সরকারের চলতি মেয়াদের মধ্যেই শতকরা নব্বই ভাগ পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে-সেতুমন্ত্রী

Published: 02 Oct 2015   Friday   

আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পার্বত্যবাসী ও সন্তু লারমার  প্রতি আশ্বস্ত করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পার্বত্য শান্তি চুক্তির প্রতিটি বিষয়ে অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে এবং এ সরকারের চলতি মেয়াদের মধ্যেই শতকরা নব্বই ভাগ চুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে। 

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি  চুক্তি বাস্তবায়ন অনেক দুর  এগিয়ে গেছে। পার্বত্য এলাকায় যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ব্যবস্থা ও জিজিটাল সেবায় যে উন্নতি সাধিত হয়েছে এর আগে পার্বত্যাঞ্চলের ইতিহাসে কখনও তা হয়নি। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের অপরাপর অঞ্চলের সাথে সমানতালে। যদিওবা  এ পার্বত্যাঞ্চলটি দীর্ঘ  দিন ধরে অবহেলিত অবস্থায় ছিল।

ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার মত বাংলাদেশে  এমন কোন কর্মকান্ড ঘটেনি যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, একটি মতলবি মহল দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূতি যাতে ক্ষুন্ন হয় সে জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ অপপ্রচারের কারণে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দল বাংলাদেশে সফরে আসেননি। বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার যে আশংকা তা ছিল অমুলক। 

তিনি বলেন, সফরত ব্রিটিশ দুই সাংসদও বাংলাদেশের বিভিন্ন  এলাকা ও গ্রাম গঞ্জে ঘুরছেন। তারা বাংলাদেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি অত্যন্ত চমৎকার  রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। যেখানে বিদেশীরাও বাংলাদেশে পুরোপুরি নিরাপত্তা রয়েছে স্বীকার করে নিয়েছেন সেখানে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভাবমূর্তি বিনষ্টের কোন বিষয় নেই। 

শুক্রবার বিকালে রাঙামাটির কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়ক ও চন্দ্রঘোনা-রাইখালী ফেরী পাড়াপাড়ের পরিদর্শনকালে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পরিদর্শনকালে কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ  চেয়ারম্যান  দিলদার হোসেনসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন। পরে  মন্ত্রী চট্টগ্রামের উদ্দেশ্য কাপ্তাই ত্যাগ করেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, রাজনীতির মেরুকরণ দেশে হয় না, সেই মেরুকরন  বিদেশের মাটিতে বসে হবে এমনটা আশা করা পুরোপুরি অবান্তর। তাই বিদেশের মাটিতে দুই নেত্রীর মধ্যে সংলাপ বা সাক্ষাতের কোন সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, যারা আপন ঘরের দরজা বন্ধ  করে দেয় সেখানে কি  সংলাপের দরজা খোলা থাকে? শোকাতুর মায়ের কাছে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছেন সমবেদনা জানাতে  কিন্তু শোকাতুর মা দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন সাক্ষাতের দরজা। যেখানে সাক্ষাতের দরজা বন্ধ হয়ে যায় সেখানে সংলাপের দরজা নেই। সংলাপ হওয়ার  কোন সুযোগ আর নেই।

প্রধানমন্ত্রী  যে বিশ্ব পুরুস্কার অর্জন করেছেন তা  আমাদের জন্য একটি বিরল সন্মাননা। তিনি  এ পুরুস্কার বাংলাদেশের জনগনের জন্য উৎস্বর্গ করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে দুজন মানুষ  চির দিন হারিয়ে যাবেন না। তাদের বাংলাদেশের মানুষ চির দিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণে রাখবে। একজন হলেন বাংলাদেশের স্থপতি ও স্বাধীনতার  নেতৃত্বদানকারী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং অপরজন হলেন অর্জন ও উন্নয়নের প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা। তিনি যে বিস্ময়কর অবদান, উন্নয়ন  ও অর্জন করে যাচ্ছেন তার নাম বাংলাদেশের মানুষ চিরদিন শ্রদ্ধার ভরে স্মরণে রাখবে। 

সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, কর্ণফুলী নদীর উপর দিয়ে চন্দ্রঘোনা-রাইখালী  পাড়াপাড়ের ফেরীর স্থানটি  প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যর ভরপুর  এবং দীর্ঘ যাত্রার পর বিরতির জন্য একটি অন্যতম স্থান।  তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে এই এলাকার বাসিন্দা হতাম এ প্রাকৃতিক মনোরম স্থানটির সৌন্দর্য্য নষ্ট করে কোন দিন সেতু নির্মানের জন্য চাইতাম না। তিনি বলেন, জনগণ চাইলে  অবশ্যই সেতু নির্মানের জন্য সরকার চিন্তাভাবনা করবে। তবে এ মহুর্তে নয়। সময় সাপেক্ষের ব্যাপার।  কারণ এ  সেতু  নির্মাণ করতে  গেলে বিদেশী সহায়তার প্রয়োজন।

তিনি অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নানিয়ারচর-লংগদু সেতুটি সেনাবাহিনী দ্বারা করা হবে। তবে প্রক্রিয়াগত কারণে সেতুটি নির্মানের একটু সময় লাগছে। প্রক্রিয়াধীন  রয়েছে। এ সেতুটি অবশ্যই নির্মাণ করা হবে। এছাড়া বরকলের ঠেগামুখে স্থল বন্দর চালুর জন্য সড়ক নির্মানের জন্য সেনা বাহিনীকে  দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সড়ক নির্মাণ কাজে প্রক্রিয়াধীণ  রয়েছে।

সংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,২২টি মহাসড়কে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে সিএনজি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সেজন্য এবার ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কম হয়েছে এবং কম প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে।  কোন কাগজপত্র ছাড়াই এসব সিএনজি রাস্তায় চলাচল করছে। যা জনস্বার্থের জন্য হুমকি। তাই এসব সিএনজিকে নিয়ন্ত্রণ ও বন্ধ করা যায় তাহলে  দেশের মধ্যে দুর্ঘটনারোধ করা সম্ভব।  তিনি বলেন, সিএনজি রাঙামাটি শহরের জনস্বার্থে বিঘ্ন ঘটায় ও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে  দাড়ায় তাহলে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে সরকার  অবশ্যই চিন্তাভাবনা করবে।

তিনি বলেন, ১৭কোটি টাকার ব্যয়ে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের কাজ ইতোমধ্যে টেন্ডার ও ঠিকাদার কাজ পেয়েছে। তবে বৃষ্টির জন্য কাজ  শুরু করা যাচ্ছে না। আশা করা যাচ্ছে নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করা হবে। যদি বৃষ্টি না হয়ে থাকে।  

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.    

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত