দীঘিনালায় তিন দিনব্যাপী বৌদ্ধ মেলা সমাপ্ত

Published: 14 Feb 2014   Friday   

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় তিন দিনব্যাপী বৌদ্ধ মেলার শুক্রবার সমাপ্ত হয়েছে। সমপানী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেছেন, ত্যাগ ও অহিংসা মানব সমাজে কল্যাণে বয়ে আনে। হিংসা হানাহানি থেকে মানুষকে দূরে রাখে। সৃষ্টিশীল ভাল কাজে প্রেরনা যুগায়। তাই ভগবান গৌতম বুদ্ধ ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে অহিংস চিত্ত গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন।দুপুরে দীঘিনালা উপজেলার বোয়ালখালী দশবল বৌদ্ধ রাজবিহার প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত শ্রীমৎ প্রজ্ঞাজ্যোতি মহাথেরোকে বরন, সংবর্ধনা প্রদান ও তিন দিনব্যাপী বৌদ্ধমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাতিত্ব করেন ধর্মবংশ মহাথেরোর। এতে প্রধান অীতথি ছিলেন সাংসদ কজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়। এসময় দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলুল জাহিদ পাভেল, বাবুছড়া বৌদ্ধনীতি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সুগত লংকার ভিক্ষু, কামাকেছড়া ধলাইমা বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ লোকমিত্র ভিক্ষু ও দশবল রাজবিহার পারিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক লোচন দেওয়ান বক্তব্য রাখেন। সভায় চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় ও সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা যৌথভাবে প্রজ্ঞাজ্যোতি মহাথেরো স্মারকের মোড়ক উন্মোচন করেন।শ্রীমৎ প্রজ্ঞাজ্যোতি থেরো বলেন, আমাকে মহাথেরো হিসাবে বরন উপলক্ষে যাদের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তিন দিনব্যাপী এই মহা আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি বলেন, আমার প্রতি যে সম্মান ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে তা ধর্মীয় দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে পথ প্রদর্শক হিসাবে প্রেরনা যোগাবে। এই শ্রদ্ধা ও সম্মান তখনই সফল হবে যখন আপনারা সকলে ধর্মের প্রতি আরো বেশী মনোযোগী হবেন। তাই আগামী দিনেও ধর্মীয় কর্মকর্মকান্ডে সহযোগিতা প্রদানের জন্য তিনি ধর্মপ্রান দায়ক দায়িকাদের প্রতি অনুরোধ জানান।সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় বলেন, যাকে ঘিরে আজকের এই মহতি আয়োজন তিনি ভগবান গৌতম বুদ্ধের নির্দেশনা একাচিত্তে পালনের মাধ্যমে ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হয়েছেন বলেই মানব সমাজের সর্বশ্রদ্ধেয় ব্যক্তির আসনে অভিশিক্ত হয়েছেন।তিনি বলেন, ইচ্ছে এবং আগ্রহ থাকলে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী প্রতিটি মানুষ ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে অহিংস মানব সমাজ প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখতে পারে। তাই ত্যাগ ও অহিংস মানুষিকতা সৃষ্টি করতে ধর্মীয় নির্দেশনা পালনের প্রতি মনোযোগী হওয়ার জন্য তিনি উপস্থিত দায়ক দায়িকাদের প্রতি অনুরোধ জানান।প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি আরও বলেন, সুশৃংখল জাতিগঠন কিংবা অহিংস সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ধর্মীয় নিয়মনীতি পালনের কোনো বিকল্প নেই। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করতে স্বক্ষম হয়েছেন। তাই সরকারের এই অর্জনকে অক্ষুন্ন রাখতে ধর্মীয় নিয়মনীতি পালনের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস বজায়ে রাখার জন্য তিনি উপস্থিত সকলের প্রতি আহবান জানান।এদিকে সভায় সভা শেষে জুফা’র সাধারন সম্পাদক নয়ন জ্যোতি চাকমা জানান, শ্রীমৎ প্রজ্ঞাজ্যোতি মহাথেরোকে বরন উপলক্ষে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী বৌদ্ধমেলায় জাতি ভেদাভেদ নির্বিশেষে লাখো মানুষের সমাগম ঘটেছে। তিনি আরও জানান, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা বেষ্টুনী ছাড়া এতবড় আয়োজন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করে আবারও প্রমান করেছে দীঘিনালাবাসী সংঘাতে নয় শান্তিতে বিশ্বাসী।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত