গাইবান্ধার সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম এ অধিগ্রহণকৃত ভূমি উদ্ধারের দাবিতে শনিবার ঢাকায় কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৫৫-’৫৬ সনে কোম্পানীর নামে অধিগ্রহণকৃত ১৮৪২.৩০ একর জমি দখলের প্রতিবাদে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি সহ-সভাপতি ফিলিমন বাস্কের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় বলা হয়, ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ গাইবান্ধা জেলা শাখা ও সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ঐক্য ন্যাপ এর সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য।
সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সহ-সভাপতি ফিলিমন বাস্কে এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট গবেষক ও কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, বাংলাদেশের কমিউিনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির তথ্য ও প্রচার বিভাগের সদস্য দীপায়ন খীসা, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. বাবুল রবিদাস।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আদিবাসী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিভূতী ভূষণ মাহাতো, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক জেমসন আমলাই, আদিবাসী যুব নেতা খোকন সুইটেন মুর্মু, সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাজাহান আলী প্রধান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল করিম প্রমূখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক রংপুর সুগার মিলের জন্য যে ১৮৪২.৩০ একর জমির অধিগ্রহন করা হয়েছিল সেখানে ইজারা প্রদানের মাধ্যমে এখন আখ চাষের পরিবর্তে অন্যান্য ফসল উৎপাদন হচ্ছে। আখ চাষ না হওয়ায় চুক্তি অনুযায়ী এই জমি ফেরতের দাবী করছে ভূমিহারা আদিবাসী-বাঙ্গালী কৃষকেরা।
বাপ-দাদার সম্পত্তি ফেরৎ পাবার জন্য গোবিন্দগঞ্জের আদিবাসীরা ঢাকার শহীদ মিনারে এসে শহীদ হতেও প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, অধিগ্রহনের নামে যদি আমাদের জমি কেড়ে নেয়া হয় তবে আমাদেরও অধিকার আছে জমির দখল নেবার। প্রয়োজনে জান দিব।
বিশিষ্ট গবেষক ও কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, আমাদের এই রাষ্ট্র অঙ্গীকার ভঙ্গ করায় বিশেষ দক্ষ। তিনি আরো বলেন, জনগনের জমিজমা কেড়ে নেয়া পৃথিবীর সবচেয়ে মানবাধিবার লংঘন। রাষ্ট্র সেই মানবাধিকার লংঘন করেই চলেছে।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, ভূমি অধিগ্রহনের মাধ্যমে সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম এলাকার ১৫টি গ্রামের আদিবাসীরা ভূমিহারা হয়েছে। এখন সেখানে আখ চাষ হয় না। মিল কর্তৃপক্ষ লীজ প্রদান করে ধান, গম, ভুট্টা, তামাক সহ অন্যান্য ফসল চাষ করছে।
তিনি আরও বলেন, আদিবাসীরা আর এই জমি দালালদেরকে ভোগদখল করতে দিবেনা। এই জমিতে আদিবাসীরা ফসল ফলাবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.