সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল শুক্রবার। দু’সপ্তাহ আগেই গঠনতান্ত্রিক ও সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয় সম্মেলন ও কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটি। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথাও দিয়েছিলেন সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। বিভক্ত হিন্দু নেতাদের সাথে দফায় দয়ায় বৈঠকও করেছেন। তিনদিন আগেও তিনি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবার বিষয়ে অনড় ছিলেন।
কিন্তু বুধবার রাতে সনাতন ছাত্র-যুব পরিষদ এবং বৃহস্পতিবার সকালে সনাতন সমাজ কল্যাণ পরিষদের সাবেক নেতাদের সাথে বৈঠক শেষে নড়েচড়ে বসেন তিনি।
ওই সভা থেকেই তিনি টেলিফোনে বর্তমান সাঃ সম্পাদক সজল বরণ সেনকে শুক্রবারের সম্মেলন স্থগিতের নির্দেশ দেন। সভায় উপস্থিত নেতারা এমপির উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, ‘সজল, মনে করো তোমার বা আমার কোন স্বজন মারা গেছে। এই উছিলায় সম্মেলনটি কিছুদিনের জন্য স্থগিত রাখো’। একথা বলেই এমপি ফোন রেখে দেন বলে জানান সভার সূত্রটি।
মুলত: ব্যবসায়ী নেতা সুদর্শন দত্ত, এড. বিধান কানুনগো, অধ্যাপক সত্যজিত চৌধুরী, মানবেন্দ্র খাস্তগীর ও সজল বরণ গংয়ের সাথে নির্মলেন্দু চৌধুরী, কাঠ ব্যবসায়ী তপন কান্তি দে, সাংবাদিক তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য, নির্মল কান্তি দেব, চন্দ্র শেখর দাশ ও আশীষ ভট্টাচার্য্য গংয়ের ক্ষমতার দ্বন্ধের সূত্র ধরেই সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র ত্রিপুরা নিজের দেয়া সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসেছেন।
ছাত্র-যুব পরিষদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, ওয়াদুদ ভূইয়ার আমলেও নেতাদের একটি অংশ সরকারের তাঁবেদারি করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করেছেন। এখন আওয়ামীলীগের আমলেও একই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
আরেক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেই বলেন, লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির-রাস মহোৎসব, দূর্গাপূজা-কৈবল্যপীঠ; কোথাও তাঁরা স্বচ্ছ ছিলেন না।
সম্মেলন ও কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির প্রধান সুদর্শন দত্ত সাধারন সম্পাদক সজল বরণ সেনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, এমপি সাহেব টেলিফোনে নাকি তাঁকে সম্মেলন স্থগিত করতে বলেছেন।
তিনি আরো জানান, ওনি (এমপি)-সহ জেলার ভিআইপিদের সম্মতি নিয়েই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। পোন্টারিং-কার্ড বিতরণ, খাবারের অর্ডারসহ আনুষাঙ্গিক সব প্রস্তুতিই শেষ। সেই মুহুর্তে সম্মেলনের একদিন আগে সম্মেলন স্থগিত করতে হলো।
তবে সজল বরণ সেন বলেছেন, অর্নিবার্য্য কারণেই সম্মেলন ও কাউন্সিলের সময় পিছিয়ে দেয়া হয়েছে; অন্যকিছু নয়।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে খাগড়াছড়িতে বসবাসরত সনাতনী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণার্থে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি পদ নিয়ে কাড়াকাড়ি বেশ আগে থেকেই চলছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধে জেলা পরিষদের দেয়া বরাদ্দ আত্মসাত, হিসেব বুঝিয়ে না দেয়া, জমি রেজিস্ট্রির নামে সংগঠনের ২ শতক ভূমি পানির দামে বিক্রি, আওয়ামীলীগ-বিএনপি নির্বিশেষে ক্ষমতাসীন দলের লেজুড়বৃত্তিসহ নানা ধরনের অনৈতিকতার অভিযোগ রয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.