বান্দরবানের ম্রো ন্যাশনাল পার্টি(এমএনপি)র শতাধিক সদস্য অস্ত্রসহ আত্নসমর্পনের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে একাধিক নির্ভযোগ্য সুত্রে জানা গেছে।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, ২২ অক্টোবর তারিখের মধ্যে ম্রো ন্যশনাল পার্টির(এমএনপি) শতাধিক সদস্য তাদের অস্ত্র শ¯ সহ আত্নসম্পর্ণের জন্য সম্প্রতি এমএনপির প্রতিনিধিদের সাথে একটি জনপ্রতিনিধি ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদ বান্দরবানের সাবেক সদস্য অংপ্রু ম্রো,মাংসাই ম্রো, সুয়ালক ইউনিয়ান পরিষদের চেয়ারম্যান রাংলাই ম্রো, আলীকদম সেনা জোনের জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মিজানুর রহমান প্রমুখ।
সুত্র আরও জানায়, আলীকদমের কুরুকপাতা সেনা ক্যাম্পে এমএনপি সদস্যদের আত্নসর্ম্পনের সীদ্ধান্ত হয়েছে। ম্রো ন্যাশনাল পার্টির ৭০ সদস্যের একটি তালিকা প্রাথমিক ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব সদস্যের ৬০টি দেশীয় অস্ত্র ও জব্দ করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরও ৩০ জনের তালিকা প্রস্তুত করে শতাধিক ম্রো সন্ত্রাসীর আত্নসর্ম্পনের ব্যবস্থা করা হবে। জব্দ করা অস্ত্রেও সাথে ম্যাগজিন এবং গুলিও রয়েছে বলে সুত্রটি নিশ্চিত করেছে।
সূত্র মতে, আত্নসমর্পনের তালিকায় রয়েছেন জেলার আলীকদমের কুরুক পাতা এলাকার মাংপা ম্রো প্রেন ওয়াই ম্রো, নিয়াদুই পাড়ার মেনরাও ম্রো, রেনসুক পড়ার রেংইন ম্রো,রেইননসং পাড়ার পংখি ম্রো,মরান পাড়ার অংখি ম্রো, মারন পাড়ার ঙইক্রুম ম্রো, মাংঅং ম্রো,কদন পাড়ার বাশা ম্রো, নিয়াদুই পাড়ার মেনরাও ম্রো, অমই পাড়ার গ্লা থোয়াই ম্রো,বোডিং পাড়ার নংলাই ম্রোসহ অনেকেই। এছাড়া ও লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়ানের নিওয়াক পাড়ার কুতুই ম্রো,মংহ্লা পাড়ার মইশা ম্রো, কাইওয়াই ম্রো,লুলেং গেডম্যান পাড়ার আমশে ম্রো,সরই ইউনিয়ানের তাংলাই ম্রো, জেলার রুমা উপজেলার ঢতেসিং পাড়ার কাইওয়াই ম্রো সহ অনেকেই। এলাকা ভিত্তিক সশস্ত্র তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে এমএনপির সদস্যরা। তাদের অন্যতম কাজ হচ্ছে অপহরনের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করা। একটি সূত্র জানায়, নিরাপত্তা বাহিনীর একর পর এক অভিযান চালানো কারণে সন্ত্রাসীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। এ কারনে জেলার থানছি ও আলীকদমের বেশী সংখ্যক সন্ত্রাসী আত্নসর্ম্পনের দিকে ঝুকে পড়তে শুরু করতে যাচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে এমএনপির প্রধান মেনচিং ম্রো গ্রেপ্তার হওয়ার পর পালে ম্রো এ সন্ত্রাসী বাহিনীর দাযিত্ব নেন। একই বছরের ৫ এপ্রিল প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন তিনি। ৭ জুন এ্কই গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মেনরুং ম্রো এবং সংগঠনটির প্রধান পালে ম্রো আলী কদমের পোয়া মুহুরী এলাকায় পাহাড় ভাঙাগা গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন। সে আলীকদম সদর ইউনিয়ানের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য ছিলেন।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য অংপ্রু ম্রো বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এখন সফল হতে পারলেই সন্ত্রাস কমে যাবে।
ব্যপারে আলীকদমের জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মিজানুর রহমান বলেন, এ ব্যপারে সমঝোতা করা হচ্ছে।
এ ব্যপারে আলীকদম থানার ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা অপেলা রাজু নাহা বলেন জোন থেকে এ বিষয়ে কোন পত্র পওয়া যায়নি। তবে এ ধরনের কথা-বার্তা শুনেছি।
আলীকদমের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল আমিন জানান এ বিষয়ে সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে শুনেছি। তবে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদেরকে এখনো কিছু জানায়নি।
উল্লেখ্য যে ২০১২ সালে সেনাবাহিনী,বিজিবি এবং পুলিশের লাগাতার অভিযানে এই বাহিনীর ৩৭ জনের ও বেশী সদস্য গ্রেপ্তার হয়। ওই সময় আত্নসর্ম্পন করেন ৪২ জন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.