বান্দরবানে পাহাড় ধসে একই পরিবারের দুই শিশু নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছে। শুক্রবার ভোর রাতে বান্দরবান সদরের বনরুপা পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিনের মত জেলা সদরের বনরুপা পাড়ার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক স্ত্রী ও ৩ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘুমাতে যান। ভোর রাত ৩টার দিকে হঠাৎ পার্শ্ববর্তী একটি পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে বাড়ির উপর পড়ে যায়। এতে পরিবারের সকল সদস্য মাটি পাচা পড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয়রা প্রায় দুঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে শিশু আলিফ (১০) ও তার বোন মিম (৮)কে মৃত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আহত হয় শিশুদের বাবা আবদুর রাজ্জাক(৪০), মা আয়েশা বেগম(৩৫) ও তাদের শিশু কন্যা লাম(৫)।
পাশ্বর্তী বাসিন্দা মুসলিম উদ্দিন ও ফরিদ সওদাগর জানান,আব্দুর রাজ্জাক দীর্ঘ দিন ধরে পাহাড়ের নিচে বসত ঘর নির্মান করে ঝুকিপূর্ন বসবাস করে আসছেন। ৬দিন ধরে ভারী বর্ষনে পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে যাওয়ায় পাহাড় ধসে পড়েছে। শুক্রবার বিকালে মৃত দুই শিশুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরির্দশ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি,সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ,পৌর মেয়র মোঃ জাবেদ রেজাসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এসময় তারা নিহতদের পরিবারকে নগদ অর্থ প্রদান করেন।
এদিকে বান্দরবানে শুক্রবারও বন্যার পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটেছে। টানা বর্ষনে পাহাড়ী ঢলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারী বিভিন্ন অফিসে বন্যায় হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। দুর্গতের মাঝে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ,সেনাবাহিনী,জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানি,খাদ্যসহ ত্রান সামগ্রী বিতনর করা হচ্ছে। তবে এসব ত্রান সামগ্রী চাহিদার চেয়ে অপ্রতুল বলে জানান দুর্গতরা।
এছাড়ায় পাহাড়ী ঢলে বন্যায় প্লাবিত হয়ে বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের মাহালিয়া বড়দুয়ারা এলাকায় এবং বান্দরবান-রাঙামাটি সড়কের স্বর্ন মন্দির এলাকায় সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যায়। যার ফলে দ্বিতীয় দিনের মত বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
বান্দরবান পৌর মেয়র জাবেদ রেজা জানান, বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে থেকে পাহাড়ের পাদদেশে থাকা লোকজনদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে পৌরসভা থেকে। অনেকে সরে গেছে, অনেকে সরে যায়নি। যার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। নিহত পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।
সদর থানা ওসি ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, টানা ভারি বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে একই পরিবারের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সরে যেতে অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.