২৯৯নং সংসদীয় রাঙামাটি আসনের নির্বাচিত সাংসদ উষাতন তালুকদার বলেছেন, পার্বত্য সমস্যা সমাধানে সরকার ইতিবাচক দিকে এগুচ্ছে। যাতে পার্বত্য সমস্যার সমাধান একটা স্থায়ী পরিসমাপ্তি ঘটে। পার্বত্য সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছা রয়েছে। কিন্তু তার আশেপাশের লোকজন তার কান ভারি করানোর বিধায় বিষয়টা এতদিন ঘুরপাক খাচ্ছে। পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সংশোধনী আইনের বিলটি জাতীয় সংসদে গত বাজেট পাস হওয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। তবে আগামী অধিবেশনে তা পাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য সমস্যা সমাধানের জন্য ইতোমধ্যে তার দলের (পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি) পক্ষ থেকে জাতিসংঘের আদিবাসী স্থায়ী ফোরাম ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সন্মেলনে যোগ দিয়ে পার্বত্য সমস্যা সমাধানের জন্য দাবি তোলা হয়েছে। আশাকরি জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সৎ উপদেশ দেবে বাংলাদেশ সরকারকে যাতে এ সমস্যা অত্যন্ত দ্রুততার সাথে সমাধান করা হয়। অামরা আশা করি সরকার পার্বত্য সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান করবে।
বুধবার রাঙামাটিতে বালুখালী ও বন্দুক ভাঙ্গা ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সোলার প্যানেল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি উষাতন তালুকদার এমপি এসব কথা বলেন।
শহরের বনরুপাস্থ কাটাপাহাড় এলাকার বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আয়োজিত সোলার প্যানেল বিতরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বালুখালী ইউপি চেয়ারম্যান বিজয় গিরি চাকমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা ও রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন বন্দুকভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান বরুন কান্তি চাকমা। বক্তব্যে দেন বসন্ত সরকারী প্রাথসিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নন্দলাল চাকমা ও বন্দুকভাঙ্গা বিহার পরিচালনা কমিটির মভাপতি চিত্তরঞ্জন চাকমা। অনুষ্ঠানে শেষে বালুখালী ও বন্দুক ভাঙ্গা ইউনিয়নের বিভিন্ন বিদ্যালয় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে ২৬টি সোলার প্যালেন বিতরণ করেন প্রধান অতিথি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উষাতন তালুকদার এমপি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী সমাধান বা শান্তিসহ স্থিতিশীলতা বজায় থাকে তাহলে কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য জেলা থেকে শুধুমাত্র পর্যটন খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। এ আয় দিয়ে যা বাংলাদেশ চালানো যাবে।
তিনি বলেন, জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে কয়েক দিনের মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম রাজশাহী ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। যাতে তারা ভূল না বুঝে, যাতে তারা বুঝতে পারে পার্বত্য সমস্যা সমাধান হলে বাংলাদেশের জন্য কোন ক্ষতিক্ষারক নয়, বাংলাদেশের পরিপন্থী নয়, বরং উপকৃত হবে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, সাংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর গুরুতসহকারে বন্দুকভাঙ্গা ও বালুখালী ইউনিয়নে এবং বরকলে বিদ্যূৎ আওতায় আনার জন্য, তবলছড়ি ব্রীজ, সুখী নীলগঞ্জের ব্রীজ ও চন্দ্রঘোনার ব্রীজ নির্মানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে বরকলে বিদ্যূৎ লাইনের সংযোগের শেষ হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে বন্দুকভাঙ্গা ও বালুখালী ইউনিয়নে বিদ্যূতের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এছাড়া তবলছড়ি ব্রীজের কাজের জন্য আগামী কয়েক দিনের মধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হবে এবং আগামী এক বছরের মধ্যে সুখী নীলগঞ্জের ব্রীজ ও চন্দ্রঘোনার ব্রীজের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।
শিক্ষার ক্ষেত্রে কোন আপোস নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাঙামাটির প্রাথমিক শিক্ষার মান অত্যন্ত নিম্নমানের। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার মান ভাল হলে মাধ্যমিকে শিক্ষার মান ভাল হবে। যার কারণে এবারের এসএসসির পরীক্ষার ফলাফল খুবই খারাপ হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালগুলোতে এখনো শিক্ষকদের বর্গা চলে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বর্গা না দিয়ে স্বশরীরে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার জন্য তিনি শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বিতরণকৃত সোলার সঠিকভাবে ব্যবহার ও পরিচর্যার করার আহ্বান এবং ভবিষ্যতে এ সোলার প্যানেল বিতরণ অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.