বান্দরবানের লামায় দারিদ্রতাকে পুঁজি করে এক বাগান মালিকের ৩০বছরের আবাদি জায়গা ও সৃজিত বাগান অবৈধভাবে দখল করার অভিযোগ উঠেছে। লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ২৯৪ নং দরদরী মৌজার ২নং ওয়ার্ড মাষ্টার পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে।
সরজমিনে গিয়ে স্থানীয়রা জানান,লামা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ অলিউল্লাহ ১৯৮৪-৮৫ সালে হর্টিকালচার প্লটের নামে (প্লট-৫) সরকার থেকে ২৫ একর পাহাড় লীজ নেয়। বৈধ লীজ গ্রহীতা হয়ে উক্ত তফসিল ভুক্ত জায়গায় গামারী ও সেগুন গাছের বাগান সৃজন করে। দীঘদিনের্র দখলীয় জায়গায় গাছ রোপন ও কর্তন করে ভোগদখলে রয়েছে। কয়েক বছর আছে লামা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের জনৈক মোঃ নেছার আহম্মদ অলিউল্লাহ’র দখলীয় বাগানে গিয়ে বসতবাড়ি নির্মাণ করে। প্রথম পর্যায়ে বাধা দিলে নিজের অসহায়ত্ব দেখিয়ে পরবর্তীতে উঠে যাবে বলে অনুকম্পা গ্রহণ করে। ধীরে ধীরে প্রভাব বিস্তার করে। একে একে দখল করতে করতে বর্তমানে প্রায় ১০একর জায়গা অবৈধ দখল করেছে নেছার।
স্থানীয় মোঃ ছেরাজুল হক, মোঃ মফিজ ও নজির আহম্মদ সহ অনেকে জানান, এই জায়গা নিয়ে একাধিক মামলা করে অলিউল্লাহ রায় পান। সরকারী লোক এসে নেছারদের উচ্ছেদ করে। দিনে তুলে দিয়ে গেলে রাতে তারা আবার দখল করে। মূলত অলি উল্লাহ’র বাড়ি একটু দূরে হওয়ায় তারা এই সুযোগ নিচ্ছে। আইনে আদালতে নেছার আহম্মদ নিজেকে ভূমিহীন বলে অবৈধ সুযোগ নিলেও তার নামে লামা পৌরসভায় ২৯৩ নং ছাগলখাইয়া মৌজায় ১৬৪নং হোল্ডিং এ ২ একর ও দরদরী মৌজায় তার বাবা ছুফি আহাং এর নামে ৫৯৫ নং হোল্ডিংয়ে ৫একর জায়গা আছে। বিরোধীয় জায়গার দাগ খতিয়ান মূলে মূল মালিক অলিউল্লাহ বলে তারা জানিয়েছেন।
বাগান সংলগ্ন মাষ্টার পাড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল হাকিম বলেন, এই জায়গার প্রকৃত মালিক অলিউল্লাহ। অলিউল্লাহ’র ৩০ বছরের সৃজিত বাগানে অবৈধভাবে কয়েকবছর আগে বেআইনীভাবে প্রবেশ করে তার সৃজিত বাগান কেটে হজম করছে নেছার আহম্মদ। মূলত তার বাড়ি লামা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের মধু ঝিরিকে।
একই এলাকার মোঃ শামসুল হক জানান,নেছার আহম্মদের বাবার নামে জায়গা হচ্ছে ৫ একর। বর্তমানে সে দখলে আছে ১০একরের বেশী। তাছাড়া তার বাবার নামের জায়গা এইটা না। তাদের জায়গা আরো অনেক ভেতরে।
২৯৪ নং দরদরী মৌজার হেডম্যান চাহ্লাখইন মার্মা জানান,দাগ, খতিয়ান ও বৈধ লীজ নিয়ে ৩০ বছর যাবৎ অলিউল্লাহ এই জায়গা ভোগদখলে আছে। ৫ থেকে ৬ বছর আগে হঠাৎ করে নেছার উড়ে এসে এই জায়গার কিছু অংশ নিজের বলছেন। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। নেছারের বাবার নামের জায়গা আরো অনেক ভেতরে। নেছারের বাবার নামের জায়গাটি ১৯৭৯-৮০ সালে বন্দোবস্তী পায়। ৩৭ বছর তারা কোথায় ছিল। অন্যের আবাদ করা জায়গায় গায়ের জোরে ঢুকলে জায়গা নিজের নামে হয়ে যাবে না। অলিউল্লাহ’র কাগজপত্র ও জায়গার অবস্থান সম্পূর্ণ ঠিক রয়েছে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নেছার আহম্মদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি পৈত্রিকভাবে ওই জায়গা পেয়েছেন। তিনি নিজের জায়গা সনাক্ত করে ভোগদখলে রয়েছেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.