বড়থলিতে যৌথ বাহিনী সাথে সন্ত্রাসীদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি বিনিময়ঃ আহত ২

Published: 18 Oct 2015   Sunday   

রোববার বান্দরবানের রুমা উপজেলা ও রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী রড়থলী ইউনিয়নের দুর্গম সেপ্রু পাড়া এলাকায় যৌথবাহিনীর সাথে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান লিবারেশন পার্টি’র (এএলপি) ব্যাপক গোলাগুলি বিনিময়ের খবর পাওয়া গেছে। এতে এএলপি’র অতর্কিত আক্রমণে যৌথ বাহিনীর দুই সদস্য গুরুতর আহত হয়েছে। গুরুতর আহত আনসার সদস্য হান্নানকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামের সমন্বিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে একই ঘটনায় একজন নিহত হওয়ার খবর শোনা গেলেও তার সত্যতা পাওয়া যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার বান্দরবানের রুমা উপজেলা ও রাঙামাটির বিলাইছড়ি উজেলার সীমান্তবর্তী রড়থলী ইউনিয়নের দুর্গম সেপ্রু পাড়া এলাকায় অবস্থান করছিলেন সেনা, বিজিবি, আনসার ও ডিবি’র সমন্বিত যৌথ বাহিনীর একটি দল। এ সময় সকাল ৭টার দিকে অতর্কিতে যৌথবাহিনীর ওপর আক্রমন চালায় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এএলপি। এতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরাও পাল্টা আক্রমন করলে উভয় পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে ঘন্টাব্যাপী ব্যাপক গোলাগুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এসময় এএলপি’র অতর্কিত আক্রমণে সেনা বাহিনীর সদস্য কাশেম ও রুমা ব্যাটালিয়নের আনসার সদস্য মো: হান্নান গুরুতর আহত হন। আনসার সদস্য মো: হান্নানকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামের সমন্বিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে। গোলাগুলি’র ঘটনায় যৌথবাহিনীর সঙ্গে থাকা বিডিবি সদস্য মেংপং ম্রো নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেলে  তার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। নিহত হওয়ার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও অস্বীকার করা হয়েছে। এছাড়া বান্দরবান সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে এএলপি’র সাথে যৌথ বাহিনীর গোলাগুলিতে আহত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা আবদুল্লা জোবায়ের ও জাকির হোসেন মুন্না ৩ অক্টোবর বান্দরবানের রুমা উপজেলা হয়ে রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার দুর্গম বড়থলী ইউনিয়নের নতুন পুকুর এলাকায় ঘুরতে যান। সেখান থেকে গাইড মাংসাই ম্রো ও তাদের দুইজনকে অপহরণ করা হয়। ঘটনার পর অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর উদ্ধার অভিযানে নামেন যৌথ বাহিনী। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার দুর্গম সীমান্তে যৌথ বাহিনীর সাথে সন্ত্রাসীদের সাথে গুলিবিনিময় হয়। ওই সময় একটি হ্যান্ড গ্রেনেড, একটি রাইফেল, সাতটি ম্যাগজিন, একটি ওয়াকিটকি ও ২২২ রাউন্ড গুলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এতে ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে এএলপি যৌথবাহিনীর ওপর অতর্কিতে আক্রমন চালিয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, অপহরণের বিষয়ের সাথে আরাকান লিবারেশন ফ্রন্ট (এএলপি) জড়িত রয়েছে। অপহৃতদের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকাও দাবি করা হয়। অপহৃত পর্যটকদের উদ্ধারে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় ছয়জনকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এরা হলেন, বড়থলী ইউনিয়নের পাসিং পাড়ার কার্বারি (পাড়া প্রধান) পাসিং ম্রো, বড়থলী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য অনাচন্দ্র ত্রিপুরা, স্থানীয় বাসিন্দা মেনচং ম্রো ও জয়পাল বড়ুয়া। অন্য দুই জনের নাম জানা যায়নি। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে পর্যটক অহরনের ঘটনায় স্থানীয় ছয় জনকে আটকের বিষয়টি বান্দরবানের বিজিবি সেক্টর কমান্ডার অলিউর রহমান অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আটকের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে অপহৃতদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনী সীমান্তে অভিযান চালাচ্ছে। তার পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারীও জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে সন্ত্রাসীদের সাথে যৌথ বাহিনীর গোলাগুলি’র ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটির জেলা পুলিশ সুপার মো: সাঈদ তারিকুল হাসান। তিনি জানান,অপহৃত দুই পর্যটক উদ্ধারে যৌথবাহিনী সীমান্তে বেশ কয়েকদিন ধরে অভিযান চালাচ্ছে। বান্দরবানের রুমা জোনের মেজর মেহেদি নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। রোববার সকালে বড়থলী ইউনিয়নের সেপ্রু পাড়াতে অবস্থান নেওয়া যৌথবাহিনীর ওপর অতর্কিতে আক্রমন চালায় সন্ত্রাসীরা। তাদের আক্রমণে যৌথবাহিনীর দুই সদস্য আহত হওয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন।

বান্দরবান জেলার আনসার এডজুটেন্ট অফিসার মীর আলমগীর হোসেন জানান, যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে আনসার সদস্য হান্নান গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে সমন্বিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত