বুধবার তিন পার্বত্য জেলায় অফিস-আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করবে জেএসএস

Published: 20 Oct 2015   Tuesday   

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দাবীতে অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার তিন পার্বত্য জেলায় অফিস-আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(জেএসএস)।

এদিকে, এ বর্জন কর্মসূচিকে ঘিরে রাঙামাটি শহরে পুলিশী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাাশাপাশি বিভিন্ন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিসে আসা-যাওয়ার পথে সার্বিক নিরাপত্তাসহ সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারী থাকবে  বলে জানা গেছে। 

সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নের দাবীতে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, স্মারকলিপিসহ নানান কর্মসূচি দেয়ার পরও সরকারের চুক্তি বাস্তবায়নে কোন সাড়া নেই। পার্বত্য চুক্তির ১৮ বছর হলেও চুক্তির মৌলিক বিষয়কগুলো বাস্তবায়ন না করে সরকার পার্বত্য চুক্তিকে সম্পুর্ণরুপে অবহেলা ও উপেক্ষা করে নানা চুক্তি বিরোধী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। পার্বত্য ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের আইন সংশোধন না করাসহ ইত্যাদি মৌলিক বিষয় এখনো অবাস্তবায়িত রয়েছে। সরকার চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না করে জুম্ম স্বার্থ বিরোধী ও জনসাধারনের মতামতকে সম্পুর্ণ উপেক্ষা করে রাঙামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না। তাই চুক্তি বাস্তবায়নের দাবীতে অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার তিন পার্বত্য জেলায় অফিস-আদালত বর্জন কর্মসূচি ডাকা হয়েছে।

এদিকে, তিন পার্বত্য জেলায় জেলায় অফিস-আদালত বর্জন কর্মসূচি ডাকায় বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশেষ করে পাহাড়ী সম্প্রদায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেকায়দায় পড়েছেন।

জেএসএস-এর কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার বিভাগের সহ-সম্পাদক সজীব চাকমা জানান, পার্বত্য চুক্তির যথাযথ ও দ্রুত পুর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী-বাঙালী স্থায়ী অধিবাসীরে নিরাপত্তা, স্বার্থ ও অধিকার নিশ্চিত পারে না। কিন্তু ১৮ বছর ধরে চুক্তির বাস্তবায়নে সরকার গড়িমসি করছে। সরকার যাতে চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে এবং চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ বিরোধী যে সমস্ত কার্যক্রম করছে তার প্রতিরোধ ও প্রতিবিধানের জন্য অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসুচির অংশ হিসেবে তিন পার্বত্য জেলায় সকল প্রকার অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা বর্জনের কর্মসুচি পালিত হবে। পার্বত্য চুক্তি পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নের সরকারকে বাধ্য করতে সাধারন মানুষ থেকে অফিস-আদালতের কর্মকর্ত-কর্মচারীদের এ বর্জন কর্মসূচিতে সামিল হওয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।

রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ডিবি) শাহিনুল আলম খান সকল প্রকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, অফিস-আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিসে আসা-যাওয়ার পথে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক অফিসে সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারীসহ মনিটরিং করা হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্বিঘ্নে অফিস করতে পারবেন বলে অাশা রাখি।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, গেল বছর ২৯ নভেম্বর ঢাকায় পার্বত্য চুক্তির ১৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা) পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য রোড ম্যাপ ঘোষনার জন্য সরকারকে ৩০ এপ্রিল পর্ষন্ত সময় বেঁেধ দেন। উক্ত সময়ের মধ্যে রোডম্যাপ ঘোষনা করা না হলে ১ মে থেকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করা হবে। তাই ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে গত ২৯ জুলাই রাঙামাটি জেলায় এবং ১৯ আগষ্ট বান্দরবান জেলায় সকাল-সন্ধ্যা দোকানপাট ও হাট-বাজার বর্জন কর্মসূচি পালন করে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত