টানা বর্ষনে রাঙামাটিতে কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ভারী বর্ষনের কারণে রোববার শহরের রাঙামাটি সরকারি কলেজের শহীদ মিনার সংলগ্ন স্থানে একটি বড় পাহাড় ধ্বসে পড়ে। এসময় কয়েকটি ঘর বিধ্বস্ত হলেও কেউ হতাহত হয়নি। রিজার্ভ বাজারের পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ের সামনে রাস্তা ফাটল দেখা দেয়ায় ঝুকিপুর্ণ হয়ে উঠেছে। তবলছড়ি পর্যটন এলাকার পাশে ওয়ামদামিয়া হিল এলাকায় পাহাড় ধসে পড়ায় ৪০ পরিবারকে সরিয়ে নিয়ে একটি বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এছাড়া বর্ষনের কারণে শহরের তবলছড়ি,রিজার্ভবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় গাছ হেলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপুর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। গত কয়েক দিনে ভারী বর্ষনের কারণে রাঙামাটি জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। জরুরী কাজ ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে হচ্ছেন না। এতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের লোকজন।
এদিকে, বরকল উপজেলা সদরে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড় ধসের কারণে সমকালের বরকল প্রতিনিধি পুলিন চাকমার বাড়ীসহ চার পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হলেও কেউই আহত হয়নি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। অপরদিকে ভারী বর্ষনের কারণে কাপ্তাই উপজেলায় গাছ ভেঙ্গে পড়ায় রাইখালী ও কেপিএম রোডের গাড়ী চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া উপজেলার কেপিএম-এর কাটাপাহাড় এলাকায় পাহাড় ধসে পড়ায় দুই পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে সকাল থেকে জেলা শহরের ওমদা মিয়া হিল পাহাড়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন নীচের রাস্তা, রিজার্ভ বাজার এলাকার পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত ঝুঁকিপূর্ন পরিবেশে বসবাসরত লোকজনদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
এদিকে, কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি পাহাড়ী ঢলে জেলার নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
টানা প্রবল বর্ষনের কারনে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রের ৫ টি জেনারেটরে একসাথে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আব্দুর রহমান জানিয়েছেন বর্তমানে কাপ্তাই বাঁধ এলাকায় পানির উচ্চতা ৯৭ দশমিক ৯৬ এম এসএল । কাপ্তাই হ্ররে রুল কার্ব অনুয়ায়ী বর্তমান সময়ে উচ্চতা থাকার কথা ছিল ৮৮ এম এসএল ।
তিনি আরও জানান বর্তমানে যে লেভেলে পানির উচ্চতা রয়েছে তাতে কেন্দ্রের উপর কোনরুপ বিরুপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে না। তবে পানির উচ্চতা ১০৮ এমএসএল এর বেশী হলে স্পীল ওয়ে দিয়ে অতিরিক্ত পানি ছাড়া হবে। বর্তমানে কেন্দ্রের দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ২২০ মেগাওয়াট এ পৌছেছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.