শ্রমিক মালিক ঐক্য গড়ি, সোনার বাংলা গড়ে তুলি-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুক্রবার খাগড়াছড়িতে মহান মে দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
খাগড়াছড়িতে টাউন হলে জেলা প্রশাসন আয়োজনে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শেখ মিজানুর রহমান। অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় শ্রমিক লীগের আহবায়ক মোঃ নুরুনবী, খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ রইসউদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক কামালউদ্দিন পাটোয়ারী, জেলা যুবলীগের সভাপতি যতন কুমার ত্রিপুরা ,খাগড়াছড়ি অটোরিক্সা মালিক সমিতি মোঃ সিরাজ মিয়া, মাহেন্দ্র মালিক কল্যান সমিতি সুমতি রন্জন ,পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি চাকমা প্রমুখ । অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন এস এম শান্তুনু চৌধুরী ।
এর আগে খাগড়াছড়ি জাতীয় শ্রমিক লীগ আয়োজনে জেলা জর্জ কোট প্রাঙ্গন থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান শাপলা চত্বর প্রদক্ষিন করে টাউন হল প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয় ।
উল্লেখ্য , এ দিনে ৮ ঘন্টা কাজের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের সব শিল্পাঞ্চলে ডাক দিয়েছিল । এ ডাকে শিকাগো শহরের তিন লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ বন্ধ করে রাখে । শ্রমিক সমাবেশকে ঘিরে শহরের হে মার্কেট রূপ নেয় লাখো শ্রমিকের বিক্ষোভ সমুদ্রে । এক লাখ ৮৫ হাজার নির্মাণ শ্রমিকের সঙ্গে আরও অসংখ্য বিক্ষুদ্ধ শ্রমিক লাল ঝান্ডা হাতে সমবেত হয় সেখানে । বিক্ষোভের এক পর্যায়ে পুলিশ শ্রমিকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালালে ১০ জন প্রাণ হারায় ।
মে শুরু হওয়া এ শ্রমিক আন্দোলন অব্যাহত ছিল আরও কয়েক দিন । অব্যাহত থাকে ধর্মঘটও । ৩ মে একটি ফসল কাটার কারখানার সামনে শ্রমিক সভার পুলিশের নির্বিচারে গুলিতে প্রাণ হারায় । আরো ৬ শ্রমিক । এ হত্যার প্রতিবাদে ৪মে হে মার্কেট স্কয়ারে স্মরণাতীতকালের বৃহত্তম শ্রমিক সমাবেশ আবারো বর্বরোচিত হামলা চালায় পুলিশ ও গুন্ডা বাহিনী ।
প্রাণ হারায় আরও ৪ শ্রমিক । পরে ৬ অক্টোবর মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত চার শ্রমিক নেতাকে ফাঁিস দেয়া হয় । অন্যদিকে হে মার্কেটের ওই শ্রমিক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারাবিশ্বে । গড়ে উঠে শ্রমিক-জনতার বৃহত্তম ঐক্য । অবশেষে তীব্র আন্দোলনের মুখে শ্রমিকদের দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার ।
১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আর্ন্তজাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর রক্ত ঝরা অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়ে ওই ঘটনার স্মারক হিসেবে ১মে- কে আর্ন্তজাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ঘোষনা দেয়া হয় । ১৮৯০ সাল থেকে প্রতিবছর দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ’মে দিবস নামে পালিত হয়ে আসছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.