময় চিন্তা করছি। যে এখান থেকে গিয়ে রাঙামাটি শহরে পড়ালেখা করা ব্যয়রবহুল এবং অনেক কষ্টের একটা বিষয়। যা সবার পক্ষে ব্যয় করা সম্ভব নয়। এ জন্য এ কলেজে আমরা ভর্তি ফি মওকুফ করেছি, ড্রেস, বই সবকিছু করেছি। আমরা যে এটা করেছি উদ্দেশ্য আছে। এখানে আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থী যারা আছে, তারা মানুষের মত মানুষ হবে। ওরা প্রতিষ্ঠিত হয়ে এ কলেজের হাল ধরবে এটা আমি চাই। ওরা যখন প্রতিষ্ঠিত হবে, ভালো জায়গায় যাবে, আমার তোমাদের প্রতি অনুরোধ এ কলেজকে ভুলে যাবে না। তোমরা যে সুযোগ-সুবিধা পেয়েছো ,তোমাদের পরে যারা আসবে তাদেরকে তোমরা এই প্রতিষ্ঠানে কি দিতে পারবে, কিভাবে হেল্প করতে পারবে এভাবে চিন্তা করতে হবে। যে আমি প্রতিষ্ঠিত হয়ে এই কলেজের জন্য কিছু করবো, তোমাদের কাছে এই কমিটমেন্ট আমি চাই।

তিনি বলেন, জীবনে সব সময় বড় স্বপ্ন দেখতে হবে। স্বপ্ন যদি ছোট হয়, তাহলে জীবনে বড় হওয়ার কোন সুযোগ নেই। স্বপ্ন দেখতে হবে যে, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে হবে। সেখানে অনার্স মাস্টার্স পাস করে বিসিএস পেতে হবে। আর নাহলে প্রথম শ্রেণীর একটি চাকরি পেতে হবে। এই স্বপ্নগুলো দেখতে হবে। আমরা এখানে একটি ভালো লাইব্রেরী করবো। যেখানে পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি অন্যান্য সাপোর্টিং যে বইগুলো প্রয়োজন, সে ধরনের আধুনিক লাইব্রেরী করার আমরা চেষ্ঠা করবো।
তিনি আরো বলেন৷ তোমাদের প্রতি আমার আস্থা রয়েছে তোমরা অবশ্যই ভালো করবে। তোমরা যদি এখানে প্রতিটি শিক্ষাথী প্রতিষ্ঠিত হও, তাহলে তোমাদের পরিবারও প্রতিষ্ঠিত হবে। তোমাদের হাত ধরেই সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। সমাজের অন্ধকার দূর হবে। বাবা-মায়ের প্রতি শুদ্ধাশীল হতে হবে। পৃথিবীতে বাবা-মায়ের উপর কেউ নেই। পাশাপাশি শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। কোন শিক্ষক যদি তোমার দ্বারা কষ্ট পায় , আমি গ্যারান্টি ;দিয়ে বলতে পারি তুমি জীবনে কিছু করতে পারবে না। আর কোন শিক্ষক যদি তোমার উপর সন্তুষ্ট হয় , তাহলে তুমি ভালো কিছু করতে পারবে। শিক্ষক যেমনি হোক না কেন তাকে সবসময় শ্রদ্ধা করতে হবে, সম্মান করতে হবে। তোমার পরিপূর্ণ মানুষ হওয়ার জন্য ভালো ব্যবহার অত্যন্ত জরুরী ।
জেলা প্রশাসক বলেন, এখানে একটি টেকনিক্যাল কলেজ হবে। আমরা টেকনিক্যাল কলেজের জন্য জমির প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আমরা চাই বিলাইছড়িও অন্যান্য উপজেলার মতো এগিয়ে যাক।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত