বান্দরবানের লামা পৌরসভায় এক কিশোরীকে ধর্ষনের ঘটনায় থানায় সালিশী বিচারে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ধর্ষনকারীদের ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, লামা পৌরসভার কুড়ালিয়া টেক এলাকায় দিনমজুরের মেয়ে কিশোরীকে ধর্ষনের ঘটনায় ১৮ নভেম্বর লামা থানায় বিষয়টি নিয়ে সামাজিকভাবে মীমাংসা করতে বৈঠকে বসেন স্থানীয়রা মুরুব্বীরা। এ শালিসী বৈঠকে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, লামা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন,লামা থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক রবিউল হোসেন, লামামুখ বাজারের ব্যবসায়ী ডা. মৃদুল কান্তি দাশ, লামা পৌরসভার ৪,৫ ও ৬ এর মহিলা কাউন্সিলর জোৎস্না বেগম, ধর্ষক সঞ্জয় দাশের বোনের জামাই পরিমল দাশ, লামামুখ এলাকার আনোয়ার হোসেন নুরু, মাসুদ রানা, মোঃ সামশু, ধর্ষক সঞ্জয় দাশ, কিশোরীর বোনের জামাই মুজিবুর রহমান ও ভাই রানা। এসময় সালিশের বৈঠকে ঘটানার শিকার কিশোরী পরিবারকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা হিসেবে আগামী ৩০ নভেম্বর দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয় এবং অভিযোগকারীদের ছেড়ে দেয়া হয়।
ধর্ষনের শিকার কিশোরীর মা অভিযোগে জানান,১৫ নভেম্বর তার কিশোরী মেয়ে কিছু প্রসাধনী ক্রয় করার জন্য লামামুখ বাজারে যায়। বিগত দিনের ন্যায় লামামুখ বাজারের সঞ্জয় দাশের কসমেটিক দোকান থেকে কেনাকাটা করে সে। এসময় দোকানদার সঞ্জয় দাশ কক্সবাজার যাওয়ার প্রলোভন দেখায় এবং পরে তার বন্ধু জাহাঙ্গীরের সাথে কক্সবাজার পাঠিয়ে দেয় কিশোরী মেয়েকে। পরে কক্সবাজারের একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে সঞ্জয়,জাহাঙ্গীর তাদের আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করে। ১৬ নভেম্বর কিশোরীকে হোটেলে ফেলে রেখে ধর্ষনকারী তিন জন পালিয়ে যায়। এতে হোটেলের ভাড়া না দেয়ায় কিশোরীর হাতে থাকা মোবাইলটি হোটেল ম্যানাজারকে দিলেও তাকে হোটেল থেকে বের করে দেয়া হয়। এক পর্যায়ে কিশোরিটি রাস্তায় কান্নাকাটি করতে থাকলে এক পুলিশ সদস্য দেখে তার কারণ জানতে চায়। এতে কিশোরিটি ঘটনার সব কিছু খুলে বলে পুলিশকে। এরপর পরিবারের লোকজন ঘটনাটি জানতে পারে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন লামা পৌর শাখার সভাপতি এম. তমিজ উদ্দিন বলেন, ধর্ষককে থানায় ধরে নিয়ে আবার ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতনের বিষয়গুলো আপোষযোগ্য নয় বলে তিনি জানান।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, তিনি সদ্য লামা থানায় যোগদান করেছেন। এই বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.