খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা মং সার্কেলের রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী শান্তি পরিবহন সুপারভাইজার কর্তৃক মং সার্কেলের মং রাজাসহ অন্যান্য ২৫জন যাত্রীরা সকলেই অপদস্থ শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাত্রে ঢাকা ফকিরাপুর থেকে খাগড়াছড়ি আসার সময় এই ঘটনাটি ঘটেছে । খবর পেয়ে বুধবার সকালে জেলা শহর পুলিশ ও সেনা চেক পোষ্টে পৌঁছলে উত্তেজিত জনতারা আটকালে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও মং সার্কেল রাজার উপস্থিতিতে জরুরী সমঝোতা বৈঠকে একপর্যায় মীমাংসায় উপনীত হয় ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শান্তি পরিবহন নৈশ কোচ (চট্ট মেট্রো-ব-১১-০২৭৭) এর গাড়ির ড্রাইভার মোঃ লোকমান(৪০) ও সুপারভাইজার মোঃ জসিম উদ্দিন(৩২) চট্টগ্রাম বারায়াইহাট থেকে অতিরিক্ত ঘন ঘন গাড়ি থামিয়ে অনিয়মভাবে মাঝ পথে গাড়িতে যাত্রী উঠা-নামা করে । ঢাকা থেকে আসা সকল যাত্রীরা সুপারভাইজারকে নিরাপত্তার স্বার্থে পথে অন্য যাত্রী না তুলার অনুরোধ করেন। এক পর্যায়ে যাত্রীদের কথা তোয়াক্কা না করে উল্টো দূর্ব্যবহার করা হয়। এসময় যাত্রীরা অমানবিক অনিয়মের প্রতিবাদ করলে সুপারভাইজার যাত্রীদের চুপ করে সীটে বসে থাকার জন্য অসদাচারন করেন ।
এদিকে, খাগড়াছড়ি মং সার্কেরের মং চীফ রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরীকে যাত্রীরা গাড়ির সুপারভাইজার বিরুদ্ধে অনিয়ম না করার জন্য বলতে অনুরোধ করেন । সুপারভাইজারকে মং রাজা কিছু বলতেই চাইলে সুপারভাইজার ক্ষেপে গিয়ে মং রাজার সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং মং রাজাকে ইঙ্গিত করে বলেন চুপ থাকেন, কোন কথা নেই এবং এখানে মগের মল্লুক পেয়েছেন কিনা । এ কথা মোবাইলে মাধ্যমে এলাকার সাধারন প্রজাদের অবগত করে জানাজানি হলে ক্ষুদ্ধ হয় জনতা । এক পর্যায়ে বুধবার সকালে জিরো মাইল(রাজবাড়ী) এলাকায় পৌছঁলে গাড়ি আটকিয়ে চালক ও সুপারভাইজারকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে অবরুদ্ধ রাখা হয়।
পরে নিরাপত্তাকর্মীরা এসে মীমাংসার জন্য জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আব্দুল আজিমকে অবগত করা হলে তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার নিজে সামাল দেয়ার আশ্বাস দেন এবং জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে মং রাজাসহ উপস্থিত হয়ে ঘটনার মীমাংসার আয়োজন করা হয় । গাড়ি সুপারভাইজারকে জিঞ্জাসাবাদে স্বীকার করেন এবং অসদাচারনে মং রাজার নিকট মাফ চাওয়া হয় ।
ঢাকা থেকে আসা শান্তি পরিবহনে দীঘিনালা মোঃ কালাম, বাবুছড়া চন্দ্র কুমার চাকমা, তপন চাকমাসহ অনেক যাত্রীরা জানান, নৈশ কোচে এমনিতে অনেক বেশী ঝুকি নিয়ে চলতে হয় । বেশী ভাড়া দিয়ে শান্তি পরিবহনে নিরাপদে গন্তব্য স্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আসার পরে দেখি অনৈতিক ব্যবহার করে যেখানে-সেখানে যাত্রী উঠা-নামা করলে এমনিতে বিরক্ত লাগে ও সময় বেশী অপচয় মধ্যে বেশীর ভাগ জীবন অনিশ্চয়তায় চলাফেরা করতে হচ্ছে এটিই অত্যন্ত দুঃখজনক ।
খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন বাস-মালিক সমিতি’র সাধারন সম্পাদক এসএম শফি জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয় হয়েছে । ঘটনার শুনার সাথে সাথে সমিতির নিজে মানুষ পাঠিয়ে টার্মিনাল অফিস কার্যালয়ে একটি ফয়সালার সিদ্ধান্ত উপনীত হয়েছে।
এদিকে জিরো মাইলে দায়িত্বরত এএসআই মোঃ শহিদুল ইসলাম ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার সুপারভাইজার যাত্রীদের সাথে র্দূব্যবহার করায় উত্তেজিত জনতারা আটকায় । তবে এ ব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ না থাকায় মামলা নেয়া সম্ভব হয়নি ।
খাগড়াছড়ি হেডম্যান এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ক্ষেত্র মোহন রোয়াজা জানান, প্রতাগত প্রধান অপমান হওয়া মানে জেলার সকলকেই অপদস্থ করা । পরবর্তীতে যেন এই রকম ঘটনা না ঘটে প্রশাসনকে কঠোর হস্তে দমন করার জন্য দাবি জানান।
এ ব্যাপারে মং সার্কেলের চীফ রাজা সাচিংপ্র“ চৌধুরী বলেন, যাত্রী এবং জনগনের কল্যানের স্বার্থে ভবিষ্যতে যেন কারো সাথে এরকম আচরণ না হয় সে ব্যাপারে জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতিকে অনুরোধ করা হয়েছে। এলাকার প্রজাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় থাকে তিনি আহ্বান জানান ।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.