পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা) অভিযোগ করেছেন সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না করে নানান ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, পাহাড়ে অব্যাহতভাবে ভূমি বেদখলের মহাৎসব চলছে। বহিরাগত, বেসরকারি,সরকারি ও শাসক গোষ্ঠীরা নিরীহ পাহাড়িদের ভূমি দখল করে চলেছে। সম্প্রতি সরকার বিজিবি ক্যাম্প স্থাপন ও পর্যটনের নামে ভূমি দখল চালাচ্ছে। সম্প্রতি দীঘিনালার বাবুছড়া এলাকায় বিজিবি ক্যাম্পের নামে নিরীহ জুম্মদের ভূমি দখল করে নিয়েছে। এতে প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক পাহাড়িদের মারধর, মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছে।
তিনি বলেন,ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি আইন কমিশন করা হলে বহিরাগত ও শাসক গোষ্ঠীদের ভূমি দখল বন্ধ হবে। কিন্তু সরকার ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি আইন কমিশন পাস করছে না।
তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে অসহযোগ আন্দোলন জোরদার করতে সবাইকে আহবান জানান।
বৃহস্পতিবার রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক বিশাল জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির( জেএসএস) জেলা শাখার সভাপতি প্রভাত কুমার চাকমা সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা,পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কে এস মং মারমা।
অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বড় ঋষি চাকমা, এমএন লারমা মোমোরিয়েল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কতেন চাকমা ও জনসংহতি সমিতির নেতা উদয়ন ত্রিপুরা প্রমুখ। বৃহস্পতিবার সকাল দুর্গম সাজেকসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গাড়িযোগ ও পায়ে হেঁটে হাজার হাজার নানা শ্রেণির মানুষ জনসমাবেশে যোগদান করেন।
সন্তু লারমা আরও বলেন, ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর এ বাঘাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অস্ত্র জমাদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছি। পার্বত্য চুক্তিকে সম্মান জানিয়ে এই মাঠে জনসংহতি সমিতির একটি অংশ অস্ত্র জম াদেন। নতুন জীবন, সুন্দর জীবন ও নিরাপদ জীবন পাওয়া আশায় এ কাজ করা হয়েছে।
তিনি, কিছু বিপদগামী জুম্ম নিজের স্বার্থে চুক্তি বিরোধী কাজ করছে। তাদের অনুরোধ করা হচ্ছে এখনো সময় আছে ফিরে আসেন। আপনারা যদি জাতির ও চুক্তি পক্ষে কাজ করতে না পারেন তাহলে চুপ করে থাকবেন। না হলে জুম্ম জাতি আপনাদের ক্ষমা করবে না।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য অব্যাহত অসযোগ আন্দোলন চলছে। অসযোগ জোরদার করার জন্য প্রয়োজনে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হবে। প্রয়োজনে জুম্মজাতির রক্ত দিয়ে হলেও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে। বক্তারা এবার থেকে জনসংহতি সমিতি ইউনিয়ন পরিষদ.পৌরসভা ও সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর বাঘাইছড়ি উপজেলায় সন্তু লারমা এটাই প্রথম বিশাল জন সমাবেশ।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.